দেশ বিদেশ
সাত মাস গুম ছিলাম
ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটরের সঙ্গে সাক্ষাৎ হুম্মাম কাদেরের
স্টাফ রিপোর্টার
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর এডভোকেট তাজুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। গতকাল দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসেন হুম্মাম কাদের চৌধুরী। কীভাবে গুমের বিষয়ে অভিযোগ করা যায়, সে ব্যপারে তথ্য জানতেই তিনি ট্রাইব্যুনালে এসেছিলেন। সাক্ষাৎ শেষে হুম্মাম কাদের চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনামলে আমি সাত মাস গুম ছিলাম। সে বিষয়ে কীভাবে অভিযোগ দেয়া যায়, তা নিয়ে কথা বলতেই ট্রাইব্যুনালে এসেছিলাম। গুমের বিষয়ে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিলের ইঙ্গিতও দেন তিনি। এ ছাড়া গত ১৬ই নভেম্বর আয়নাঘরের দিনগুলোর দুঃসহ স্মৃতি সামনে এনে হুম্মাম কাদের চৌধুরী গণমাধ্যমে বলেন, গুমের পুরো ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। একটা অপারেশন ছিল- আমি তো তখন জানতাম না। আমাকে প্রথম গায়েব করা হলো। আমার পরপরই জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ছেলে মীর আরমান এবং গোলাম আযমের ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আযমীকে গুম করা হলো। আমাদের সবার কানেকশন একটাই- আমাদের বাবারা সবাই সিনিয়র রাজনীতিবিদ ছিলেন এবং আমি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। আযমী ভাই সাবেক আর্মি সদস্য এবং আরমান রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। এ বিষয় নিয়ে আমরা কনফিউশনে ছিলাম যে আমাদের তিনজনকে কেন গুম করা হলো। এখন বুঝতে পারছি তারা চাচ্ছিল যে পরিবারের লিডারদের হত্যা করা হয়েছে, পরবর্তী প্রজন্ম যেন প্রতিবাদ করার সাহস না করে। তারা চাচ্ছিল পরিবারগুলোকে ধ্বংস করে দেয়া হোক। হুম্মাম কাদের তার বাবার বিরুদ্ধে পরিচালিত বিচার ও ফাঁসির রায় কার্যকর করার বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তার বাবার মরদেহ দাফন ও জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে তৎকালীন সরকারের নানা বাধার বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনার শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে দেয়া ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ওই বিচারের নিরপেক্ষতা নিয়ে বিচারের মুখোমুখি হওয়া ব্যক্তি ও তাদের স্বজনরা অনেক প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলেন। রাজনৈতিক হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতেই ওই বিচার পরিচালিত হয় বলে দাবি করে আসছিলেন তারা। গত ৩রা আগস্ট ২০১৬ সালে সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর মামলা সংক্রান্ত কাজে ঢাকার জজ কোর্টে যাওয়ার সময় গুম হন ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী। এরপর প্রায় সাত মাস ‘আয়নাঘরে’ বন্দি ছিলেন। এরপর ২০১৭ সালে ধানমণ্ডিতে তার বাসার কাছে সুলতানা কামাল মহিলা কমপ্লেক্সের পাশে তাকে রেখে যায় অপহরণকারীরা।