ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

বিশ্বজমিন

ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি অগ্রগতি কতদূর!

মানবজমিন ডেস্ক

(১ মাস আগে) ১৫ মার্চ ২০২৫, শনিবার, ১২:০৩ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৬ পূর্বাহ্ন

mzamin

ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের ওপর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের। এ আলোচনাকে চমৎকার এবং ফলপ্রসূ বলে আখ্যায়িত করেছেন ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার রাতে মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাষ্ট্রের দূত স্টিভ উইটকফ। এরপরই ওই মন্তব্য করা হয়। ক্রেমলিন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে যে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে তারাও সেটা চায়। ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া পোস্টে বলেছেন, এই আলোচনা এই ভয়াবহ, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান ঘটানোর একটি ভাল সুযোগ এনে দিয়েছে। তবে যুদ্ধকে প্রলম্বিত করার জন্য আলোচনা টেনে আনার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

অন্যদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে সতর্ক করেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার। তিনি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে গেম খেলতে দেয়া হবে না পুতিনকে। এ সপ্তাহের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নিতে রাজি হয় ইউক্রেন। কিন্তু রাশিয়া তাতে সম্মতি দেয়নি। বৃহস্পতিবার পুতিন বলেছেন, যুদ্ধবিরতির ধারনা ঠিক আছে এবং আমরা এটা  সমর্থন করি। কিন্তু এতে বাজে কিছু বিষয় আছে। এরপরই তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠায় বেশ কিছু কঠিন শর্ত জুড়ে দেন। জেলেনস্কি এর আগে পুতিনের বিরুদ্ধে চুক্তি নিয়ে জালিয়াতি করার অভিযোগ করেছিলেন। তার জবাবে এমন অবস্থান নেন পুতিন। ফলে এক্সে শুক্রবার ধারাবাহিকভাবে পুতিনের সমালোচনা করে পোস্ট দিতে থাকেন। একটিতে লিখেছেন, পুতিন এই যুদ্ধ থেকে কখনো বেরিয়ে যেতে পারবে না। কারণ, এটা ত্যাগ করলে তিনি শূন্যহাত হয়ে যাবেন। এ জন্যই তিনি কূটনীতিতে স্যাবোটাজ করার যেকোনো চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এ জন্য চরম কঠিন শর্ত জুড়ে দিচ্ছেন। যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরুর আগেই তিনি অগ্রহণযোগ্য শর্ত জুড়ে দিচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, এ জন্যই পুতিন সবাইকে একটি অমীমাংসিত ও প্রলম্বিত আলোচনায় টেনে নেয়ার চেষ্টা  করছেন। তিনি দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ ও মাসের পর মাস অর্থহীন আলোচনা টেনে নিতে চাইছেন। আর এই ফাঁকে মানুষ হত্যা করবেন। পুতিন যেসব শর্ত দিয়েছেন তার সবটাই যেকোনো কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা সৃষ্টির উদ্যোগ। রাশিয়া এভাবেই কাজ করে। আমরা এ সম্পর্কেই সতর্ক করি। পুতিনের সমালোচনা করেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমারও। তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের দেযা যুদ্ধবিরতির প্রতি পুরোপুরি অসম্মান দেখাচ্ছে ক্রেমলিন। এর মধ্য দিয়ে দেখানো হচ্ছে যে, শান্তির বিষয়ে পুতিন খুব সিরিয়াস নন। রাশিয়া যদি শেষ পর্যন্ত আলোচনার টেবিলে আসে, তাহলে আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে যে, একটি যুদ্ধবিরতি কতটা সিরিয়াস এবং কতটা টেকসই হয়। যদি তারা এতে রাজি না হয়, তাহলে এই যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়াকে অর্থনৈতিক চাপে ফেলতে হবে।

ওদিকে  এ মাসের শুরুর দিকে লন্ডনে ইউক্রেনে শান্তি বিষয়ে একটি শান্তিরক্ষী মিশনের বিষয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। তা নিয়ে আজ শনিবার কমপক্ষে ২৫ জন নেতার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলার কথা কিয়ের স্টারমারের। একে তিনি নাম দিয়েছেন ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’। স্টারমার এতে আহ্বান জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব যদি কার্যকর হয়, তবে রাশিয়ার ভবিষ্যত আগ্রাসন দমন করতে হবে। ওদিকে শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া পোস্টে জেলেনস্কি রাশিয়াকে প্রভাবিত করতে পারেন এমন যে কাউকে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রকে, শক্তিশালী পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান। কারণ, পুতিন তার নিজে থেকে কখনোই যুদ্ধ বন্ধ করবে না। তিনি বলেন, পুতিন যুদ্ধক্ষেত্রে প্রকৃত অবস্থা, হতাহতের বিষয়ে মিথ্যা বলছেন। তার দেশের সত্যিকার অর্থনীতি সম্পর্কে মিথ্যা বলছেন। কূটনীতিকে ব্যর্থ করার জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করছেন পুতিন।  কিন্তু আশাবাদী হোয়াইট হাউস। তারা বলেছে, উভয় পক্ষ শান্তির জন্য এত কাছাকাছি কখনোই আসেনি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেন, বৃহস্পতিবার মস্কোতে পুতিন এবং উইটকফের মধ্যকার আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পুতিন ও রাশিয়ানদের সঠিক কাজটি করার জন্য অব্যাহতভাবে চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুতিনকে ইউক্রেনের সেনাদের জীবন রক্ষা করার জন্য পুতিনের প্রতি দৃঢ় আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের ওইসব সেনাকে ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার সেনারা। সেখানে এমন এক ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ ঘটতে পারে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আর কখনো দেখা যায়নি। এর আগে বৃহস্পতিবার পুতিন বলেন, কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের সেনাদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। এরপরই ওই মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তবে শুক্রবার ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ এমন ঘটনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, এ খবর মিথ্যা ও বানোয়াট। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, অপারেশন চলমান। ইউক্রেনের সেনাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। সফলভাবে তাদেরকে পুনর্গঠিত করে প্রতিরোধ অবস্থানে পাঠানো হয়েছে। ফলে তাদেরকে ঘিরে রাখার কোনো ঘটনা নেই। তবে আন্তর্জাতিক আইন এবং রাশিয়া ফেডারেশনের আইনের অধীনে আটক সেনাদের সম্মানের সঙ্গে তাদের সঙ্গে আচরণ করতে পুতিনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ট্রাম্প। বলেছেন, যদি তারা অস্ত্র সমর্পণ করেন এবং আত্মসমর্পণ করেন তাহলে তাদেরকে সুরক্ষা দিতে হবে।

অন্যদিকে কানাডার কুইবেকে বৈঠক করছিলেন জি৭ নেতারা। সেখানে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি বলেন, ইউক্রেনিয়ানদের প্রতি সমর্থন আছে এমন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত তাদের সব সদস্য। বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, শর্তহীন একটি যুদ্ধবিরতির আহ্বানে সকল সদস্য ঐকবদ্ধ।

 

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status