দেশ বিদেশ
বিদেশ যাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব
পিতার ছুরিকাঘাতে ছেলের মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টার
১৬ জুন ২০২৫, সোমবারজর্ডান প্রবাসী স্ত্রী শাহনাজ বেগম স্বামীকে বাদ দিয়ে আগে ছেলেকে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করায় ছেলে বাহারুল ইসলাম রাসেল (২২)কে ছুরিকাঘাত করেছে তার পিতা জুয়েল রানা। গত শনিবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর হাজারীবাগের ঝাউচর আমলা টাওয়ার গলি এলাকার একটি বাসায় এই ঘটনা ঘটে। পরে রাসেলকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রাসেলের মামা মো. হুমায়ুন বলেন, আমাদের বাড়ি লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলায়। তিন ভাইয়ের মধ্যে রাসেল ছিল মেজো। তার বড় ভাই পশু চিকিৎসক এবং ছোট ভাই মাদ্রাসা ছাত্র। তারা দু’জন গ্রামের বাড়িতে থাকে। হাজারীবাগ বাজারে একটি হোটেলের কারিগর রাসেল। আর তার বাবা জুয়েল রায়েরবাজার এলাকায় অন্য একটি হোটেলে কাজ করে। বর্তমানে রাসেল ও তার বাবা ঝাউচর আমলা টাওয়ার রোডের একটি বাড়ির নিচতলায় ভাড়া থাকে। আমার বোন ও রাসেলের মা শাহনাজ বেগম জর্ডান প্রবাসী। ছেলের উন্নত জীবনের আশায় সম্প্রতি শাহনাজ রাসেলকে জর্ডানে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। এজন্য রাসেলকে পাসপোর্ট তৈরি করতে বলে। কিন্তু ছেলের পরিবর্তে বাবা জুয়েল রানা নিজে প্রবাসে যেতে চাচ্ছিল। তাকে নেয়ার ব্যবস্থা না করলে সে পরিবারে অশান্তি করবে এবং অন্য একটি বিয়ে করে চলে যাবে বলে প্রায়ই আমার বোনকে হুমকি দিতো। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে তাদের পারিবারিক কলহ চলছিল। এসব নিয়েই শনিবার রাতেও বাবা-ছেলের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে প্রবাসী স্ত্রী শাহনাজের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন জুয়েল রানা ও রাসেল। এরই একপর্যায়ে জুয়েল রানা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছেলে রাসেলকে কুপিয়ে জখম করে। পরে প্রতিবেশীরা রক্তাক্ত অবস্থায় রাসেলকে উদ্ধার করে লাইফ কেয়ার নামে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি দেখে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রাসেলকে মৃত ঘোষণা করে। বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক বলেন, রাসেলের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হাজারীবাগ থানা কাজ করছে। হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর থেকে বাবা জুয়েল রানা পলাতক রয়েছেন। তাকে আটক করতে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারবো।