দেশ বিদেশ
হাসিনাকে ৭ দিনের মধ্যে হাজিরের নির্দেশ, ট্রাইব্যুনালের গেটে ককটেল বিস্ফোরণ
স্টাফ রিপোর্টার
১৭ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে হাজির হতে দু’টি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আগামী ৭ দিনের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির এবং মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ২৪শে জুন দিন ধার্য করা হয়েছে। এদিকে গতকাল ভোরে ট্রাইব্যুনালের মাজার ও শিশু একাডেমি সংলগ্ন গেটের সামনে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে একটি বিস্ফোরিত হলেও আরেকটি অবিস্ফোরিত ছিল।
সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল-১ আসামিদের হাজিরের এই আদেশ দেন। এদিন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অন্য প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন। গতকাল এই মামলায় গ্রেপ্তার আরেক আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ট্র্যাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তবে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি উল্লেখ করে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ট্র্যাইব্যুনালের ৩১ বিধি অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশনা চান। জবাবে ট্রাইব্যুনাল পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে হাজির হতে একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৪শে জুন দিন ধার্য করেন।
শুনানি শেষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আসামি শেখ হাসিনা, আসাদ্দুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আইসিটি-বিডি কেস নম্বর-১ মামলাটি দায়ের হয়েছিল। এই মামলায় আজকে নির্ধারিত তারিখ ছিল। আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল হয়েছে কিনা এটার রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। পুলিশ আমাদের জানিয়েছে, আসামি হাসিনা ও কামালের বাসায় একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করেও তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং পত্র-পত্রিকার রিপোর্টের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে যে, গ্রেপ্তার এড়াতে আসামিরা ভারতে পালিয়ে গেছেন। পরবর্তীতে আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলে ট্রাইব্যুনালে সোপর্দ করবে পুলিশ।
তিনি বলেন, পুলিশের এই রিপোর্টের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল আসামিদের আগামী ৭ দিনের মধ্যে হাজির হতে ২টি বাংলাদেশি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়ার আদেশ দিয়েছেন। এছাড়াও আসামিদের ২৪শে জুনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে, বিচার প্রক্রিয়া মোকাবিলা করতে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে। আসামিরা যদি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরেও ট্রাইব্যুনালে না হাজির হন তাহলে আইন অনুযায়ী তাদের অনুপস্থিতেই বিচারকাজ চলবে বলে জানান তাজুল ইসলাম।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গেটে ককটেল বিস্ফোরণ: সোমবার ভোর সাড়ে ৫টায় ট্রাইব্যুনালের মাজার ও রাজধানীর শিশু একাডেমি সংলগ্ন গেটের সামনে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। মাজার গেটে নিক্ষেপ করা ককটেলটি বিস্ফোরিত হলেও শিশু একাডেমি সংলগ্ন গেটে নিক্ষেপকৃত ককটেলটি অবিস্ফোরিত ছিল।
এর আগে, গত ১রা জুন শিশু একাডেমি সংলগ্ন ট্রাইব্যুনালের গেটের সামনে ‘ককটেলসদৃশ পটকা’ বিস্ফোরণের কথা জানিয়েছিল শাহবাগ থানা-পুলিশ। সেদিনও শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান ও মামুনের বিরুদ্ধে হওয়া এই মামলার শুনানির দিন ধার্য ছিল।
এ বিষয়ে, শুনানি শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা এগুলো আমলে নিচ্ছি না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এগুলো ডিল করবে। আমাদের বিচার প্রক্রিয়া ন্যায়সঙ্গত বিচার প্রক্রিয়া। বাংলাদেশের যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তার বিচার হতে হবে। এটা জাতীয় প্রত্যাশা। এই বিচারপ্রক্রিয়া স্মুথলি অগ্রসর হতে থাকবে। কেউ যদি এটাকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করে, কেউ যদি আইন অমান্যকারী কোনো কাজ করে, সে ব্যাপারে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।