দেশ বিদেশ
চবিতে আবারো নিয়োগ কেলেঙ্কারি ফাঁস
‘তুমি আমারে চিনো? একদম খাইয়া ফেলবো?’
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
৭ আগস্ট ২০২২, রবিবার
‘তুমি আমারে চিনো? একদম খাইয়া ফেলবো? একদম পেটের মধ্যে মোচড় দিয়া খাইয়া ফেলবো তোরে। পার্সোনাল বিহেবিহার ঠিক করতে না পারলে খাইয়া ফেলবো একদম।’ রাকিব ফরাজি নামে এক ব্যক্তিকে ফোনে এভাবে হুমকি দেন মানিক চন্দ্র দাশ নামে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী। রাকিব ফরাজি বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির চাকরি পেতে মানিক চন্দ্র দাশকে আরও ২ জনেরসহ মোট ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছিল। কিন্তু টাকা নেয়ার পরও তাদের চাকরি দিতে পারেনি নিজেকে সেকশান অফিসার বলে পরিচয় দেয়া চতুর্থ শ্রেণির এই কর্মচারী। এনিয়ে তাদের একটা অডিও ফোনালাপ ফাঁস হয়। রাকিব-মানিকের সেই ফোনালাপের এক অংশে মানিক বলেন, ‘তুমি আমারে চিনো? একদম খাইয়া ফেলবো, একদম পেটের মধ্যে মোচড় দিয়া খাইয়া ফেলবো তোরে। পার্সোনাল বিহেবিহার ঠিক করতে না পারলে খাইয়া ফেলবো একদম।’ উত্তরে রাকিব বলেন,‘আচ্ছা দেখা যাবে। যত টাকা নিছেন, সব টাকা এই মাসের মধ্যেই দিবেন।’ তখন মানিক বলেন, ‘এই বেটা কিসের টাকারে তোর, তুই জুলাইয়ের আগে এক টাকাও পাবি না। শোন তুই পরীক্ষা দিছোস তোর এপ্লিকেন্ট পরীক্ষা দেক, তখন যদি না হয় তুই ফুল টাকা পেয়ে যাবি একসাথে।’ তখন রাকিব বলেন, ‘এই মাসের মধ্যেই দিবেন।’ জানা গেছে, ২০২১ সালে ৩১শে মে ও ১লা জুন দুইটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানে নিম্নমান সহকারী ও অফিস সহকারী পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে মাদারীপুরের রাকিব ফরাজী, সোহেল খান ও মাকসুদুল সালেহীন নামে ৩ প্রার্থীর কাছ থেকে ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা নেয় মানিক। টাকা লেনদেনের ব্যাংক স্লিপে দেখা যায়, ২০২১ সালের ৫ই জুন ৫০ হাজার টাকা, ১১ই জুলাই ৩৫ হাজার টাকা, ১৫ই জুন ৫০ হাজার টাকা ও ৩রা মে আরও ৫০ হাজার টাকা প্রার্থীদের কাছ থেকে নেন মানিক। মানিকের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট-এর মাধ্যমে এই টাকাগুলো নেয়া হয়। এদিকে চাকরি না পেয়ে প্রতারণার অভিযোগে ও টাকা ফেরত চেয়ে গত ২৫শে জুলাই মানিককে লিগ্যাল নোটিশ পাঠায় চাকরি প্রার্থী রাকিব ফরাজি। এ ছাড়া এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গতকাল বিকালে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ‘ নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে একটি অডিও আমাদের কাছে এসেছে। ইতিমধ্যে আমরা একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। এই বিষয়ে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। উল্লেখ্য, গত ৩রা মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত কয়েকটি অডিও ফোনালাপ ফাঁস হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পিএস মিসবাহুল মোকর রবীনকে পদাবনতি ও কর্মচারী আহমেদ হোসেনকে চাকরিচ্যুত করা হয়।