বিশ্বজমিন
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে: সিআইএ পরিচালক
মানবজমিন ডেস্ক
(৩ দিন আগে) ২৬ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৯:৪২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৩:০৫ অপরাহ্ন

সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফ জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি কয়েক বছর পিছিয়ে গেছে। তার এই বক্তব্য পেন্টাগনের একটি গোয়েন্দা রিপোর্টের বিপরীত। ওই গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে হামলার ফলে ইরানের মূল পারমাণবিক কার্যক্রম তেমন বাধাগ্রস্ত হয়নি। এই ফাঁস হওয়া রিপোর্ট প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি করেছে। তিনি ফাঁস হওয়া রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এ সম্পর্কে রিপোর্ট প্রকাশ করে সিএনএন ও নিউ ইয়র্ক টাইমস। তিনি এসব মিডিয়াকে পাল্টা ফেক নিউজ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ট্রাম্প দৃঢ়ভাবে দাবি করে আসছেন, ওই বিমান হামলা ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতাকে সম্পূর্ণভাবে ‘ধ্বংস’ করে দিয়েছে। বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি ‘ফেক নিউজ মিডিয়া’কে অভিযুক্ত করেন ‘মিথ্যা ও ভুল তথ্য পরিবেশন’ করার জন্য।
ট্রাম্প জানান, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথের নেতৃত্বে পেন্টাগনে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন হবে। সেখানে ‘আমাদের মহান মার্কিন পাইলটদের মর্যাদা রক্ষায়’ অখণ্ড ও গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ উপস্থাপন করা হবে। ন্যাটো সম্মেলনে অংশ নিতে নেদারল্যান্ডের হেগ-এ অবস্থানকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, এটি ছিল খুবই ভয়াবহ, একেবারে ধ্বংসাত্মক হামলা। তিনি আরও বলেন, আগামী সপ্তাহে আলোচনার মাধ্যমে ইরান থেকে পারমাণবিক কার্যক্রম বন্ধের প্রতিশ্রুতি আদায়ের চেষ্টা করবেন। যদিও ইরানের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ এনবিসি নিউজকে বলেন, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সরাসরি ও পরোক্ষ যোগাযোগ হয়েছে। সিআইএ পরিচালক র্যাটক্লিফ বলেন, বিশ্বস্ত ও সুনির্দিষ্ট উৎস থেকে পাওয়া নতুন গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ইরানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। সেগুলো পুনরায় গড়ে তুলতে তাদের কয়েক বছর সময় লাগবে।
ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক তুলসী গাবার্ডও এই মূল্যায়নের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেন, নাতাঞ্জ, ফরদো ও ইসফাহানের মতো প্রধান তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা যদি ইরান পুনর্গঠন করতে চায়, তবে তাতে বহু বছর লেগে যাবে। গত শনিবারের এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র ১২৫টি সামরিক বিমান ব্যবহার করে ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করে। নতুন স্যাটেলাইট ছবিতে ফরদোর প্রবেশপথের আশেপাশে ছয়টি গর্ত দেখা গেছে, একই ধরনের গর্ত ইসফাহান এলাকাতেও মিলেছে। তবে এইসব স্থাপনা যেহেতু ভূগর্ভে অবস্থিত, তাই সেগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। এদিকে পেন্টাগনের ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির ফাঁস হওয়া প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়, এই হামলা ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমকে মাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে দিয়েছে। তবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ এই মূল্যায়নকে কম আত্মবিশ্বাসভিত্তিক বলে অভিহিত করেন। জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসি জানিয়েছেন, হামলার সময় ইরান হয়তো তার উচ্চমাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে। অন্যদিকে, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘেই আল জাজিরাকে বলেন, আমাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই। তবে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।