রাজনীতি
আশঙ্কা মির্জা ফখরুলের
দ্রুত নির্বাচন না হলে অন্যান্য শক্তির উত্থান হতে পারে
স্টাফ রিপোর্টার
(৩ সপ্তাহ আগে) ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৪:০৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০০ পূর্বাহ্ন

দ্রুত নির্বাচন না হলে অন্যান্য শক্তির উত্থান হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে শহীদ আসাদ পরিষদের উদ্যোগে ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের নায়ক শহীদ আসাদের ৫৬তম মৃত্যুবার্ষিকী’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একটা কথা আমি বলি, যে কথা বললে পরে আমার সমালোচনাও হয়। আমি বলি যে, নির্বাচনটা দ্রুত হওয়া দরকার। কেন বলি, এই কথাটা আমি বারবার বলার চেষ্টা করেছি। আমরা বিশ্বাস করি যে, নির্বাচন থেকে আমরা ১৫ বছর বঞ্চিত, এই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করার একটা সুযোগ পাবে।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখছেন যে, জোর করে সেই বিষয়টাকে যদি বিতর্কিত করে ফেলা হয় তাহলে তো জনগণ আবার সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। আমাদের যে অভিজ্ঞতা, সেই অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যে, এই ধরনের নির্বাচন যদি দ্রুত না হয়, সময়ক্ষেপণ করা হয়, তাহলে অন্যান্য শক্তিগুলো মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে থাকে। তখন জনগণের যে চাহিদা, সেই চাহিদা থেকে তারা পুরোপুরিভাবেই বঞ্চিত হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এ কথাটা বার বার বলতে চাই, নির্বাচনে কে আসবে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, কিন্তু জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সেটার জন্য আমরা লড়াই করেছি দীর্ঘ ১৫ বছর। আমি সেই কারণে বলেছি যে, আমাদের দরকার সত্যিকার অর্থেই বর্তমান যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আছে, সেই সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। স্বাভাবিকভাবে একটা ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের পরেই জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এখন পর্যন্ত সমাজের যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, সেই অবস্থায় কিন্তু আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না যে, সেখানে দেশের মানুষের প্রত্যাশাগুলো পূরণ হবে।’
নির্বাচনে জন্য কত অপেক্ষা এমন প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন রকম প্রোগ্রাম আছে, সেই কর্মসূচি নিয়ে তারা এগোতে চায়। তবে একটা বিষয় সবাই একমত- একটা নির্বাচন হওয়া দরকার। নির্বাচনটা শুধু একটা দলকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যাওয়ার জন্য একটা পথ সৃষ্টি করা, একটা দরজা খোলা। আজকে প্রশ্ন উঠছে যে, সংস্কার সবগুলো করে নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্ন। তাহলে কি আমরা ৪-৫ বছর ধরে অপেক্ষা করব বা যতদিন সংস্কার সম্পন্ন না হয় ততদিন ধরে অপেক্ষা করবে জনগণ? তারা তাদের ভোটের অধিকার থেকে তো বঞ্চিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো দেখছি, আমাদের আমলাতন্ত্র আগের যে ব্যবস্থা ছিলো, সেই ব্যবস্থায় তারা এখনো সচিবালয় থেকে শুরু করে সমস্ত প্রশাসনে একইভাবে তাদের ভূমিকা পালন করছে, কোনো রদবদল হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। স্কুল-কলেজগুলোতে সেই ধরনের লেখাপড়া হয় না। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। এটা অতীত থেকেই এসেছে এবং সেই পরিবর্তন এতো অল্প সময়ের সম্ভবও নয়। কিন্তু আমরা সেই পরিবর্তনগুলো চাই। সেই কারণে আমরা বলেছি যে, নির্বাচনটা দ্রুত হওয়া দরকার।’
ফখরুল বলেন, আমি এ কথা বুধবারও বলেছি, আমাকে একজন সাংবাদিক ভাই এ নিয়ে প্রশ্ন করেছেন যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি নিরপেক্ষ না থাকে তাহলে একটা নিরপেক্ষ সরকার দরকার হবে নির্বাচনের সময়ে। আমি কথাটা বলছি যে, এর কারণ আছে। কারণ হচ্ছে যে, আমরা দেখছি যে, বেশ কিছু বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিরপেক্ষতা পালন করতে পারছেন না। আমি অনুরোধ করব, আমি প্রত্যাশা করব, আমি আশা করি যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের সেই নিরপেক্ষতা পালন করবে এবং দেশে যে সংকট আছে সেই সংকট থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য তারা কাজ করবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের এই ন্যূনতম যে সংস্কার হচ্ছে নির্বাচনকেন্দ্রিক, সেই সংস্কার শেষ করে আমাদের অতি দ্রুত নির্বাচনের পথে যাওয়া উচিত। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে সরকার বেরিয়ে আসবে তাদের দায়িত্ব হবে এখানে পুরোপুরিভাবে সেই সংস্কারের যে কমিটমেন্ট আছে, সেই কমিটমেন্টগুলো বাস্তবায়িত করা, জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করা। আসাদের রক্ত, আবু সাইদের রক্তকে আমরা বৃথা যেতে দিতে পারি না। সেই জন্য আমাদের সকল ঐক্য গড়ে তুলে তাদের (শহীদদের) স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হবে। এই হোক আজকের প্রতিজ্ঞা।’
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ‘র সভাপতিত্বে ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজুর সঞ্চালনায় সভায় বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জহির উদ্দিন স্বপন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, অপর অংশের সাধারণ সম্পাদক আসাদুর রহমান খান আসাদ, শহীদ আসাদের ছোট ভাই আজিজুল্লাহ এম নুরুজ্জামান নূর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
পাঠকের মতামত
এত তাড়াহুড়ো কেন, দূনীতির অভীযোগে কয় জন রাজনৈতিক নেতার বিচার হয়েছে অতীতে? নিজ দলের অনেক কর্মি হত্যার শিখার হয়েছিল করতে পারছিলেন বিচার, আতাতের রাজনীতি বাদ দেন সৈরাচার নিষিদ্ধের চিন্তা করেন মানুষ আপনাদের নিয়ে ভাববে।
সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। যা পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে কিয়ামত পর্যন্ত চলবে। তাই বিলম্ব নির্বাচনে দেশের ঐক্য ও নব বাক-স্বাধীনতাকে বিনষ্ট না করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনগনের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। এতে আপনারা ইতিহাসের উদাহরণ হয়ে থাকবেন।
মানুষ আশা করে রাষ্ট্র কাঠামো আগে সংস্কার তারপর নির্বাচন অথচ তারা ক্ষুধায় অস্থির!!! আহারে বিএনপি??? হাসিনার আমলেই ভালো ছিলো বিএনপি!! পুলিশের মাইর আর জেল মামলায় বন্দী।
দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নে নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই।
এই লোকটার চেহারা দেখলেই এখন ঘিনঘিন করে।
ভোট দেওয়ার খিদে নিয়ে জনগণ নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে নাই। বাংলাদেশের ৯৫% মানুষ চাই দেশের সংস্কার এবং সেটা ড. মোহাম্মদ ইউনুস সরকারের হাত ধরে হোক। আর দেশের সংস্কার ঠিকঠাক ভাবেই হচ্ছে। দেশের জনগণ সন্তুষ্ট আছে। দেশের জনগণ এই সরকারকে অন্তত ৫বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই। তাই জনগণের কথা বলে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করবেন না।
You are releasing trump cards?what more trump cards you have??