বিশ্বজমিন
‘বাজেট বিল ঘৃণিত বিভীষিকা’
ট্রাম্প-ইলন মাস্ক সম্পর্কের অবনতি
মানবজমিন ডেস্ক
(১ দিন আগে) ৪ জুন ২০২৫, বুধবার, ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৮:৪৭ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্র ইলন মাস্কের মধ্যে সম্পর্কে নাটকীয় অবনতি ঘটেছে। ১২৯ দিন ট্রাম্প প্রশাসনে খরচ কমানো বিষয়ক ডজ নামের কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেয়ার পর ৩১শে মে আকস্মিকভাবে তিনি সেই দায়িত্ব থেকে সরে যান। এবার প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের মূল বাজেট ও কর-বিলকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন। একে তিনি ‘একটি ঘৃণিত বিভীষিকা’ বলে মন্তব্য করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস গত মাসে বিলটি অনুমোদন করে। তাতে বহু ট্রিলিয়ন ডলারের কর ছাড়, প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি এবং ঋণের সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব আছে।
মাস্ক এক্সে লিখেছেন, যারা এ বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, তাদের লজ্জা হওয়া উচিত। ৩১শে মে হঠাৎ করেই ট্রাম্প প্রশাসন থেকে সরে দাঁড়ানোর সময় তিনি বিলটিকে ‘হতাশাজনক’ বলে মন্তব্য করেন। কিন্তু এবার তার বক্তব্য আরও জোরালো ও প্রকাশ্যে এসেছে। তিনি আরও বলেন- এই অযৌক্তিক বাজেট বিল আমাদের বিশাল বাজেট ঘাটতিকে ২.৫ ট্রিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাবে এবং আমেরিকান নাগরিকদের ওপর অস্থির ঋণের বোঝা চাপাবে। মাস্ক একসময় ট্রাম্পকে সমর্থনকারী রিপাবলিকান প্রার্থীদের পাশে দাঁড়ান। নির্বাচনে ট্রাম্পের পক্ষে ধুন্দুমার প্রচারণা চালান। এমন সব অঙ্গভঙ্গি করেন সেসব প্রচারণায় যে তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। সব সময় তাকে পাশে পাশে রেখেছেন ট্রাম্প। কিন্তু সম্প্রতি তাদের সম্পর্কে কী এমন ঘটেছে তা স্পষ্ট নয়। তবে এবার ইলন মাস্ক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আগামী বছরের নভেম্বরে আমরা তাদের বাদ দেব যারা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। হোয়াইট হাউস প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, প্রেসিডেন্ট জানেন মাস্ক এই বিল নিয়ে কী ভাবেন। এটি একটি ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ এবং প্রেসিডেন্ট এতে অটল আছেন।
এই বিলটিতে ২০১৭ সালের করছাড় নবায়ন, প্রতিরক্ষা খাতে অর্থায়ন এবং অনথিভুক্ত অভিবাসীদের ব্যাপকভাবে বহিষ্কারের পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত আছে। একই সঙ্গে এটি যুক্তরাষ্ট্রের ঋণসীমা ৪ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করবে। কেন্টাকির সিনেটর র্যান্ড পল ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, ঋণসীমা বাড়ানো হলে তিনি বিলটির পক্ষে ভোট দেবেন না। তিনি বলেন, এই বিল পাস হলে রিপাবলিকানরাই বিশাল ঋণের দায় নেবে। ট্রাম্প পাল্টা মন্তব্য করে বলেন, র্যান্ড পল ‘বিলটি নিয়ে প্রায় কিছুই বোঝেন না’ এবং ‘কেন্টাকির মানুষ তাকে সহ্য করতে পারে না।’
ওদিকে ট্রাম্প-ইলন মাস্ক সম্পর্কের অবনতিতে রিপাবলিকান সিনেট নেতা জন থুন সাংবাদিকদের জানান, আমরা পূর্ণ গতিতে এগিয়ে যাব। মতপার্থক্য থাকলেও আমরা প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী এজেন্ডা বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ। হাউস স্পিকার মাইক জনসন জানান, তিনি সোমবার মাস্কের সঙ্গে ২০ মিনিট ফোনে কথা বলেছেন এবং আশা করেছিলেন মাস্ক সমর্থন জানাবেন। তিনি বলেন, মাস্ক ভুল করছেন। বিলটির ইভি (ইলেকট্রিক ভেহিকেল) ট্যাক্স ক্রেডিট বাতিল টেসলার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, কিন্তু আমি আশা করিনি যে তিনি এমনভাবে আঘাত করবেন। রাজনীতি বিষয়ক ওয়েবসাইট অ্যাক্সিওস জানায়, মাস্ক চেয়েছিলেন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফএএ) এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল ব্যবস্থা তার স্টারলিংক স্যাটেলাইটে পরিচালিত হোক। কিন্তু প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা এবং স্বার্থের সংঘাতের সম্ভাবনার কারণে এটি প্রত্যাখ্যান করা হয়। অন্যদিকে মাস্কের মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন সিনেটের সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার। তবে অতীতে তিনি মাস্ক ও ডজ টিমের সমালোচক ছিলেন। তিনি বলেছেন, যিনি ট্রাম্পের বন্ধু, তিনিই বলছেন বিলটা খারাপ। তাহলে বুঝুন, কতটা খারাপ এটা!
পাঠকের মতামত
স্বার্থের টান পাগল ও বোঝে
Really a sad news..