ঢাকা, ২১ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

ডিআরইউ-এর ইফতার মাহফিলে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ

অপকর্মের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার
১৫ মার্চ ২০২৫, শনিবার
mzamin

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে ইফতার মাহফিল করেছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। শুক্রবার ডিআরইউ চত্বরে সংগঠনের সদস্যদের সম্মানে এই ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে নারী নির্যাতন-নিপীড়নসহ বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। একই সঙ্গে সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলার জন্যও আহ্বান জানিয়েছেন তারা। এ ছাড়া সাংবাদিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানান। এদিন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ইফতার মাহফিলে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমি বলতে চাই, উন্নয়নের যেটুকু সম্ভাবনা ছিল, অতীতে দেশ যারা পরিচালনা করেছেন, তারাই সম্ভাবনাটাকে কাজে লাগাতে পারেননি। রাজনীতির স্লোগানটা যদি সত্যিই এমন হয়ে থাকে যে আমার চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়, তাহলে দেশটাই বড় করে দেখার কথা ছিল! কিন্তু বাস্তবে রাজনীতিবিদরা তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ওটার পরিমাণ তুলে ধরতে পারেন নি।
সাংবাদিকরা সমাজের চতুর্থ স্তম্ভ উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বচ্ছতার যদি ঘাটতি হয়, এই সমাজ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে সামনের দিকে যায়, হামাগুড়ি দিয়ে যায়। দৌড়ে সামনের দিকে, তার গন্তব্যের দিকে যেতে পারে। বাংলাদেশের অবস্থা বাস্তবে এটিই হয়েছে। এ অবস্থায় রাজনীতিবিদদের অবশ্যই আত্মসমালোচনা প্রয়োজন। তার পাশাপাশি গণমাধ্যমে যারা আছেন তাদের বুক টান করে দাঁড়ানো দরকার। আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে আপনাদের (সাংবাদিক)কে ওয়েলকাম করি যে, আপনারা আমাদের সমালোচনা করবেন। আমাদের প্রশংসা করবেন কিনা। এইটা আপনাদের ব্যাপার। কিন্তু সমালোচনা করতে ভুলে যাবেন না। সমালোচনা আপনার ভাষায় করুন। আপনি যে ভাষাটা পছন্দ করেন, আপনার কৌশলে আপনি করুন, যে কৌশল আপনি নিজের জন্য, আপনার গণমাধ্যমের জন্য উপকারী মনে করেন। আর আপনারা সাদাকে সাদা বলার আর কালোকে কালো বলার যে পবিত্র দায়িত্ব নিয়ে এই অঙ্গনে এসেছেন, মেহেরবানী করে সেটা রক্ষা করবেন। মাগুরার শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে শফিকুর রহমান বলেন, আছিয়া বৃহস্পতিবার সবাইকে কাঁদিয়ে দিয়ে চলে গেল। আব্বাস (মির্জা আব্বাস) ভাই বলেছেন, এরকম আরও বহু হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। আমি ব্যক্তি হিসেবে দেখেছি, পড়েছি, জেনেছি এবং বুঝেছি- চেষ্টা করেছি সবগুলো না
হলেও কিছু কিছু কিন্তু আমার মনে হয়েছে এরকম নৃশংস পাশবিক ঘটনা সম্ভবত আমার মেমোরিতে আর আসে নাই। আছিয়াকে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতের একটা পাখি হিসেবে কবুল করুন এবং তার আপনজনকে আল্লাহ তায়ালা প্রশান্তি দান করুন। এই ঘটনায় সারা দেশ কষ্ট পেয়েছে, সারা দেশবাসীকে এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে এইদিনে এধরনের অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। জামায়াতের আমীর বলেন, রাজনীতি থেকে দেশ বড় হলেও রাজনীতিবিদরা তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করতে বাধা নেই। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে দেশের স্বার্থ। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, দেশের ভালোমন্দ রাজনীতিবিদরা ২৫ ভাগ বহন করে, আমি এটা মনে করি। আর ৫০ ভাগ বহন করে সাংবাদিকরা। সুতরাং আপনারা যদি সঠিক কথা বলেন তাহলে দেশ অনেক এগিয়ে যাবে। সাংবাদিকরা কেন লিখে না যে, অমুক অমুক ব্যবসায়ীর সঙ্গে অমুক অমুক রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক রয়ে গেছে, আছে। কখনো ১৫ শ’ কোটি টাকা, কখনো ১০০ কোটি কেন শুনি আমরা? কেন আপনারা এগুলো লেখেন না। সাগর-রুনি হত্যা মামলার চার্জশিট ১১৬ বার পেছানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা কয়বার এই নিউজ লেখেছেন? শুধুমাত্র যখন চার্জশিট পেছানো তখন ছোট করে নিউজ লেখে দেন! এই যে আছিয়া পুরো দেশটা কাঁদিয়ে বৃহস্পতিবার চলে গেল, আমি তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আছিয়ার সম্পর্কে আপনারা লেখেছেন। খুব ভালো। কিন্তু এরকম আছিয়া কি আর বাংলাদেশে নাই কিংবা এই আছিয়ার চেয়ে করুণ আর কোনো ঘটনা বাংলাদেশে নাই? এই দেশে কি তনু হত্যা হয় নাই, এদেশে মুনিয়া ধর্ষণ হয় নাই এবং এদেশে আরও নারী ধর্ষণ হয় নাই? আপনারা কেন লেখেন না। আপনা বলতে পারবেন, বলতে পারবেন না। কারণ আপনাদের সাংবাদিকদের অনেকেই জায়গা মতো বসে আছে। ওখান থেকে অনেকেই অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, সুতরাং লেখা হয় না। লেখা হবে না!
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের মাহী বি. চৌধুরী, ডিআরইউ সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা ও ডিআরইউ সহ-সভাপতি ও ইফতার কমিটির আহ্বায়ক গাযী আনোয়ারসহ সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা। এই আয়োজনে ডিআরইউ সাবেক সভাপতি শাহজাহান সরদার, ইলিয়াস হোসেন, সাইফুল ইসলাম, সৈয়দ শুকুর আলী শুভ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, মনির হোসেন লিটন, কবির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও ডিইউজে সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, ডিআরইউ যুগ্ম সম্পাদক নাদিয়া শারমিন, অর্থ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাই তুহিন, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, নারী বিষয়ক সম্পাদক রোজিনা রোজী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিজান চৌধুরী, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মো. বোরহান উদ্দীন, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান, আপ্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ ছলিম উল্লাহ (মেজবাহ), কল্যাণ সম্পাদক রফিক মৃধা, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. জুনায়েদ হোসাইন (জুনায়েদ শিশির), আকতারুজ্জমান, আমিনুল হক ভূঁইয়া, মো. ফারুক আলম, সুমন চৌধুরী ও মো. সলিম উল্ল্যা (এস. ইউ সেলিম) সহ ডিআরইউ সদস্যরা এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status