বাংলারজমিন
স্ত্রীকে হত্যার আড়াই মাস পর স্বামীর স্বীকারোক্তি
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
২৫ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবারকুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বৃদ্ধা শাহিদা বেগম হত্যার আড়াই মাস পর রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে নিহতের স্বামী আবদুল মমিন নিজেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেছে থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ। পুলিশ জানায়, ঘোলপাশা ইউনিয়নের ধনুসাড়া গ্রামে গত ৩রা ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে শাহিদার লাশ বাড়ির টয়লেটের রিংয়ের মধ্যে বিবস্ত্র অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তার ছেলে মাছুম বিল্লাহ বাদী ও স্বামী ১ নম্বর সাক্ষী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করা হয়। মামলার পর পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৭শে মার্চ ১ নম্বর সাক্ষী আব্দুল মমিনকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত দুইদিনের মঞ্জুর করেন। পরে গত ২১শে এপ্রিল পুলিশ আবদুল মমিনকে হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চৌদ্দগ্রাম থানায় নিয়ে আসে। পরে তাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করার একপর্যায়ে খুন করার কথা স্বীকার করে এবং বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার বিস্তারিত প্রকাশ করে। মমিনের বরাতে পুলিশ উল্লেখ করেন, মমিনের মা জীবিত এবং বয়স প্রায় ১৩০ এর কাছাকাছি। মমিন ও তার ভাই একমাস করে তার মায়ের দায়িত্ব নিয়ে সেবা যত্ন করেন। তবে তার মায়ের সেবা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে প্রায় ঝগড়া হতো। মমিন ও তার স্ত্রীকে নিয়ে ধনুসাড়া পূর্ব পাড়ায় তাদের নতুন বাড়িতে থাকেন ও স্থানীয় মসজিদে ইমামতি করেন। তবে মমিন তার মাকে পুরাতন বাড়িতে দেখতে গেলে তার মা নালিশ করে বলেন, তার স্ত্রী তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তখন মমিন ওইদিন রাতেই স্ত্রীকে মায়ের সঙ্গে খারাপ আচরণের কথা জিজ্ঞাসা করে। এতে শাহিদা গালমন্দ করলে সে বিরক্ত হয়ে তার পাশে থাকা বালিশ দিয়ে স্ত্রীর মুখ চেপে ধরে রাখলে এ সময় তার স্ত্রী মারা যান। পরে ভোর রাত ৪টা থেকে সাড়ে ৪টার দিকে স্ত্রীর লাশ কাঁধে করে বাড়ির পাশে টয়লেটের রিংয়ের ভিতরে রেখে উপরের ঢাকনাটি লাগিয়ে দেন। পরে ভোর ৫টার দিকে সে মসজিদে চলে যায়। মসজিদ থেকে এসে তার ছেলেকে ফোন দিয়ে বলে, তোমার মাকে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে তার ছেলেসহ স্থানীয়রা অনেক খোঁজাখুঁজির পর সাড়ে ৭টায় লাশ খুঁজে পায়। লাশ খোঁজার সময় মমিন সবার সঙ্গেই ছিল। তাকে কেউ সন্দেহ করেনি।