ঢাকা, ২৬ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৮ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হবে বলা মুশকিল তবে ইসরাইলের জন্য বড় শিক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার
২৬ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার
mzamin

কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইরান-ইসরাইল। তার আগে দুই পক্ষই নিজেদের শক্তি দেখিয়েছে। প্রাণহানির সঙ্গে সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দুই পক্ষের। এখনো উত্তেজনা কমেনি। দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করছেন। তবে আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হলেও স্থায়ীভাবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে- এটি এখনই বলা মুশকিল বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রফেসর ড. দেলোয়ার হোসেন। অন্যদিকে ১২ দিনব্যাপী এ যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কে যে ধারণা সেটি পাল্টে দিয়েছে। ইসরাইল যে মধ্যপ্রাচ্যে অপ্রতিরোধ্য- এমন নেরেটিভ ভেঙে গেছে বলে মনে করেন তিনি। একই সঙ্গে ইরান নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিয়েছে। মানবজমিনকে প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরানোর জন্য কেবল যুদ্ধবিরতিই যথেষ্ট নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের আক্রমণের কারণে যে বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল সেটি কিছুটা হলেও এর মাধ্যমে স্বাভাবিক হবে। একই সঙ্গে ঝুঁকিও থেকে যাচ্ছে। কারণ দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের। তবে আমরা যতটুকু দেখি যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর ইরান সেটি লঙ্ঘন করেনি, যেটি ইসরাইল করেছে। এর মূলে রয়েছে ইসরাইলে ইরানের আগের আক্রমণগুলো ভারী ছিল। তিনি বলেন, অন্যদিকে ইরানের প্রতিরোধ করার যে ক্ষমতা সেটি যুক্তরাষ্ট্র আন্ডারমাইন করার চেষ্টা করেছিল। উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। ইরান তার সে সক্ষমতার জবাব দিয়েছে। এ যুদ্ধবিরতি আলোচনার মাধ্যমে কার্যকর করা সম্ভব হলেও গাজায় ইসরাইলের ধারাবাহিক হামলা এবং ইরানে আক্রমণের কারণে পারস্পরিক যে আস্থা সেটি নষ্ট হয়েছে। তাই এখনই বলা যাবে না যে, এটি একেবারেই কার্যকর এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি নিয়ে আসবে। দুই পক্ষকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। 

এ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক মনে করেন, ইরান তার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য পরমাণু সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রাখতে পারে। সে ক্ষেত্রে ইসরাইলসহ তাদের মিত্রদের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া কী হবে সেটিও আলোচনার বিষয়। অন্যদিকে পারস্পরিক যোগাযোগের মাধ্যমে ইরান এ যুদ্ধে কিছুটা লাভবান হয়েছে। রাশিয়া ও চীন তাকে সমর্থন দিয়েছে। সব মিলিয়ে শক্তির ভারসাম্য রিগেইন হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। আমেরিকা এবং ইসরাইল এ অঞ্চলে অপ্রতিরোধ্য এটা এখন বলা যাবে না। ইরান একা যুদ্ধ করলেও অন্যান্য দেশ থেকে সমর্থন আদায় করতে পেরেছে। সবাই তার পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। এমনকি ইউরোপের অনেক দেশও ইরানে ইসরাইলের এ আক্রমণকে ভালো চোখে দেখেনি। 

তিনি আরও বলেন, এ যুদ্ধ ইসরাইলের জন্য বড় ধাক্কা। কারণ ১৯৪৮ সালে তাদের জন্মের পর এত বড় আঘাত পায়নি। এ যুদ্ধে প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, তাদের সামরিক শক্তি একেবারেই অপ্রতিরোধ্য নয়, সীমাবদ্ধতা আছে। তাদের ভূখণ্ডের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। ছোট একটি ভূখণ্ডে অনেক মানুষের বসবাস। সেখান থেকে নাগরিকদের দেশত্যাগ করাও ইসরাইলের জন্য বড় শিক্ষা। রাষ্ট্রীয় কাঠামোর স্ট্রাকচারগত দুর্বলতাও ফুটে উঠেছে। মিত্ররা বিভক্ত হয়ে গেছে। আগের মতো ইসরাইলকে নিঃশর্ত  সাপোর্ট দিচ্ছে না। এটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বাধীনতার ক্ষেত্রেও বড় সম্ভাবনার পথ দেখাচ্ছে। অন্যদিকে নেতানিয়াহু তার দেশেই অজনপ্রিয় হয়ে পড়েছেন। তিনি ক্ষমতা ধরে রাখতে এসব করছেন। জনগণ তার এসব কর্মকাণ্ড ভালোভাবে নিচ্ছে না।

পাঠকের মতামত

ট্রাম্প এবং ইসরাইলকে কখনোই বিশ্বাস করা উচিত নয়। ২/৪ দিন যুদ্ধ বিরতির আড়ালে ইসরাইল আমেরিকার সাথে ষড়যন্ত্র তথা বিশ্বাসঘাতকতা করে নতুন কৌশলে জোরদার আক্রমণ করে ইরানকে তছনছ করে ফেলতে পারে। কাজেই ইরানের জন্য সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

দাউদ করিম
২৬ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১:৪৭ পূর্বাহ্ন

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status