বিশ্বজমিন
ইসরাইলের উগ্র মনোভাব ও শান্তি প্রত্যাখ্যানের নিন্দা আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের
মানবজমিন ডেস্ক
(১ দিন আগে) ২ জুন ২০২৫, সোমবার, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৫:১৪ অপরাহ্ন

ইসরাইলি সরকারের ‘উগ্রতা ও শান্তি প্রত্যাখ্যানের’ কঠোর সমালোচনা করেছেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান। অধিকৃত পশ্চিম তীরে আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে তিনি এই মন্তব্য করেন। আম্মানে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ইসরাইলি সরকারের এই পদক্ষেপ তার চরমপন্থি মনোভাব এবং শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতি স্পষ্ট অবজ্ঞা প্রকাশ করে। এই সংবাদ সম্মেলনে সৌদি আরবের পাশাপাশি জর্ডান, মিশর ও বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও অংশ নেন। তারা সবাই ইসরাইল সরকারের এই আচরণকে ‘দম্ভপূর্ণ ও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রথার লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ।
গাজা সংকট নিরসনে ও যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা চালাতে গঠিত আরব-ইসলামিক যৌথ বিশেষ সম্মেলনের অধীন মন্ত্রীপরিষদের সদস্যরা রোববার আম্মানে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠক করেন। আল-হুসেইনিয়া প্রাসাদে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাদশাহ এবং মন্ত্রীরা ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা ও দ্বিরাষ্ট্র ভিত্তিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এই মন্ত্রীপরিষদে সৌদি আরব, মিশর, জর্ডান ও বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ছাড়াও আরব লিগের মহাসচিব অংশ নেন। তারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, তার উপদেষ্টা হুসেইন আল-শেইখ এবং প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তফার সঙ্গে বৈঠক করেন। জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান আল-সাফাদি বলেন, ইসরাইলি সরকার এই অঞ্চলে শান্তির সমস্ত সম্ভাবনাকে হত্যা করছে।
প্রিন্স ফয়সাল তার বক্তব্যে যোগ করেন, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকলেও, তারা এমন এক পক্ষের মুখোমুখি, যারা কোনো সমাধান চায় না। মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলআত্তি জর্ডান নিউজ এজেন্সিকে জানান, জর্ডান ও মিশর যৌথভাবে ইসরাইলের যেকোনো পরিকল্পনার বিরোধিতা করবে। গাজা ও পশ্চিম তীর থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করতে চায় ইসরাইল।
এর আগে পশ্চিম তীরের রামাল্লায় আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠক করার কথা জানান। কিন্তু গত শনিবার ইসরাইল সরকার জানায়, রামাল্লাহতে রোববারের জন্য নির্ধারিত বৈঠকটি তারা অনুমোদন দেবে না। এর ফলে আরব মন্ত্রীদের পরিকল্পিত সফর ভেস্তে যায়। আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জানান, জুন মাসে নিউইয়র্কে একটি উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনের আয়োজন করা হবে, যার সহ-আয়োজক সৌদি আরব ও ফ্রান্স। এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য হবে ১৯৬৭ সালের সীমান্তের ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী করে দ্বিরাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানকে এগিয়ে নেওয়া।
মন্ত্রীপরিষদ মিশর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় পরিচালিত যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে এবং ইসরাইলকে অবরোধ প্রত্যাহার ও মানবিক সহায়তা প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে আহ্বান জানায়। গাজায় যুদ্ধবিরতির পর কায়রোতে একটি পূর্ণাঙ্গ পুনর্গঠন সম্মেলন আয়োজনের বিষয়েও তারা আলোচনা করেন। রামাল্লাহ সফর বাতিল করে দেওয়াকে তারা কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন বলে আখ্যা দেন এবং এর তীব্র নিন্দা জানান। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আরব মন্ত্রীদের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান এবং তার সরকারের সংস্কার, শান্তিপূর্ণ নীতিমালা ও সহিংসতা পরিহারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি তিনি আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং আটকে রাখা ফিলিস্তিনি অর্থ ছাড়ের আহ্বান জানান।
পাঠকের মতামত
is it enough? shame to all Arab leader's and country !