দেশ বিদেশ
চট্টগ্রামের সাবেক এমপি ফজলে করিমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
স্টাফ রিপোর্টার
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, সোমবারবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৬ই জুলাই শহীদ ওয়াসিম ও শহীদ ফয়সাল হত্যা মামলায় চট্টগ্রামের সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রোববার বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। আসামির বিরুদ্ধে আগামী ৮ই এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলেছে ট্রাইব্যুনাল। গতকাল তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট আবেদনের ওপর শুনানি করে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান। শুনানি শেষে এ নির্দেশনা দেয় ট্রাইব্যুনাল। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন, বি এম সুলতান মাহমুদ, মো. সাইমুম রেজা তালুকদার প্রমুখ। শুনানিতে ফজলে করিম চৌধুরীর আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এম আবদুল কাইয়ুম। তিনি বলেন, তার মক্কেল ট্রাইব্যুনালের সঙ্গে কথা বলতে চান। ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। এ সময় ফজলে করিম ট্রাইব্যুনালকে জানান, তিনি শহরে রাজনীতি করতেন না। জুলাই আগস্টের গণহত্যায় তিনি জড়িত নয়। তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, এখন এসব কথা শোনার সময় না। আপনার পক্ষের আইনজীবী এসব অভিযোগ খণ্ডন করতে পারবেন। এ ছাড়াও তিনি যদি অপরাধী না হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে তিনি ন্যায়বিচার পাবেন বলে জানায় আদালত। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ুম প্রাথমিক অভিযোগপত্র চান এবং তা সরবরাহ করার জন্য প্রসিকিউশনকে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি আসামির সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের দেখা করার অনুমতিও দেয়া হয়।
শুনানি শেষে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম সাংবাদিকদের বলেন, ফজলে করিমের বিরুদ্ধে জুলাই মাসের এক তারিখ থেকে শুরু করে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতাকে হত্যা, আহতসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তদন্ত সংস্থার কাছে প্রথমিক তদন্তে সত্যতা প্রতীয়মান হয়েছে। আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অভিযুক্ত এই আসামি ছাত্রদের বিরুদ্ধে ইন্ধন যুগিয়েছে। চট্টগ্রামের আন্দোলন দমনে ফজলে করিমের নিজস্ব সংসদীয় এলাকা রাউজান থেকে অস্ত্র ও সন্ত্রাসী বাহিনী সরবরাহ করেছে। তিনি আরও বলেন, ফজলে করিম একাধিক মামলায় কারাগারে ছিলেন। ফলে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট মূলে তাকে এখানে হাজির করা হয়েছে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে যথা সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে বলেও জানান তামিম। জানা যায়, ফজলে করিমের বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে হত্যার নির্দেশসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে রয়েছে। গত ১২ই সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ৫ই ফেব্রুয়ারি তাকে ট্রাইব্যুনালে আনা হলে, বিচারপতি গোলাম মুর্তজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল ফজলে করিমকে ১৬ই ফেব্রুয়ারি হাজির করার নির্দেশ দেয়। তারই প্রেক্ষিতে গতকাল তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। চট্টগ্রাম-৬ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি ও অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে ১০টিরও বেশি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।