দেশ বিদেশ
চলতি সপ্তাহে তফসিল
এফবিসিসিআই নির্বাচন ৭ই সেপ্টেম্বর
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৬ জুন ২০২৫, সোমবারআগামী ৭ই সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে চলতি সপ্তাহে অর্থাৎ ১৭ই জুন নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হবে। ইতিমধ্যে আপিল বোর্ড ও নির্বাচনী বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এর আগে বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা-২০২৫ সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দেশের ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনসহ (এফবিসিসিআই) সব বাণিজ্য সংগঠনের নির্বাহী কমিটি বা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, সহ-সভাপতিসহ সব পদের প্রার্থীরা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন। নির্বাহী কমিটি বা পর্ষদের মেয়াদ হবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ২৪ মাস। টানা দু’বার নির্বাহী কমিটি বা পর্ষদে থাকলে একবার নির্বাচনে বিরতি দিতে হবে।
এফবিসিসিআই থেকে পাঠানো প্রস্তাবের ভিত্তিতে বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা সংস্কার করা হয়। নির্বাচন প্রসঙ্গে এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আগামী ৭ই সেপ্টেম্বর এফবিসিসিআই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছি। এ লক্ষ্যে শিগগিরই নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা ব্যবসায়ীদের মতামতের ভিত্তিতে করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যে এটিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
তবে একটি পয়েন্টে এসে ব্যবসায়ীদের অন্য একটি অংশ ফের বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা সংশোধন বা বিলুপ্তির দাবি করছে। আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি ফ্রি ফেয়ার ইলেকশনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। নতুন এই বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালাকে স্বাগত জানিয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের নেতা জাকির হোসেন নয়ন, গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী খোকনসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।
অন্যদিকে এফবিসিসিআই স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদ ও সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের নেতা মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, মো. জালাল উদ্দিন, নিজাম উদ্দিন রাজেশ ও আবু মোতালেবসহ অন্য নেতারা বলছেন, যেভাবে বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা সংশোধন করা হয়েছে, তাতে বাণিজ্য সংগঠনগুলোতে নেতৃত্বশূন্যতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই নতুন বিধিমালা সংশোধনের জন্য সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের পক্ষ থেকে বাণিজ্য উপদেষ্টা, এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিটিও, এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনী বোর্ড ও আপিল বোর্ড বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে।
মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়-এই বিধিমালার বেশ কিছু বিধি, উপবিধিসমূহ বাণিজ্য সংগঠনগুলোর জন্য অনুকূল নয়। এগুলো ক্ষুদ্র ও মাঝারি শ্রেণির এসোসিয়েশন ও চেম্বারগুলোকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাই বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করার জন্য জোর আবেদন করছি। কারণ একজন ভোটারের মৌলিক অধিকার হচ্ছে যেকোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা। যেহেতু বাণিজ্য সংগঠনগুলো অলাভজনক, তাই বাণিজ্য সংগঠনগুলোর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপের মাধ্যমে বারিত করা মোটেই কাম্য নয়।
তদুপরি এই বিধি-নিষেধ আরোপে ভূতাপেক্ষ ক্রিয়া প্রয়োগ করা, সম্পূর্ণ আইনবহির্ভূত ও অধিকার ভঙ্গের শামিল বটে। এখানে উল্লেখ্য যে, বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা, ১৯৯৪ এবং ৩১/০৭/২০০২ইং সালে বাণিজ্যিক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত প্রজ্ঞাপনে বলা ছিল যে, প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে এটা কার্যকর হবে।
২০১৮ ইং সালে ইস্যুকৃত গেজেটে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি স্ব-স্ব সংগঠনের সংঘবিধি দ্বারা নির্ধারণ করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা-২০২৫ এর মধ্যে ভূতাপেক্ষ ক্রিয়া প্রয়োগ করা হয়েছে-যা বেআইনি ও বাতিলযোগ্য। এ ছাড়া এই অতিরিক্ত ফি ধার্য করার ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শ্রেণির ব্যবসায়ীদের মধ্যে চেম্বার ও এসোসিয়েশনের সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা দেখা দেবে। তাই বিধিমালাটি দ্রুত সংশোধন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের নেতা জাকির হোসেন নয়ন বলেন, বিগত ৩১ বছর ধরে ব্যবসায়ীদের চাহিদা ছিল, একটি যুগোপযোগী বিধিমালা প্রণয়ন। তাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। নতুন বিধিমালা আগামী দিনগুলোয় এফবিসিসিআইসহ দেশের সব বাণিজ্য সংগঠনের স্বকীয়তা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। এর ফলে দেশের ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোয় ৩ কোটি ৫০ লাখ ব্যবসায়ীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী খোকন বলেন, সংস্কার করেই এফবিসিসিআই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নতুন বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালাকে আমরা স্বাগত জানাই।