বিশ্বজমিন
ফিজিতে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের শোষণ নিয়ে উদ্বেগ
মানবজমিন ডেস্ক
(১ সপ্তাহ আগে) ৯ জুন ২০২৫, সোমবার, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১০ অপরাহ্ন

ফিজিতে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের বেতনে অনিয়ম ও কাজের পরিবেশ লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। এটা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশি নিয়োগসংস্থা অ্যাঙ্কর কেয়ার মাইগ্রেশন অ্যান্ড রিক্রুটমেন্ট। সংস্থাটির মতে, ফিজির কিছু বড় কোম্পানি শ্রমিক নিয়োগে অবৈধ পন্থা অনুসরণ করছে এবং তাদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ফিজি টাইমস।
এতে বলা হয়, গত দুই বছরে অ্যাঙ্কর কেয়ার ফিজিতে কাজের জন্য ২০০-এর বেশি বাংলাদেশি পুরুষ শ্রমিক পাঠিয়েছে মূলত অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে শ্রমিক চলে যাওয়ায় সৃষ্ট শূন্যতা পূরণের লক্ষ্যে। কিন্তু বিদেশি শ্রমিকদের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে কাজের পরিবেশের লঙ্ঘন এবং বেতন বঞ্চনার অভিযোগ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান।
তিনি বলেন, ফিজির কিছু কোম্পানি বাংলাদেশে এসে স্থানীয় এজেন্সির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে শ্রমিক সংগ্রহ করছে, প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ভালো বেতন ও কাজের পরিবেশের। কিন্তু এই কোম্পানিগুলো সঠিক চ্যানেল অনুসরণ না করায় সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
তিনি জানান, অনেক সময় এসব কোম্পানি প্রকল্পের জন্য ১০ জন শ্রমিক চাইলেও বাস্তবে ২০ জন নিয়ে যায়। ফলে কর্মঘণ্টা কমে যায় এবং প্রত্যাশিত বেতনও মেলে না। শ্রমিকরা বলছেন, কথা ছিল ঘণ্টায় ৭ ডলার বেতন, কিন্তু পাচ্ছি ৫ ডলার। ৪৮ ঘণ্টা কাজের কথা ছিল, কিন্তু কাজ পাচ্ছি মাত্র ৩৫ ঘণ্টা। আমি পরিবার চালাবো কীভাবে? এটা শ্রমিকদের হতাশা।
অ্যাঙ্কর কেয়ার মাইগ্রেশন গত দুই বছর ধরে একটি সঠিক নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে বলে জানান মাসুদুর রহমান। তিনি বলেন, একজন নিয়োগদাতা যখন তাদের কাছে কর্মীর চাহিদা নিয়ে আসে, তখন তারা প্রথমে সেই কোম্পানির আইনি বৈধতা, শ্রম আইন অনুসরণ, এবং অর্থনৈতিক সক্ষমতা যাচাই করে। এরপর চুক্তিপত্রে নির্দিষ্ট শর্ত সন্নিবেশ করে তা বাংলাদেশ সরকারের কাছে পাঠানো হয়। সরকার যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দিলে তবেই কর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় এবং প্রার্থীদের দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য টেস্টিং অথরিটি বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।
মাসুদুর রহমান বলেন, যদি বাসচালক প্রয়োজন হয়, আমরা বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি’র মাধ্যমে লাইসেন্স ও ট্রাফিক রেকর্ড যাচাই করি। ঠিক একইভাবে কাঠমিস্ত্রী বা অন্য যেকোনো পেশার ক্ষেত্রেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করি।
ফিজির সরকারকে উদ্দেশ্য করে মাসুদুর রহমান বলেন, বিদেশি কর্মী নিয়োগে ফিজি সরকারকে আরও কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে, যেন কোম্পানিগুলো সঠিক নিয়মে শ্রমিক আনে এবং তাদের শোষণ না করতে পারে। তিনি আরও বলেন, আপনি যদি ভালো মানের কর্মী চান, তাহলে তার উপযুক্ত বেতন দিতে হবে। ফিজিতে আমাদের ২০০ শ্রমিক কাজ করছেন, কারণ আমরা সবদিক বিবেচনা করেই নিয়োগ দিয়েছি।