প্রথম পাতা
ভয়াবহ ভূমিকম্পে তিব্বতে নিহত ৯৫, ধ্বংসস্তূপ নেপাল
মানবজমিন ডেস্ক
৮ জানুয়ারি ২০২৫, বুধবারশক্তিশালী ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপ তিব্বত। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে প্রতিবেশী নেপালে। ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে পার্শ্ববর্তী ভুটান ও
ভারতে। মঙ্গলবার হিমালয়ের পাদদেশে উত্তরাঞ্চলে তিব্বতের একটি পবিত্র শহরে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৫ মিনিটে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভিসের মতে এই কম্পন ৭.১। চায়না আর্থকোয়াক নেটওয়ার্ক সেন্টারের তথ্যমতে এর উৎস হিমালয় অঞ্চলে প্রবেশের উত্তরাঞ্চলীয় প্রবেশদ্বার তিঙরি’তে। চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ঘটনার ৬ ঘন্টা পরে জানিয়েছে তিব্বতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৯৫ জন। আহত হয়েছেন ১৩০ জন। উদ্ধার অভিযান চলছিল। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আর কোথাও নিহতের খবর পাওয়া যায়নি। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপের তথ্য অনুসারে তিব্বতের শহর শিগাতসে আঘাত হানা ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। ভূমিকম্পের পর সেখানে বেশ কয়েকটি আফটার শকও অনুভূত হয়েছে। প্রধান ভূতাত্ত্বিক ফল্ট লাইনে অবস্থিত হওয়ায় ওই অঞ্চলে প্রায়শই ভূমিকম্প হয়। তিব্বতের অন্যতম পবিত্র নগরী হিসেবে বিবেচিত হয় শিগাতসে। এটি পঞ্চেন লামার ঐতিহ্যবাহী বাসস্থান। এই ব্যক্তি বৌদ্ধধর্মের একজন গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগুরু। দালাই লামার পরেই তার অবস্থান। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে ভূমিকম্পে প্রায় এক হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে ভবন ধসে পড়ার দৃশ্য দেখা গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে চীনা বিমান বাহিনী। এ লক্ষ্যে তারা সেখানে ড্রোন পাঠিয়েছে। যে অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়েছে সেখানকার তাপমাত্রা হিমাঙ্কের অনেক নিচে। ইতিমধ্যেই ওই অঞ্চলের বিদ্যুৎ ও পানি উভয়ই বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের জন্য সর্বাত্মক অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। নেপালের এভারেস্টের কাছে অবস্থিত নামচে অঞ্চলের স্থানীয় এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, নেপালে ভূমিকম্প অনুভূত হলেও কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বিবিসি বলছে, এখনো হতাহতের সঠিক সংখ্যা জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তবে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। প্রসঙ্গত, ভারতীয় এবং ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটের একটি প্রধান ফল্ট লাইনের কাছে অবস্থিত চীনের ওই অঞ্চলটি ঘন ঘন ভূমিকম্পের শিকার হয়। ২০১৫ সালে, নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর কাছে ৭.৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে প্রায় ৯ হাজার মানুষ নিহত এবং ২০ হাজারের বেশি আহত হন।
কাঁপলো বাংলাদেশ
চার দিনের ব্যবধানে ফের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে বাংলাদেশ। গতকাল সকাল ৭টা ৫ মিনিটে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে ৭.১ মাত্রার এই শক্তিশালী ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল চীনের তিব্বত অঞ্চলে। এটি বাংলাদেশ থেকে ৬১৮ কিলোমিটার দূরে হলেও রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে অনুভূত হয়। ভূমিকম্পটিতে দেশে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর না আসলেও চীনে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অসংখ্য। ধসে পড়েছে বহু বাড়িঘর।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা বলেন, ঢাকা থেকে ৬১৮ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে চীনের শিজাং অঞ্চলে (তিব্বত) এই ভূমিকম্প হয়। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুসারে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল চীনের জিজাং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে (তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল)। বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ৫ মিনিটের দিকে অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ১। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।
পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল, ভুটান ও ভারতেও ভূমিকম্পটির অনুভূতি হয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। এদিকে চীনে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযানে কাজ শুরু করেছে বিমান বাহিনী। সেখানে বেশ কিছু ড্রোনও মোতায়েন করা হয়েছে। ওই অঞ্চলে পানি এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এর আগে গত ৩রা জানুয়ারি রাজধানী ঢাকা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। অল্প সময়ের ব্যবধানে পরপর দুইবার ভূমিকম্প উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
পাঠকের মতামত
ভুমিকম্পপ্রবন এলাকা এখন বাংলাদেশ!১৬-বছরের স্বৈরশাসকের অবাধ লুন্ঠনে আমাদের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রস্তুতি কতটুকু,সন্দেহ জাগে।যত দ্রুত সম্ভব প্রস্তুতি রাখতে হবে।