প্রথম পাতা
খোলাবাজারে ডলারের দাম কমেছে
স্টাফ রিপোর্টার
১৯ আগস্ট ২০২২, শুক্রবারদেশে ডলার বাজার অস্থিতিশীল করার অভিযোগে এবার ৬ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বুধবার ব্যাংকগুলোর এমডিদের এই চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়া ডলার বিক্রির অতিরিক্ত মুনাফা ব্যাংকের আয় খাতে নেয়া যাবে না বলে সব ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিষয়টি মানবজমিনকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম। জানা গেছে, ব্যাংকগুলো হলো ডাচ্-বাংলা, প্রাইম, সিটি, ব্র্যাক, সাউথইস্ট ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। এর আগে ডলারের দাম বাড়ানোর পেছনে কারসাজির প্রমাণ পাওয়ায় গত ৮ই আগস্ট ৬ ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার সংরক্ষণ করে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ঘটানোর অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয় অভিবাবক ব্যাংকটি। এদিকে ২০২১ সালের প্রথম ৬ মাসের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে ডলারে অস্বাভাবিক মুনাফা করেছে এমন আরও অন্তত ১০টি ব্যাংকের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কমছে ডলারের দাম: গম্প্রতি বিদেশ থেকে বিলাসী পণ্যসহ আমদানিতে নানা শর্ত দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে কমে এসেছে আমদানির পরিমাণ।
গত সপ্তাহে খোলা বাজারে নগদ ডলার বিক্রি হয়েছিল ১২০ টাকা পর্যন্ত; যা গতকাল খোলা বাজারে ১০৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পান্থপথের বসুন্ধরা সিটির মিঞা মানি এক্সচেঞ্জের ম্যানেজার ইমরান আকন জানান, গত সপ্তাহ থেকে ডলারের দাম নিয়মিত কমছে। এখন মানি এক্সচেঞ্জগুলোর কাছে পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহ রয়েছে। যদিও ক্রেতাদের চাহিদা তেমন নেই। তিনি বলেন, আগে আমাদের কাছে যারা ডলার বিক্রি করতো তখন তারা ১১০ টাকার উপর দাম চাইতো। কিন্তু আমরা এত দামে কিনতাম না। এজন্য আমাদের কাছে ডলার থাকতো না। এখন ডলারের দাম কমার কারণে আমরা ১০৫-১০৬ টাকায় কিনতে পারি। তাই আমাদের কাছে এখন পর্যাপ্ত ডলার রয়েছে। আমরা যে দামে ক্রয় করি তার চেয়ে এক-দেড় টাকা লাভে বিক্রি করে দেই। তালুকদার মানি এক্সচেঞ্জের আসাদুল জানান, এখন ডলার বেশি দামে বিক্রির সুযোগ নেই। গতকাল ১০৮ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। আগের দিন ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এক সপ্তাহ ধরে ডলারের দাম কমছে।
খোলা বাজারে এখন পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহ রয়েছে। গ্রাহকরা চাহিদামতো ডলার কিনতে পারছেন। এদিকে ডলার সংকট নিরসনে দেশের মানি এক্সচেঞ্জগুলোকে মুনাফার সীমা বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে খোলা বাজারের মানি এক্সচেঞ্জগুলো যে দামে ডলার কিনবে, তার চেয়ে সর্বোচ্চ দেড় টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রি করতে পারবে। এর বেশি মুনাফা করতে পারবে না। এ বিষয়ে বুধবার মানি এক্সচেঞ্জ এসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে গত রোববার এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস এসোসিয়েশনের (বাফেদা) সঙ্গে বৈঠকে বৈদেশিক মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল করতে ব্যাংকগুলোর জন্য ডলারের ক্রয়-বিক্রয় হারের মধ্যে এক টাকার ব্যবধান বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি আগস্ট মাসের প্রথম ১৬ দিনে ১১৭ কো?টি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে। দেশীয় মুদ্রায় (প্র?তি ডলার ৯৫ টাকা ধ?রে) এর পরিমাণ ১১ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। কমেছে আমদানি এলসির হারও। আমদানির লাগাম টানতে যেসব শর্ত দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, তার সুফল আসতে শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসের ১১ দিনে দেশে মোট ১৬১ কোটি ডলার সমপরিমাণ মূল্যের আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে। যা জুলাই মাসের তুলনায় ৯৪ কোটি ডলার বা ৩৬ শতাংশ কম। জুলাই মাসে আমদানি হয়েছিল ২৫৫ কোটি ডলার।