বাংলারজমিন
চাকরি স্থায়ী না হওয়ায় বিপাকে পোটার কর্মীরা
মাগুরা প্রতিনিধি
৫ জুলাই ২০২৫, শনিবারপ্রতিদিন ভোর ৭টা থেকে সাইকেলের সামনে ও পেছনে ৬-৮টি ভ্যাকসিন ক্যারিয়ার ঝুলিয়ে ৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দেয় ইপিআর পোটার কর্মীরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ভোরে তারা বেরিয়ে পড়ে দূর-দূরান্তে। চাকরি স্থায়ীকরণ না হওয়ায় সামান্য বেতনে তাদের সংসার চলে না তবুও জীবন-জীবিকার তাগিদে তারা কাজ করে চলে। জানা যায়, মাগুরা সদরের ১৩টি ইউনিয়নের প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিদিন এ ভ্যাকসিন ক্যারিয়ার পৌঁছানোর কাজ করে মাত্র ৩ জন পোটার। মাগুরা সদর থেকে এ ১৩টি ইউনিয়নের দূরত্ব ৭-৮ কিলোমিটার। এ কাজে যেখানে প্রয়োজন ৬ জন ভ্যাকসিন পোটার সেখানে এ ৩ জন কর্মীর পক্ষে কাজ করা কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। জীবন যুদ্ধে তাদের এ চাকরি স্থায়ীকরণ না হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে আছে বিপাকে পড়েছেন তারা। জানা যায়, এ কাজে ২৪ দিনের হাজিরায় একেকজন কর্মীকে দেয়া হয় মাত্র ৯ হাজার টাকা। এ ভ্যাকসিন পোটাররা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সরকারের দেয়া গুরুত্বপূর্ণ বিসিজি টিকা, পেন্টা টিকা, পিসিবি টিকা, ওপিবি টিকা, আইপিবি টিকা, এমআর টিকা, টিটি টিকাসহ করোনার টিকা পৌঁছানোর কাজ করে তারা। সদরে কর্মরত ইপিআর পোটার কর্মী বাদশা মিয়া বলেন, আমি ১৯৯০ সালে এ কাজে মাস্টাররোলে যোগদান করি। আজ ৩৫ বছর পেরিয়ে গেলেও আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণ হয়নি। পোটার কর্মী জসিম ও কিবলু জানান, ৩ জন কর্মীর পক্ষে সদরের ১৩টি ইউনিয়নের কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভ্যাকসিন ক্যারিয়ারের কাজ খুবই কষ্টসাধ্য। এ কাজে এখানে ৬ জন কর্মী প্রয়োজন সেখানে আমরা কাজ করছি মাত্র ৩ জন। এ কাজে আমাদের সামান্য বেতন দেয়া হয়। তাতে আমাদের সংসার চলে না। এ ছাড়া আমাদের দেয়া হয় না বোনাস বা অতিরিক্ত কোনো টাকা। তাই সরকারের প্রতি আবেদন আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণ করা হোক। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. আফজাল হোসেন বলেন, মাগুরা সদরের ১৩টি ইউনিয়নে ৩ জন ইপিআর ভ্যাকসিন পোটার কাজ করছে। তারা স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন দাতা সংস্থার আওতায় কর্মরত। তাদের চাকরি স্থায়ীকরণ নয়। তারা কোনো উন্নয়ন বা রাজস্ব খাতের কর্মী নয়। তাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি। প্রতি মাসে তাদের ২৪ দিনের হাজিরার সামান্য বেতন দেয়া হয়। তাদের চাকরির ব্যাপারে তারা স্থায়ীকরণ চাইলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করতে হবে।