বিশ্বজমিন
ঈদুল আযহার প্রাক্কালে বৈরুতে ইসরাইলের বিমান হামলা
মানবজমিন ডেস্ক
(১৫ ঘন্টা আগে) ৬ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ১১:০০ পূর্বাহ্ন

ঈদুল আযহার প্রাক্কালে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। বৃহস্পতিবার রাতের এই হামলায় কয়েকটি ভবনে আঘাত হানা হয়। ইসরাইল দাবি করেছে, তারা হিজবুল্লাহর ড্রোন উৎপাদন কেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা হিজবুল্লাহর এমন একটি ইউনিট চিহ্নিত করেছে যা ‘হাজার হাজার’ ড্রোন গোপনে উৎপাদন করছিল এবং ইরানি অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছিল।
যদিও হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম এক বিবৃতিতে বলেন, এই হামলা আমাদের স্বার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও অর্থনীতির ওপর একটি পরিকল্পিত আঘাত। বিশেষ করে যখন ঈদুল আযহার মতো পবিত্র উৎসব এবং পর্যটন মৌসুম সামনে।
তিনি এই হামলাকে ‘জঘন্য ও পূর্বপরিকল্পিত’ বলে অভিহিত করেন। লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন হামলাটিকে আন্তর্জাতিক চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, একটি পবিত্র ধর্মীয় উৎসবের আগ মুহূর্তে এ ধরনের হামলা মানবতা ও কূটনৈতিকতার সম্পূর্ণ বিপরীত। হামলার এক ঘণ্টা আগে, ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র অবিচাই আদ্রায়ী দক্ষিণ বৈরুতে দাহিয়ে অঞ্চলের হাদাথ, হারেত ও বুর্জ আল-বারাজনে বসবাসকারী নাগরিকদের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
তার পোস্টে হিজবুল্লাহ-নিয়ন্ত্রিত অবকাঠামোর অবস্থান একটি মানচিত্রে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়। এরপর বহু মানুষ এলাকা ছাড়তে শুরু করলে শহরের রাস্তায় যানজট দেখা দেয়। পরে আকাশে ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা যায়। ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে গত ছয় মাস ধরে কার্যকর একটি যুদ্ধবিরতি ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক এই হামলায় সেই চুক্তি ভঙ্গ হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের হামলার পরপরই হিজবুল্লাহ সীমান্তে তাদের হামলা শুরু করে।
২০২৩ সালের নভেম্বরের শেষদিকে একটি যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ইসরাইল লেবাননের দক্ষিণ থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয় এবং সেই অঞ্চলের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় লেবাননের সেনাবাহিনী। চুক্তিতে বলা হয়, এটি ইসরাইল ও লেবানন- উভয় দেশের আত্মরক্ষার অধিকার অক্ষুণ্ন রাখবে, যা আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কিন্তু এরপরও ইসরাইল গত কয়েক মাসে একাধিকবার দক্ষিণ বৈরুতে বিমান হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে এপ্রিল মাসে তথাকথিত নির্ভুল-নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র গুদামে এবং হিজবুল্লাহর এক কর্মকর্তাকে লক্ষ্য করে হামলা ছিল উল্লেখযোগ্য। লেবানন সরকার বলেছে, এসব হামলা এবং দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি স্থানে এখনও ইসরাইলি সেনা অবস্থান করা যুদ্ধবিরতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।