দেশ বিদেশ
আক্তারুজ্জামানের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
স্টাফ রিপোর্টার
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, সোমবার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার অন্যতম আসামি, অনলাইন গ্রুপের এমডি এবং ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খান মো. আক্তারুজ্জামানের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন পালিত হয়েছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর ইসিবি চত্বরে এই মানববন্ধন করেন মানিকদী, মাটিকাটা, ভাষানটেক এলাকার ভুক্তভোগীরা। শত শত ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগ দেন নানা বয়সের শিক্ষার্থী, মানবাধিকার কর্মী ও সচেতন নাগরিকরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, ইসিবি চত্বর, মাটিকাটা, ভাষানটেকসহ আশপাশের এলাকায় এক ভয়ঙ্কর শক্তিতে পরিণত হন খান মো. আক্তারুজ্জামান। তার নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের জমি-বাড়ি দখল, ব্যাংক থেকে অর্থ লুটপাট ও বিদেশে পাচার, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি এবং খুন-গুমের মতো অপরাধ সংঘটিত করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে আক্তারুজ্জামান এবং তার বাহিনী ইসিবি চত্বর, মাটিকাটা ও ভাষানটেক এলাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে আহত করে এবং হয়রানি করতে ৫ই আগস্টের পূর্বে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন মিরপুর ১৪ নম্বরে বিজয় মিছিলরত ছাত্র-জনতার ওপর নির্মমভাবে গুলি চালানো হয়, যেখানে মো. ফজলু নামে এক ব্যক্তি নিহত হন এবং বহু মানুষ আহত হন। নিহত ফজলুর ভাই ১১ই আগস্ট ভাষানটেক থানায় হত্যা মামলা করেন, যেখানে আক্তারুজ্জামান ২২ নম্বর আসামি। ছাত্র-জনতাকে হত্যার অভিযোগে ঢাকার ভাষানটেক ও বনানী থানায় দুটি হত্যা মামলা রয়েছে। এ ছাড়া, ক্যান্টনমেন্ট থানায় ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছোড়ার অভিযোগে আরও একটি মামলা রয়েছে। গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে র্যাব ও পুলিশের যৌথ বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি ডিবি হেফাজতে রয়েছেন। বিগত সময়ে ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছেন। তার অবৈধভাবে জমি ও সম্পত্তি দখল, সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতিপক্ষকে দমন করার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তদন্ত চলমান রয়েছে।
আয়োজিত মানববন্ধনে যোগ দিয়ে বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার সরোয়ার হোসেন, মাওলানা মোশারফ হোসেন, মানবাধিকার কর্মী শফিকুল ইসলাম এবং ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে তাসনুভা স্বপ্না বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু থাকলে ভবিষ্যতেও এ ধরনের অপরাধ ঘটতে থাকবে। তাই এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের সম্পত্তি দখল করতে না পারে। একইসঙ্গে যতদিন না পর্যন্ত আক্তারুজ্জামানের দখলকৃত সম্পত্তি প্রকৃত মালিকদের ফেরত না দেয়া হবে ও দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত না করা হবে, ততদিন আন্দোলন চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।