দেশ বিদেশ
উত্তরায় কোটি টাকা ছিনতাইয়ে সাবেক সেনা ও পুলিশ সদস্য জড়িত
স্টাফ রিপোর্টার
২০ জুন ২০২৫, শুক্রবাররাজধানীর উত্তরায় র্যাব পরিচয়ে নগদ ডিস্ট্রিবিউটর প্রতিনিধিদের কাছ থেকে এক কোটি আট লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনায় জড়িত চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি), উত্তরা বিভাগ ও উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী গোলাম মোস্তফা পুলিশের বহিষ্কৃত কনস্টেবল। গ্রেপ্তার শেখ জালাল উদ্দিন ওরফে রবিউল সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট। অন্যরা হলো- মো. হাসান, গোলাম মোস্তফা ওরফে শাহিন, জালাল উদ্দিন ওরফে রবিউল, ইমদাদুল শরীফ ও সাইফুল ইসলাম ওরফে শিপন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩৪ লাখ টাকা এবং ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়েছে। গতকাল ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মুহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত ১৪ই জুন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নগদের এক ডিস্ট্রিবিউটর প্রতিষ্ঠানটির চার কর্মচারীসহ উত্তরার ১২ নম্বর রোডের বাসা থেকে নগদের অফিসের উদ্দেশ্যে ১ কোটি ৮ লাখ ১১ হাজার টাকা নিয়ে রওনা হন। পথে ১২ ও ১৩ নম্বর রোডের সংযোগস্থলে একটি কালো হাইয়েস মাইক্রোবাসে করে আসা ‘র্যাব’ লেখা কটি পরিহিত, মুখে কালো কাপড় বাঁধা সশস্ত্র ৬-৭ জন তাদের গতিরোধ করে। তারা চারটি ব্যাগে থাকা সব টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং তিন কর্মচারীকে জিম্মি করে মারধর শেষে তুরাগ থানার ১৭ নম্বর সেক্টরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। উত্তরা পশ্চিম থানায় এ ঘটনায় মামলা করা হয়। ডিসি মুহিদুল ইসলাম বলেন, ডিবি ও থানা পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে মাইক্রোবাসের চালক মো. হাসানকে খিলগাঁও থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেয়া তথ্যে গাড়িটি জব্দ করা হয় ও মূলহোতা চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য শাহিনকে উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে তার কাছ থেকে ১৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে আরও তিন সদস্য ইমদাদুল শরীফ (৮ লাখ ৪ হাজার টাকাসহ), সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট জালাল উদ্দিন (৬৩ হাজার টাকাসহ) এবং সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। জালাল নিজের নামে ব্যাংকে জমা রাখা ১২ লাখ টাকা জব্দের আইনি প্রক্রিয়া চলছে। ডিবি’র এই কর্মকর্তা বলেন, তাদের কাছ থেকে নকল র্যাব ও পুলিশের আইডি কার্ড, লাঠি, সিগন্যাল লাইট, সেনাবাহিনীর লোগোসহ মানিব্যাগ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন সময়ে র্যাব ও পুলিশের পরিচয়ে দেশ জুড়ে ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে এবং আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।