বিশ্বজমিন
ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রতিক্রিয়া
মানবজমিন ডেস্ক
(১ দিন আগে) ৫ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১১:৩১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৮:৪৯ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ১২টি দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অভিবাসনবিরোধী কড়া পদক্ষেপে ট্রাম্প ঘোষণা করেন- আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো, বিষুবীয় গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন- এই ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবেন। এছাড়া, আরও সাতটি দেশের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, যার ফলে সেসব দেশের নাগরিকরা আর অভিবাসী বা অস্থায়ী অ-অভিবাসী ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। তবে কিছু অস্থায়ী কর্মসংস্থানের ভিসা অনুমোদিত থাকবে। এই নতুন নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্পের প্রথম দফার ‘মুসলিম বিরোধী নিষেধাজ্ঞা’র মতোই। প্রথম মেয়াদে তিনি সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন।
যুদ্ধের সময় মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে কাজ করা আফগান নাগরিকরা এই নিষেধাজ্ঞা থেকে তাদের অব্যাহতির দাবি জানিয়েছেন। কারণ এতে তাদের আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানোর ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। সেখানে তারা নির্যাতনের শিকার হতে পারেন। এই নিষেধাজ্ঞায় তালিকাভুক্ত ১২টি দেশের মধ্যে সাতটি আফ্রিকান হওয়ায়, আফ্রিকান ইউনিয়ন বলেছে এটি ‘মানবিক সম্পর্ক, শিক্ষা বিনিময়, বাণিজ্যিক যোগাযোগ এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক’ ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমেরিকান প্রশাসনের উচিত দেশগুলোর সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে একটি পরামর্শমূলক পন্থা গ্রহণ করা।’ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক্সে পোস্ট করে বলেছে, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বৈষম্যমূলক, বর্ণবাদী এবং নির্মম। এটি কেবল ঘৃণা এবং ভুল তথ্য ছড়াবে’। চাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুলায়ে সাব্রে ফাদৌল বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা তাদের ‘সন্ত্রাস মোকাবেলায় প্রতিশ্রুতিকে সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করেছে’। প্রেসিডেন্ট মাহামাত ইদ্রিস ডেবি ইটন পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন নাগরিকদের ভিসা বন্ধের নির্দেশ দেন। কঙ্গোর সরকারি মুখপাত্র থিয়েরি মুংগালা বলেন, আমরা মনে করি এটি একটি ভুল বোঝাবুঝি। কঙ্গো কোনো সন্ত্রাসী রাষ্ট্র নয়, সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয় না এবং সন্ত্রাসে লিপ্ত নয়। অক্সফাম আমেরিকার প্রেসিডেন্ট অ্যাবি ম্যাক্সম্যান বলেন, এটি জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে নয়, বরং বিভাজন সৃষ্টি ও নিরাপত্তা-অন্বেষী সম্প্রদায়গুলিকে খলনায়ক বানানোর প্রয়াস। সোমালিয়ার যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূত দাহির হাসান আবদি বলেন, মোগাদিশু তার দীর্ঘকালীন সম্পর্ককে মূল্য দেয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই ইস্যুতে সংলাপে প্রস্তুত। ১৯৯১ সালে গৃহযুদ্ধের পর সোমালিয়ায় দীর্ঘ সহিংসতা চলেছে এবং আল-শাবাব গোষ্ঠী দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সরকার ও সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ভেনেজুয়েলার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিয়োসদাদো ক্যাবেলো এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘সবার জন্য একটি বড় ঝুঁকি’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নাগরিকদের অকারণে হয়রান করা হচ্ছে।’ ট্রাম্প প্রশাসন অনেক ভেনেজুয়েলান অভিবাসীকে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে গ্যাং সদস্য হওয়ার সন্দেহ পোষণ করে ট্রাম্প প্রশাসন, যদিও প্রমাণের অভাব রয়েছে।