বাংলারজমিন
ছাত্রলীগ নেতাকে ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ
বড়লেখায় মামলার পর গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঘরছাড়া মানুষ
বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবারমৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার কলাজুরা গ্রামে গ্রেপ্তারের সময় এক ছাত্রলীগ নেতাকে তার স্বজন ও সহযোগীরা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। ওই মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ কলাজুরা গ্রামে অভিযান চালাচ্ছে। এরইমধ্যে পুলিশ এক ফার্মাসিস্ট ও দুই ব্যবসায়ীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। এতে কলাজুরা গ্রামের সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গত সোমবার রাতে এক প্রতিবাদ সভায় কলাজুরা বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী এমন অভিযোগ করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত ফার্মাসিস্ট ও দুই ব্যবসায়ীর মুক্তির দাবিতে এবং নিরীহ মানুষের বাড়িতে পুলিশের অভিযানের প্রতিবাদে এ সভার আয়োজন করা হয়। মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কলাজুরা গ্রামের বাসিন্দা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আজির উদ্দিনের ছেলে দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম আহমদ হাসানের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা রয়েছে। গত শনিবার রাতে বড়লেখা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই তৌহিদুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ কলাজুরা বাজারে অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগ নেতা মাসুম আহমদ হাসানকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাকে গাড়িতে উঠাতে গেলে তার স্বজন ও সহযোগীরা তাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনার পরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে কলাজুরা বাজারের ফার্মাসিস্ট গৌরধন সিংহ, ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম, জামিল আহমদ ও মুরাদ আহমদকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনার রাতেই বড়লেখা থানার এসআই দেবল চন্দ্র সরকার ছাত্রলীগ নেতা মাসুমসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে না পেরে পুলিশ এক ফার্মাসিস্ট ও ব্যবসায়ীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে। তবে পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তারকৃতরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এদিকে ঘটনার পর পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য কলাজুরা গ্রামে অভিযান চালাচ্ছে। গত রোববার রাতে কলজুরা বাজারের ব্যবসায়ী স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপি’র সদস্য আজম ইসলামের বাড়িসহ অনেক বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে। এতে ওই গ্রামের অনেক মানুষের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভয়ে অনেকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে থাকছেন। এমনকি ভয়ে স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকানপাটও বন্ধ রাখছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, আমি এক মাস আগে বিদেশ থেকে দেশে ঘুরতে এসেছি। পুলিশ রাতে অনেক বাড়িতে হানা দিচ্ছে। আমিও ভয়ে আছি। গ্রেপ্তারের ভয়ে রাতে অন্য বাড়িতে গিয়ে থাকতে হচ্ছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বড়লেখা থানার এসআই সুব্রত চন্দ্র দাস বলেন, প্রকৃত আসামিদের শনাক্ত করে তাদের বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। এরইমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিরীহ কোনো মানুষের বাড়িতে পুলিশ অভিযান করেনি। তাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।