ঢাকা, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯ রজব ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

জুলাই ঘোষণাপত্র সরকার দেবে না ফ্যাসিলিটেট করবে

স্টাফ রিপোর্টার
১০ জানুয়ারি ২০২৫, শুক্রবারmzamin

জুলাই প্রোক্লেমেশন সরকার দেবে না। এর প্রক্রিয়াকে ফ্যাসিলেটেড করবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান। বলেন, আমরা গভর্মেন্ট নিজে বানিয়ে কোনো ঘোষণাপত্র দিচ্ছি না। ঘোষণাপত্র আসবে সব রাজনৈতিক পক্ষ এবং সাংস্কৃতিক-সামাজিক সংগঠনের ঐকমত্যের ভিত্তিতে। শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবনাটি সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রণীত এবং ঘোষিত হবে। 
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম, ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর। 

মাহফুজ আলম বলেন, সরকার অনুভব করলেন যে, এই বিষয়টা যদি শুধুমাত্র ছাত্রদের দিক থেকে যায় তাহলে সেটা বাংলাদেশের ইউনিটির স্ট্যাবিলিটির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সরকার দায়িত্ব নিয়েছে সবগুলো পক্ষের সঙ্গে মিলে একটি ডকুমেন্ট রেডি করবেন। গণ-অভ্যুত্থানের যতগুলো পক্ষ আছে সরকার সবার সঙ্গে কথা বলে আগামী সপ্তাহের মধ্যে কবে এবং কীভাবে এই ঘোষণাপত্র প্রকাশিত হবে তা জানাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি ১৫ই জানুয়ারি ছিল। কিন্তু সরকার যেহেতু সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলবে। কিছু সময় লাগতে পারে কিন্তু এটা খুব বেশি দেরি হবে না। কয়েকদিনের মধ্যেই এটা হয়ে যাবে। আমার মনে হয়, শিক্ষার্থীরা এখানে ধৈর্য ধারণ করবে। এটা সর্বসম্মতিক্রমে হলে সবার জন্য ভালো হবে। আমরা ইনফরমালি ৩১শে ডিসেম্বর থেকে অনেকের সঙ্গে কথা বলছি। ফরমালি আগামী সপ্তাহ থেকে কথা বলবো। 

আরেক প্রশ্নের জবাবে মাহফুজ বলেন, একটা প্রোক্লেমেশনের দুইটা পার্ট থাকে। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের ঐকমত্য আছে যে, শেখ হাসিনার ফ্যাসিজম। এই ফ্যাসিজমের ধারাবাহিকতা আমরা হিস্টোরিক্যালি বর্ণনা করবো। দ্বিতীয় পার্টে আছে যে, আমরা কী চাই? এই গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী সরকারের রাষ্ট্র কীভাবে পরিচালিত হবে? এসব বিষয় নিয়ে হয়তো বিতর্ক থাকতে পারে। অথবা আরও বেশি কনসাল্টেশন হতে পারে। মূলত গত ১৬ বছরে গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে যারা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন সবার ভূমিকা এখানে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আমরা চাচ্ছি একটা ইনক্লুসিভ ইউনিফাইড ডকুমেন্ট। 

তিনি বলেন, ৫ই আগস্টের পর থেকে বিভিন্ন মাজারে হামলা হয়েছে। হামলার ব্যাপারে স্পষ্ট পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হয়নি, এজন্য আমরা দুঃখিত। এ ব্যাপারে শক্ত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ময়মনসিংহে রাতে যে ঘটনা ঘটেছে সেই বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। ৫ই আগস্টের পরে যা ঘটেছে সবগুলোর তথ্য আমরা সংগ্রহ করেছি। যারা এখানে বিক্ষুব্ধ আছেন তারা মামলা করেন, আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নেবো। 

সংবিধান প্রশ্নে মাহফুজ বলেন, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটা প্রস্তাবনা আছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর দিক থেকে হয়তো এটার বিরোধিতা আছে। আলোচনা করে আমরা ঐকমত্যের ভিত্তিতে এটা লিপিবদ্ধ করবো। 

জাতীয় এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রশাসক দিয়ে আমরা জনগণের কাছে সেবা পৌঁছাতে পারবো কিনা-এই বিষয়ে আমাদের যেহেতু সংশয় তৈরি হয়েছে। সিটি করপোরেশন এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের দিকে তাকালে দেখা যাবে, অনেক সরকারি সেবা জনগণ নিয়মিত পাচ্ছে না। এটা একটা প্রস্তাবনা আকারে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন- লোকাল গর্ভমেন্ট নির্বাচন যদি হয় তাহলে সেবাপ্রাপ্তির সুযোগ তৈরি হবে। আমি মনে করি, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে এটা নিয়ে আমরা অগ্রসর হতে পারবো। তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচন মূলত সংস্কার সাপেক্ষ। যার কারণে ৬টি কমিশন গঠন হয়েছিল। এই কমিশনগুলো যে প্রস্তাবনা দেবে তা ইলেকশনকেন্দ্রিক। কমিশনগুলো প্রস্তাবনা দিলে রাজনৈতিক দল এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আমরা একটা কনসাল্টেশনে যাবো। রাজনৈতিক দলগুলো ঠিক করবে যে কতোটা সংস্কার আমরা করতে চাই। এরপর সংস্কারের মেয়াদ অথবা পরিধির ভিত্তিতে নির্বাচনের ডেট ঠিক হবে। 

শফিকুল আলম বলেন, কেবিনেট মিটিংয়ে বলা হয়েছে, আগামী মাসের মধ্যে সবাই পাঠ্যপুস্তক হাতে পাবে। অনেকে অপপ্রচার চালাচ্ছে যে, আগের সরকারের সময় উনারা পাঠ্যপুস্তক উৎসব করতেন। দেখাতে চাইতেন যে, সবাই জানুয়ারির ১ তারিখে বই পাচ্ছে। আমরা তথ্য পেয়েছি, ২০১০ সালের পর থেকে পাঠ্যপুস্তক ফুল ডিস্ট্রিবিউশন হতে মার্চ এবং কোনো সময় জুলাই মাস পর্যন্ত হয়ে গেছে। তিনি বলেন, এই বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে। যারা যারা পেপার উৎপাদন করে তাদের সঙ্গেও এই সরকার বসেছে যাতে এগুলো দ্রুত করা যায়। তিনি জানান, ২০২২ সালে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহের সর্বশেষ তারিখ ছিল ২৪শে মার্চ, ২০২৩ সালে ১৭ই মার্চ এবং ২০২৪ সালে ছিল ২৭শে ফেব্রুয়ারি। 

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি আরও বলেন, চট্টগ্রামে প্রতিবছর বর্ষায় যে জলাবদ্ধতা হয়, এটা কতো দ্রুত নিঃসরণ করা যায় সে ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন। আপনারা জানেন, নগরবাসীকে ট্রাফিক খুব ভোগাচ্ছে। সেটা কীভাবে দ্রুত সমাধান করা যায় সে বিষয়ে বড় পরিসরে আলোচনা হয়েছে। আপনারা এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ দেখবেন।

পাঠকের মতামত

বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ করে নোয়াখালী কুমিল্লার

মীর দুলাল হোসেন
১০ জানুয়ারি ২০২৫, শুক্রবার, ৪:৫৯ অপরাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status