অনলাইন
ইউক্রেনে গ্যাস সরবরাহকারী রাশিয়ার পাইপলাইনের অধিকার দাবি করলো আমেরিকা
মানবজমিন ডিজিটাল
(১ সপ্তাহ আগে) ১৪ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ২:১৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:৩৫ অপরাহ্ন

ইউক্রেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পাইপলাইনের নিয়ন্ত্রণ দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই পাইপলাইন দিয়ে রাশিয়া থেকে গ্যাস ইউরোপে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। হোয়াইট হাউসে খনিজ সম্পদ চুক্তির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে বসেন মার্কিন ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা । ডনাল্ড ট্রাম্প চান পূর্ববর্তী বাইডেন প্রশাসন কর্তৃক সরবরাহ করা অস্ত্রের বিনিময়ে কিয়েভ তার প্রাকৃতিক সম্পদ ‘প্রতিদান’ হিসেবে আমেরিকাকে হস্তান্তর করুক।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা ক্রমেই বেশি বিদ্বেষপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে হোয়াইট হাউসের দেয়া খসড়া প্রস্তাবে আগের চেয়ে অনেক বেশি দাবি করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের কাছে তেল ও গ্যাসের পাশাপাশি তার ৫০০ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের বিরল খনিজ সম্পদ দেয়ার দাবি জানায়। আলোচনার সাথে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, সাম্প্রতিকতম নথি মোতাবেক যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স করপোরেশন’ ইউক্রেন হয়ে ইউরোপে সরবরাহ করা রুশ গ্যাসের পাইপলাইনের নিয়ন্ত্রণ দাবি করেছে।
এই পাইপলাইনটি পশ্চিম রাশিয়ার সুদঝা শহর থেকে ইউক্রেনের উজহোরোদ শহর পর্যন্ত বিস্তৃত, যা প্রায় ৭৫০ মাইল দূরে ইইউ এবং স্লোভাকিয়ার সীমান্তে অবস্থিত। পাইপলাইনটি সাবেক সোভিয়েত আমলে তৈরি। এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় অবকাঠামো ও জ্বালানি সরবরাহের পথ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
১লা জানুয়ারি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি কোম্পানি গ্যাজপ্রমের সাথে পাঁচ বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ইউক্রেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। উভয় দেশই পূর্বে ট্রানজিট ফি বাবদ কয়েকশ মিলিয়ন ইউরো আয় করেছিল, যার মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের প্রথম তিন বছরও ছিল। কিয়েভের একটি থিঙ্কট্যাঙ্ক সেন্টার ফর ইকোনমিক স্ট্র্যাটেজির একজন সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ভলোদিমির লান্ডা বলেছেন যে, ‘আমেরিকানদের ঔপনিবেশিকমানসিকতার দাবী কিয়েভ কর্তৃক গৃহীত হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।’
গত শরতে ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেনের অনুন্নত খনিজ খাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রবেশাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি এমন একটি চুক্তির কল্পনা করেছিলেন যেখানে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করবে, যার বিনিময়ে ভবিষ্যতে যৌথ বিনিয়োগের সুযোগ থাকবে। পরিবর্তে, ট্রাম্প নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি বা সামরিক সহায়তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময়, জেলেনস্কি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ,তিনি তার দেশের আধুনিকীকরণের জন্য একটি চুক্তি করতে প্রস্তুত, তবে ইউক্রেন কেবল তখনই একমত হতে পারে যদি উভয় পক্ষের মধ্যে ‘সমতা’ থাকে, রাজস্ব ‘৫০-৫০’ ভাগ করে দেওয়া হয়।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান