বিশ্বজমিন
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কীভাবে কাজ করে এবং কোথায় পৌঁছাতে পারে?
মানবজমিন ডেস্ক
(১৩ ঘন্টা আগে) ১৬ জুন ২০২৫, সোমবার, ৯:০৩ অপরাহ্ন

পারমাণবিক স্থাপনা ও শীর্ষ সামরিক নেতাদের ওপর ধারাবাহিক হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান শত শত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের দিকে নিক্ষেপ করেছে। যদিও ইসরাইল অনেক ক্ষেপণাস্ত্র মাঝপথে প্রতিহত করতে সক্ষম হয়, তবুও কিছু ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে ঢুকে পড়ে। তা তেল আবিবসহ বেশ কিছু এলাকায় প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়।
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কী— ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হলো এমন একধরনের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র যা উৎক্ষেপণের পর একটি পূর্বনির্ধারিত পথে বায়ুমণ্ডলের বাইরে উঠে পরে মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে নির্ধারিত লক্ষ্যে গিয়ে আঘাত হানে। এটি সাধারণত তিনটি ধাপে কাজ করে। তা হলো— ক) বুস্ট ফেজ। এই ধাপে রকেট ইঞ্জিন ক্ষেপণাস্ত্রকে দ্রুত গতিতে উঁচুতে তুলতে থাকে, সাধারণত ১-৫ মিনিট পর্যন্ত চলে। খ) মিডকোর্স ফেজ । ক্ষেপণাস্ত্রটি এই ধাপে বায়ুমণ্ডলের বাইরে চলে যায় এবং মাধ্যাকর্ষণ ও গতি ব্যবহার করে নির্দিষ্ট লক্ষ্য অভিমুখে অগ্রসর হয়। গ) টার্মিনাল ফেজ। ক্ষেপণাস্ত্রটি বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসে এবং খুব দ্রুত গতিতে ভূমির দিকে পতিত হয়, তখন এটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি মধ্যপ্রাচ্যে অন্যতম বৃহৎ ও জটিল বলে বিবেচিত।
দেশটির কিছু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রকারভেদ ও পরিসীমা নিচে তুলে ধরা হলো: ক্ষেপণাস্ত্রের নাম শাহাব-৩। এর পাল্লা ১৩০০ কিলোমিটার। এটি মধ্যম পাল্টার ক্ষেপণাস্ত্র। ইসরাইল পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র। সেজিল-২ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ২০০০ কিলোমিটার। এটি মধ্যম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং কঠিন জ্বালানিভিত্তিক। এই ক্ষেপণাস্ত্র দ্রুত মোতায়েনযোগ্য। খোরামশাহর ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা কমপক্ষে ২০০০ কিলোমিটার। এর পাল্লা মধ্যম পর্যায়ের। ওজন ১৮০০ কেজি পর্যন্ত। ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। ইমাদ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ১৭০০ কিলোমিটার। এতে নির্ভুলতা বাড়ানো হয়েছে। ব্যবার করা হয়েছে উন্নত গাইডেড প্রযুক্তি।
দূরপাল্লার ক্ষমতা: ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রায় সমগ্র ইসরাইলে আঘাত হানতে সক্ষম। ইরান ভূমি, মোবাইল লঞ্চার ও ভূগর্ভস্থ ঘাঁটি থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করতে পারে। অনেক ক্ষেপণাস্ত্র মিথ্যা টার্গেট পাঠিয়ে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিভ্রান্ত করার ক্ষমতা রাখে।
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কতটা কার্যকর: ইসরাইল ‘আয়রন ডোম’ এবং ‘এরো’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র মাঝপথে ধ্বংস করতে পারলেও, একসঙ্গে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করার কারণে প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চাপের মুখে পড়ে। এই ‘স্যাচুরেশন অ্যাটাক’ কৌশল ইসরাইলকে বিস্মিত করে দেয় এবং কিছু ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ভেদ করে ভিতরে ঢুকে পড়ে।