বাংলারজমিন
টাকা ছাড়া মিলছে না সেবা
মেহেন্দিগঞ্জে ধর্ষণের শিকার নারীর স্বামীকে ওসি’র হুমকি
মেহেন্দিগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি
১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবারবরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে ধর্ষণের শিকার নারীর স্বামীকে থানায় ডেকে এনে ওসি’র হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়াও থানা পুলিশের কোনো সেবাই মিলছে না ঘুষ-বাণিজ্য ছাড়া। যোগদানের পর থেকে সর্বস্তরে অভিযোগের পাহাড় তৈরি করেছেন মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। ধর্ষিণের শিকার ভুক্তভোগীর স্বামীকে থানায় ডেকে প্রাণনাশের হুমকি দেন তিনি।
হুমকির একটি অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, এতে তিনি বলছেন, ‘মামলা করে আইও’র সঙ্গে যোগাযোগ করলেই হবে। ওসি’র সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে না। আমার সঙ্গে চালাকি করলে কলিজা টেনে ছিড়ে দেবো। আমি মেহেন্দিগঞ্জ থানায় যতদিন আছি, একদম তছনছ করে দেবো। আমাকে চিনো?’ এর আগে গত ৮ই ফেব্রুয়ারি পাতারহাট বন্দরের মো. ওমর ফারুক খান তার অফিস কক্ষে এক গৃহকর্মীকে ডেকে এনে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি ভুক্তভোগীর স্বামীর কাছে ধরা পড়েন। এ ঘটনা নিয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে প্রথমে ওসি’র তোপের মুখে পড়েন ভুক্তভোগীর স্বামী। একপর্যায়ে সাংবাদিক এবং বিভিন্ন মহলের চাপে ওসি মামলা নেন। মামলা করে ওসির সঙ্গে যোগাযোগ না করায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ভুক্তভোগীর স্বামীকে থানার ডেকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। ওসির আরেকটি রেকর্ডিংয়ে শোনা যায়, তিনি গর্ব করে বলেন, ‘মেহেন্দিগঞ্জের শ্রীপুর, জাঙ্গালিয়া, আলিমাবাদে এত ধর্ষণ হলো! কোনো সাংবাদিক আমার কাছে ফোন দিলো না। আর আপনার মামলায় সাংবাদিক, আর্মি অফিসার দিয়ে ওসিকে ফোন দেয়ান। এত সাহস কোত্থেকে পাইলেন?’
সূত্রে জানা গেছে, মেহেন্দিগঞ্জ থানায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিতে আসা লোকজনকে বিপাকে ফেলে মাসের পর মাস ঘুরানো হয়। পরবর্তীতে ৫-৭ হাজার টাকা ঘুষ দিলই মিলে যায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স। এ ছাড়াও বিভিন্ন মামলার তদন্তকারী আইও’র কাছ থেকে টাকা না পেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাও অভিযোগ আছে ওসির বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের দাবি, এ বিশাল দ্বীপাঞ্চলের মানুষের জানমালের নিরাপত্তার সেবায় একজন চৌকস এবং দক্ষ অফিসার প্রয়োজন। এ ব্যাপারে জানতে মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার কানে শোনার মেশিনটা নষ্ট হয়ে গেছে। কথা ভালোভাবে শুনি না। পরে কথা বলবো।