বাংলারজমিন
নোয়াখালীতে পর্নোগ্রাফি মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে ৬ মাসেও চার্জশিট হয়নি
স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী থেকে
২ নভেম্বর ২০২৪, শনিবারনোয়াখালীতে পর্নোগ্রাফি মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে ৬ মাসেও চার্জশিট দাখিল হয়নি। গতকাল জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে প্রধান শিক্ষক আকুুতি জানিয়ে বলেন, আসামিরা পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে বাদী ও ভিকটিমকে সামাজিক ও ব্যক্তি মর্যাদাহানি ও ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করার মামলাকে আসামিরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিগত সরকারের রাজনৈতিক ও হয়রানিমূলক মামলা দেখিয়ে অব্যাহতি নেয়ার জোর পাঁয়তারা করছে। এতে জনমনে ক্ষোভ ও অসন্তোষ চলছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে এসে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার বাদীকে হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে ৬ আসামির বিরুদ্ধে। ৫ই মে সকালে সুধারাম মডেল থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা ওই মামলার বাদী হাতিয়ার ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন অর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আসামিরা জামিনে এসে আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে লাশ গুমের হুমকি দিচ্ছেন। এ বিষয়ে সুধারাম মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর ৮১৭) রুজু করা হয়েছে। আসামিরা হলেন- হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন (৫২), মধ্য রেহানিয়া আবদুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন তানভির (৩৫), ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জিন্নাত আরা বেগম (৩৫) ও হাসান উদ্দিন বিপ্লব (সাময়িক বরখাস্ত) এবং হাতিয়া উপজেলা এলজিইডি’র (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর) উপ-সহকারী প্রকৌশলী শরীফুল ইসলাম। এর আগে, এ আসামিরাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে গত ৫ই মে নোয়াখালীর সুধারাম (সদর) থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন, হাতিয়ার ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন অর রশিদ। এ মামলার প্রধান আসামি সদর উপজেলার মাইজভাণ্ডার শরীফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে বাদী মামুন অর রশিদের স্ত্রী নলুয়া রেহান আলী চৌধুরীহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকার মোবাইল থেকে ব্যক্তিগত আপত্তিকর ছবি হ্যাক করে ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবিসহ অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুধারাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিঠুন চন্দ্র শীল বলেন, এ মামলার প্রধান আসামি মো. আমজাদ হোসেনসহ ৬ আসামি জামিনে আছেন। তাদের ৪ জনের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত চলমান রয়েছে। এদিকে মোবাইল বন্ধ থাকায় মামলার বাদীকে হত্যা ও লাশ গুম করার হুমকির বিষয়ে আসামিদের কারওরই বক্তব্য নেয়া যায়নি। অপরদিকে উপ-সহকারী প্রকৌশলী শরীফুল ইসলামের ফোন সচল থাকলেও তাকে বারংবার ফোন দেয়ার পরও তিনি রিসিভ করেননি। সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জিডি ও মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে মানবজমিনকে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভিকটিম ডিসি ও এসপিকে অভিযোগে জানায় বহুল আলোচিত এ মামলার মূল হোতা জিন্নাত আরা বেগমের ব্যক্তিগত মোবাইল পুলিশ জব্দ না করে তার ছেলের মোবাইল জব্দ করে। এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবিগুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করার মূল হোতা শরিফুল ইসলামের মোবাইল এখনোও জব্দ করা হয়নি।