দেশ বিদেশ
আশুলিয়ায় ৬ মরদেহ পোড়ানোর মামলার তদন্ত শেষ, বিচার শুরুর অপেক্ষা
স্টাফ রিপোর্টার
২৪ মার্চ ২০২৫, সোমবার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ঢাকার আশুলিয়ায় হত্যার পর ছয়টি লাশ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। রোববার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই-আগস্টের গণহত্যা মামলায় আশুলিয়ায় হত্যার পর ছয়টি লাশ পোড়ানোর ঘটনার মামলার তদন্ত কাজ শেষ হয়েছে। এটিই প্রথম কোনো মামলার তদন্ত সম্পন্ন হলো। যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা শেষে ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটরের অফিস আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করবে। এ ছাড়াও ঈদের পরপর আরও ৩টি থেকে ৪টি মামলার তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার প্রত্যাশা করেন তিনি। এসব রিপোর্ট পাওয়ার পরেই আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগপত্র ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে। তদন্ত রিপোর্ট দাখিল হওয়ার পরেই আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার প্রক্রিয়ার কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, আমরা বিভিন্ন দিক থেকেই বিচার প্রক্রিয়া আরও দ্রুত সম্পন্ন করার কথা শুনছি। কিন্তু এটা গণ-আদালতের বিচার নয়। আসামিকে পেলাম তিন মাসের মধ্যে সাজা দিয়ে দিলাম। বিচার একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে করতে হয়। আন্ত্তর্জাতিক আইনের মানবতাবিরোধী অপরাধ সবচাইতে জটিলতম অপরাধ। এটার তদন্ত যদি গ্রহণযোগ্য এবং মানসম্পন্ন করতে হয় তবে সময় প্রয়োজন। পাঁচ থেকে ছয় মাস সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্তের যথেষ্ট সময় নয়। কিন্তু আমাদের তদন্ত সংস্থা, প্রসিকিউশন টিম জাতীয় প্রয়োজনে দিন-রাত পরিশ্রম করে তিন মাসের কাজ ১৫ দিন কিংবা এক সপ্তাহে করার চেষ্টা করছে।
এ সময় তাজুল ইসলাম বলেন, ট্রাইব্যুনালে বিচারের ব্যাপারে আপনারা নিরাশ হবেন না। আমরা আমাদের দায়িত্বের প্রতি যথেষ্ট সচেতন, প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, আমরা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য যা দরকার তাই করবো।
এ সময় দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে তাজুল ইসলাম বলেন, ট্রাইব্যুনালে ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের বিচার করার সুযোগ আছে। কিন্তু এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। সরকার যদি রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারের মুখোমুখি করবে। তখন এটা ট্রাইব্যুনালে বিচারের আওতায় আনা যাবে। কিন্তু এখন আমাদের প্রধান নজর হচ্ছে- অপরাধের তদন্তের দিকে। গ্রাউন্ড লেভেলে যারা অপরাধটা করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে কাজ করে যাচ্ছি।
মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় গত ১১ই সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দু’টি অভিযোগ করা হয়। দু’টি অভিযোগই অভিন্ন হওয়ায় একটি মামলা হয়। এ মামলায় গত ২৪শে ডিসেম্বর স্থানীয় সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এ মামলায় সাইফুল ইসলাম পলাতক থাকলেও ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, তৎকালীন ওসি এ এফ এম সায়েদ, ডিবি পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক এবং কনস্টেবল মুকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।