ঢাকা, ১৬ মার্চ ২০২৫, রবিবার, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ রমজান ১৪৪৬ হিঃ

শরীর ও মন

প্রবীণদের ফিজিওথেরাপি

ডা. মো. বখতিয়ার
১৫ অক্টোবর ২০২৪, মঙ্গলবার

বর্তমানে প্রবীণদের নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের একটি জরিপে দেখা যায় দেশে মানুষের গড় আয়ু বেড়ে ৭২ দশমিক ৬ বছর হয়েছে। ফলে দিন দিন প্রবীণদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবীণ সমাজ বা প্রবীণদের একটি বড় অংশ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, অস্টিওপোরসিস, আর্থ্রাইটিস ইত্যাদি জটিল রোগে ভোগেন। এসব নানা রোগের জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবনজনিত জটিলতাসহ (পলিফার্মাসি) প্রবীণেরা বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যায়ও ভুগছেন। সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাধ্যমে এসব অসুস্থতা ও প্রতিবন্ধকতা এড়ানো সম্ভব। প্রবীণদের নানা সমস্যায় চিকিৎসার পাশাপাশি সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে জীবনাচরণ পরিবর্তন আর ফিজিওথেরাপি। অস্টিওআর্থ্রাইটিস, ফ্রোজেন শোল্ডার, ফ্র্যাকচার ইত্যাদি প্রবীণদের বড় সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এ কারণে প্রবীণদের ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা বেশি। এ ছাড়া হঠাৎ ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়া, হাড় ভাঙা, বাত, মেরুদণ্ডের ব্যথা, হাড় ক্ষয় ও শারীরিক দুর্বলতায় ভোগেন তারা। এসব দুর্ঘটনা এড়াতে ব্যালেন্সিং এক্সারসাইজ, স্ট্রেংথ ট্রেনিং এক্সারসাইজ গুরুত্বপূর্ণ।

বৃদ্ধ বয়সে মানুষের মোবিলিটি বা চলন ক্ষমতা কমে আসে এবং মস্তিষ্কের সঙ্গে হাত-পা’র সমন্বয় লোপ পায়। তালায় চাবি ঢোকানো বা নখ কাটার মতো সূক্ষ্ম কাজে সমস্যা দেখা দেয়। এ অবস্থায় সঠিক ফিজিওথেরাপি বার্ধক্যেও যথাসম্ভব চলনক্ষম করে রাখতে ও দৈনন্দিন কাজকর্মে সচল রাখতে পারে। রোজ অ্যারোবিক ব্যায়ামের পর ১৫ মিনিটের স্ট্রেচিং হতে পারে সহায়ক। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা পক্ষাঘাতের (স্ট্রোক) কারণে অনেক প্রবীণ শয্যাশায়ী হচ্ছেন। স্ট্রোকের পর অবশ হয়ে যাওয়া হাত-পায়ের শক্তি ফিরিয়ে আনতে দ্রুত ফিজিওথেরাপির সাহায্য নিতে পারলে সুফল মেলে। অন্যান্য নিউরোলজিক্যাল সমস্যা, যেমন পারকিনসন্স ডিজিজ, আলঝেইমারস, ডিমেনশিয়া ইত্যাদিতেও জেরিয়াট্রিক চিকিৎসক ও ফিজিওথেরাপিস্টের সমন্বিত চিকিৎসা প্রয়োজন। হৃদরোগ ও ফুসফুসের রোগীদের সামান্য পরিশ্রমেই হাঁপিয়ে ওঠা, শ্বাস-প্রশ্বাসের দক্ষতা বাড়াতে কার্ডিয়াক এবং পালমোনারি রিহ্যাবিলিটেশন চিকিৎসা অত্যন্ত জরুরি।
প্রবীণদের ভারসাম্যহীনতা রোধে ও পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমাতে ব্যালান্স প্রাকটিস করা উচিত। যেমন দাঁড়ানো অবস্থায় ফরোয়ার্ড রিচিং, হিল টো ওয়াক, টো স্ট্যান্ড ইত্যাদি। বাসের বা দোকানের লাইনে দাঁড়িয়েও এ অনুশীলন করা যায়। এক পায়ের ওপর ভর দিয়ে বকের মতো শরীরের ভার নিন। এরপর আবার পা বদলে অন্য পায়ে দাঁড়ান। বাড়িতে এটাই চোখ বন্ধ করে করুন।

লেখক: জনস্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক ও গবেষক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক 
খাজা বদরুদজোদা মডার্ন হাসপাতাল, সফিপুর, কালিয়াকৈর, গাজীপুর।

 

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status