ঢাকা, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে পরীক্ষার কেন্দ্র ফি নিয়ে তুঘলকি কাণ্ড!

শাহ্‌ মোস্তফা কামাল, শায়েস্তাগঞ্জ থেকে
২৮ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার

 হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) সার্টিফিকেট পরিক্ষা-২০২৪ এর কেন্দ্র ফি লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোনো ধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মাত্র তিন পরীক্ষার বিপরীতে খরচ দেখানো হয়েছে ৫ লক্ষ টাকা। যা ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত ১৭ পরিক্ষার ব্যয়ের চেয়েও বেশি। মূলত প্রশাসনিক কর্মকর্তা পরিচালনা কমিটির সদস্য ও কর্মচারীদের সম্মানী বাবদ উত্তোলন করা হয়েছে প্রয়োজনের তুলানায় অতিরিক্ত টাকা। যা অনিয়ম হয়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষা বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রকও।  
জানা যায়, এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৪ এ শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, পঞ্চাশ হাই স্কুল এন্ড কলেজ ও জহুর চান বিবি মহিলা কলেজ থেকে মোট ১ হাজার ১৩৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ফি ও ব্যবহারিক পরিক্ষার ফি বাবদ আয় হয় ৫ লক্ষ ৮২ হাজার ১০৬ টাকা। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের কারণে মাত্র ৩টি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি বাদে বাকি ৪ লক্ষ ৯৮ হাজার ৪০৬ টাকা খরচ দেখিয়ে বিল উত্তোলন করেন পরীক্ষা পরিচালনা কমিটি। যেখানে সম্মানী বাবদ ৩ লক্ষ ৯৩ হাজার ৬০৫ টাকা, ডাক খরচ ২২৩৬ টাকা এবং ৪৩ টি ভাউচারে ১ লক্ষ ২ হাজার ৫৬৫ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। হিসেব করলে দেখা যায় প্রতি ১টি পরীক্ষার বিপরীতে খরচ করা হয়েছে ১ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা।
অপরদিকে ২০২৩ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ওই বছর কেন্দ্র কি বাবদ আয় হয় ৫ লক্ষ ৭২ হাজার ১১৫ টাকা। ব্যবহারিক ও ১৭টি পরীক্ষার বিপরীতে সমস্ত টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এর মাঝে প্রশাসনিক কর্মকর্তা শিক্ষক কর্মচারী সম্মানী বাবদ ৩ লক্ষ ৫৭২ টাকা খরচ করা হয়। ২০২৪ সালের পরীক্ষায় সম্মানী বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ৩ লক্ষ ৯৩ হাজার ৬০৫ টাকা। যা ২০২৩ সালের চেয়ে ৯৩ হাজার ৩৩ টাকা বেশি। অতিরিক্ত খরচের বিষয়ে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার কেন্দ্র ফি থেকে তৎকালীন অধ্যক্ষ ও পরীক্ষার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিজুল হক চৌধুরী ১৭ পরীক্ষার বিপরীতে সম্মানী নেন ৩০ হাজার ৯৩৮ টাকা। কমিটির পরিচালনা কমিটির ৫ সদস্য নেন ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৫০০ টাকা।  এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও পরীক্ষার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, এবছর আয় বেশি হওয়ায় সম্মানী বেশি নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা খাতের বাহির থেকে কোন টাকা নেওয়া হয়নি।  একই বিষয়ে সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হাবিবা বাছিতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার কাছে অনিয়ম মনে হয়েছে।  কেউ যদি অভিযোগ করেন তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার পল্লব হোম দাস বলেন, অধ্যক্ষের সঙ্গে আমি কথা বলেছি তিনি জানিয়েছেন ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত বছরের তুলনায় এবছর সম্মানী বেশি উত্তোলন করা হয়েছে। এখানে যদি কোন অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস'া গ্রহণ করবো।
যশোরে ৬২ রাইস মিলের লাইসেন্স বাতিল
স্টাফ রিপোর্টার, যশোর থেকে: সরকারী নির্দেশনা অমান্য করায় যশোর জেলার ৬২টি রাইস মিলের লাইসেন্স বাতিল করেছে খাদ্য অধিদপ্তর। গত আমন মৌসুমে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহের জন্য চুক্তি না করায় তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস'া নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ না করায় অনেক মিল মালিকের জামানত কর্তন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে খাদ্য বিভাগ।
সূত্র জানিয়েছে, যশোর জেলায় সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহের জন্য মোট ১৬৩টি মিলের  ফুড লাইসেন্স রয়েছে। এর মধ্যে ১০১টি মিল গত আমন মৌসুমে সরকারী দামে খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহে সম্মত হয়। বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও বাকি ৬২টি মিল চুক্তি করেনি। লাইসেন্সপ্রাপ্ত মিলগুলোর জন্য চুক্তি বাধ্যতামূলক হলেও, এসব মিল মালিক গত বছরের ডিসেম্বরে ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠানো চিঠির সন্তোষজনক জবাব দেননি।
জেলা খাদ্য বিভাগ জানিয়েছে, গত আমন মৌসুমে যশোর জেলায় ১৪ হাজার ২৪৭ টন সিদ্ধ চাল ও ৮০১ টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে মিল মালিকদের অসহযোগিতার কারণে মাত্র ৭ হাজার ৩৭০ টন চাল সংগ্রহ সম্ভব হয়েছে। এর ফলে আমন মৌসুমের চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।
বাতিল হওয়া ৬২টি লাইসেন্সের মধ্যে ১০টি অটো রাইস মিল এবং ৫২টি হাস্কিং রাইস মিল রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ না করায় অনেক মিলারের জামানতও কর্তন করা হয়েছে।
এদিকে, চুক্তিবদ্ধ কয়েকজন মিলার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সরকার ৪৭ টাকা কেজি দরে চাল কিনছে, অথচ বাজারে চালের দাম অনেক বেশি। এজন্য তারা বারবার চালের সরকারি সংগ্রহমূল্য বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিলেন, কিন' সরকার সে দাবি আমলে নেয়নি। ফলে নির্ধারিত মূল্যে চাল সরবরাহ করলে তাদের পুঁজির ক্ষতি হচ্ছিল।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সেফাউর রহমান জানান, ৬২ মিলারের লাইসেন্স চলতি মাসে বাতিল করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ‘অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যশস্য সংগ্রহ, ব্যবস'াপনা ও নিয়ন্ত্রণ আদেশ, ২০২২’-এর ৭ ও ৮ নম্বর বিধান অনুযায়ী এ ব্যবস'া গ্রহণ করা হয়েছে।
 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status