দেশ বিদেশ
ঐকমত্য কমিশন
১০ প্রস্তাবে খেলাফত মজলিস, ৭টিতে সম্মত নয় লেবার পার্টি
স্টাফ রিপোর্টার
২৩ মার্চ ২০২৫, রবিবাররাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ১৬৬টি প্রশ্নমালার যে স্প্রেডশিট পাঠিয়েছে তার মধ্যে খেলাফত মজলিস ১৪০টিতে একমত পোষণ করেছে। বাকি ১০টিতে একমত নয়, ১৫টিতে আংশিক একমত। ওদিকে বাংলাদেশ লেবার পার্টি ১৪৭টিতে একমত পোষণ করেছে। বাকি ৭টিতে একমত নয়, ১২টিতে আংশিক একমত। গতকাল এক বিবৃতিতে খেলাফত মজলিস এবং লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান এসব তথ্য জানিয়েছেন। শনিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের দ্বিতীয় দিনে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
এই দুই সংলাপে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ছাড়াও সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ ও মতপার্থক্য থাকলেও অনেকে একই মতামত পোষণ করেন। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করা সম্ভব। আমরা সবার মতামত শুনবো। আশা করি, আমরা সংলাপের মাধ্যমে একটি জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবো।
তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আপনারা (খেলাফত মজলিস) অংশগ্রহণ করছেন। আমরা অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের কাজ শুরু করেছি এবং বেশি সময় দিতে পারিনি। তবে আপনারা যে আন্তরিকতার সঙ্গে মতামত দিয়েছেন তার ভিত্তিতে আমরা আমাদের আলোচনা চালিয়ে যাবো।
আলী রীয়াজ বলেন, সংলাপ শুধু তাদের দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, এতে অন্য রাজনৈতিক দলও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে প্রথম সংলাপ করে কমিশন।
খেলাফত মজলিসের বিবৃতিতে বলা হয়, সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হওয়া ২ ঘণ্টা ধরে অনুষ্ঠিত যৌথ সংলাপে খেলাফত মজলিসের ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের। প্রতিনিধিদলের অন্যান্য সদস্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব এবিএম সিরাজুল মামুন, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক আবদুল জলিল, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিজানুর রহমান, অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু। ওদিকে বেলা সাড়ে ১১টায় এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বে দলের ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সংলাপ হয়।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৮ই আগস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের অন্যতম লক্ষ্য দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনা। এ লক্ষ্যে সংস্কার প্রস্তাব তৈরির জন্য গত বছরের অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গঠন করে সরকার। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এই ৬টি কমিশন তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এসব কমিশনের প্রধানদের নিয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে সরকার।