ঢাকা, ১০ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ২৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

প্রেসিডেন্টের অপসারণ

আমেরিকা-সেনাসদর বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তির সায় নেই

স্টাফ রিপোর্টার
৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবারmzamin

প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সাড়া মিলছে না। এ ইস্যুতে সেনা প্রশাসন থেকেও মতামত দেয়া হয়েছে। অপসারণ ইস্যুতে সায় নেই বন্ধুরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রেরও। এমন অবস্থায় প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করতে মাঠে নামা ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কী করবেন? 
সাহাবুদ্দিনের অপসারণ বা পদত্যাগের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে। ইতিমধ্যে প্রধান প্রধান দলগুলোর সঙ্গে তাদের বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। এসব বৈঠকে প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করার বিষয়ে নিজেদের মত তুলে ধরেছেন ছাত্রনেতারা। বিপরীতে বেশির ভাগ দল প্রেসিডেন্ট অপসারণের পর সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরির বিষয়টি সামনে এনেছে। এ ছাড়া অপসারণের পর বিকল্প কী হবে সেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি প্রেসিডেন্টকে অপসারণের বিপক্ষে। ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে সরাসরি সিদ্ধান্ত না জানিয়ে দলটির নেতারা দলীয় ফোরামের আলোচনার কথা বলেছিলেন। সর্বশেষ সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আলোচনায় এই ইস্যুটি ছিল। বৈঠক সূত্র দাবি করেছে, এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্টকে অপসারণে কোনো উদ্যোগ না নিতে স্থায়ী কমিটির নেতারা একমত হয়েছেন। নেতারা মনে করছেন, প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করলে সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হবে। এতে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। প্রেসিডেন্ট ইস্যুতে সরকারের কাছেও নানা পক্ষ থেকে বার্তা দেয়া হচ্ছে। এই মুহূর্তে ইস্যুটি নিয়ে না ভাবার পরামর্শ এসেছে এসব পক্ষ থেকে। বলা হচ্ছে, সরকারের সামনে অনেক কাজ। প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করার উদ্যোগ নেয়া হলে যে পরিস্থিতি তৈরি হবে সেটা সামাল দেয়ার জন্য সরকারকে সময় ব্যয় করতে হবে। এতে তাদের মূল কাজ ব্যাহত হতে পারে। 

যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভ গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সূত্রের দাবি সাক্ষাতে চলমান নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। প্রেসিডেন্ট ইস্যুটিও আলোচনায় এসেছিল। এ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের দূত তাদের নিজেদের অভিমত জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, নানা গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ সামনে নিয়ে সরকার এগোচ্ছে। এই মুহূর্তে নতুন ইস্যু সামনে আনলে জটিলতা তৈরি হতে পারে। 

সেনা প্রশাসনের তরফেও প্রধান উপদেষ্টাকে মতামত জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সফরের সময়ে সেনাসদরের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এ ইস্যুতে আলোচনা করেন বলে জানা গেছে। তারা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করলে সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হতে পারে। এর প্রেক্ষিতে পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নিতে পারে। এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হোক তা তারা চান না। 

রাজনৈতিক বিভিন্ন পক্ষ থেকেও প্রধান উপদেষ্টাকে মতামত জানানো হচ্ছে। ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে জোরালো দাবি তুলেছিলেন প্রেসিডেন্টকে অপসারণের বিষয়ে। ওই বৈঠকে ছাত্রনেতারা সরকারের দোসর দাবি করে মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণ করার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। নানামুখী চাপ থাকায় প্রফেসর ড. ইউনূস ওই বৈঠকে সরাসরি কোনো মত দেননি। বরং তিনি ছাত্রদের এ ইস্যুতে নমনীয় মনোভাব পোষণ করতে বলেন। অপসারণ ইস্যু নয়া সংকট বয়ে আনতে পারে- এটাও তাদের বলেছিলেন। 

বৈঠকে তিনি রাজনৈতিক ঐকমত্যের বিষয়টি সামনে আনেন। এজন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পরামর্শ দেন ছাত্রনেতাদের। ওই বৈঠকের পরই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য দলের সঙ্গে তাদের বৈঠক শেষ হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গে ছাত্রনেতারা বৈঠক করেন। ওই বৈঠক শেষে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী সাংবাদিকদের বলেন, তারা দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার শেষ পর্যায়ে এসেছেন। পুরো বিষয় নিয়ে তারা সরকারের কাছে সুপারিশ দেবেন। প্রেসিডেন্ট ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একটি কাউন্সিল গঠনের পরামর্শ দেয়ার কথাও জানান তিনি। নাগরিক কমিটির এ নেতার সর্বশেষ বক্তব্য থেকেও এ ইস্যুতে তাদের নমনীয়তার ইঙ্গিত মিলে। এর আগে তারা বলে আসছিলেন, যেকোনোভাবেই হোক প্রেসিডেন্টকে সরে যেতে হবে। 

দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় ছাত্রনেতাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্টকে অপসারণের বিষয়ে একমত প্রকাশ করা হলেও প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন রাখা হয়। এ ছাড়া তাকে সরালে বিকল্প কী হবে- এটা নিয়েও ভাবতে বলা হয়েছে। যেসব দলের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে এর মধ্যে বিএনপি এখনই প্রেসিডেন্টকে অপসারণে সায় দেয়নি। বিএনপি’র জোটসঙ্গী ১২ দলীয় জোটের নেতারাও একই মনোভাব পোষণ করেছেন। জামায়াতে ইসলামী ছাত্রদের দাবির পক্ষে মত দিলেও সরাসরি কোনো অবস্থান জানায়নি। ইসলামী আন্দোলন প্রেসিডেন্টকে অপসারণের পক্ষে বললেও প্রক্রিয়া নিয়ে কিছুই বলেনি। প্রেসিডেন্টকে অপসারণ ইস্যুতে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত বলে মত দেয় গণতন্ত্র মঞ্চ। তারা এও মনে করে, নৈতিক দায় থেকে প্রেসিডেন্টকে নিজে থেকে সরে যাওয়া উচিত ছিল। গণঅধিকার পরিষদের দুই পক্ষের সঙ্গেই আলোচনা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। বৈঠকে গণঅধিকারের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে রাজনৈতিক সংলাপ আহ্বানের পরামর্শ দেয়া হয়।

পাঠকের মতামত

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় একটি নুতন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গড়া অপরিহার্য ও দ্রুতই জরুরী।

Foyez
৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ৭:১০ অপরাহ্ন

এই মুহূর্তে চুপ্পর অপসারণের চেয়ে অনেক জরুরি কাজ পড়ে আছে। চুপ্পু কিছুই করতে পারবে না।

মুহাম্মদ ইসমাঈল বুখা
৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ১২:০৬ অপরাহ্ন

হাসিনাও সংবিধানের দোহাই দিত বিএনপিও এখন সংবিধানের দোহাই দেয়


৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন

লিখা পড়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম, যদি চুপ্পু আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের হুকুমে এখন স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করে, তবে বাংলাদেশ ধ্বংস হয়ে যাবে, বিএনপি, সেনাসদর সব ধ্বসে পড়ে যাবে। আল্লাহ্ চুপ্পুকে বাঁচান, আর এই বুদ্ধিমান জাতিকে রক্ষা করেন।

শামস
৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন

সময়ক্ষেপন করে বিষয়টি জটিল করে ফেলা হয়েছে। এটা প্রথম দিনই বা চুপ্পুর কাছে শপৎ না নিয়ে তাকে সরানো হলে ঠিক ছিল কিন্তু এখন সেই স্পিট নাই। সমাল দেয়া কঠিন হয়ে যেতে পারে। তবে বৃহৎ রাজনৈতিক ঐক্যই হয়তো এই চুপ্পুর অপসারন উতরানো যেতে পারে। সতস্ফুর্ত গন অভ্যুর্থানের মাষ্টার মাইন্ড খুজতে গিয়ে রাজনৈতিক ঐক্যের যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে তা সহজে পুরুন হবে না। আবার নতুন স্বৈরাচার খুজার যে পায়তারা এবং দুরভিসন্ধি রাজনৈতিক দুরাত্ব তৈরি করেছে সেটাও সহজে দুর হবে না। আখেরে আওয়ামী লীগকে লাভবান করবে। সুতরাং সাবধানে কাজ করতে হবে ভুল করা চলবে না।

sazidur
৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন

"প্রেসিডেন্টের অপসারণ, আমেরিকা- সেনাসদর বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তির সায় নেই" বিপ্লব বলে কয়ে আসেনা। আমেরিকা বা সেনাবাহিনী কি বলল না বলল কিচ্ছু যায় আসেনা। হাসিনা যেভাবে পালিয়েছে চুপ্পু সে ভাবে পালাতে হবেনা। কিন্ত তাকে যেতেই হবে এটাই বিপ্লব।

Faiz Ahmed
৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন

Just boycott Mr Chuppu. Never invite him any state function. And ensure that nobody can invite him anyway.

Jahir
৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ১০:০২ পূর্বাহ্ন

Boycott Indian products and dalal n dalal media

Md. Anisur Rahman
৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ৯:৩৫ পূর্বাহ্ন

বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তির, সেনাসদর আর আমেরিকার সাথে আলাপ করে তাদের অনুমোতি নিয়ে জুলাই বিপ্লব করা হয়নি। যদি জনগণ চায় চুপ্পু থাকবে না, তাহলে থাকবে না। খুনী হাসিনাও বলেছিল তার বিকল্প কে? বিকল্প ঠিকই চলে এসেছে। হাসিনা আরো বলেছিল সে না থাকলে শূন্যতা তৈরী হবে আর দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হবে। কোনটাই হয়নি। বিগত ফ্যাসিস্ট রিজিমের দোসর চুপ্পু গেলেও কোন ক্ষতি হবে না। তাকে যেতেই হবে।

বিসমিল্লাহ খান
৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ৯:০২ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশকে কে নিয়ন্ত্রণ করছে/ করতে চাইছে? সংবিধান তো মানুষের জন্য, "সাংবিধানিত বাধ্যবাধকতা" ছিলো হাসিনার প্রিয় বাক্য। মাসুদ (দেশ) তুমি কি কোনদিনই ভালো হবা না????

sm tanveer
৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ৮:৫৭ পূর্বাহ্ন

বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। প্রেসিডেন্টকে রাখাও নিরাপদ নয় আবার সরানোও ঝুঁকিপূর্ণ। তবে সবার ইস্পাত কঠিন ঐক্য হলে সবকিছুই সম্ভব। সবকিছুর আগে দেশের স্বার্থ এবং নিরাপত্তা বিবেচনা করতে হবে।

এম,এইচ, বারী
৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ৮:৩৯ পূর্বাহ্ন

ছাত্র জনতার এই প্রথম একটি আশা অপুর্ন রইল।

A R Sarker
৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ৭:০৪ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status