রাজনীতি
রাষ্ট্র সংস্কারে জামায়াতের ১০ প্রস্তাব
স্টাফ রিপোর্টার
(৮ মাস আগে) ৯ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ২:২১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৬ পূর্বাহ্ন

রাষ্ট্র সংস্কারে সেক্টর অনুযায়ী আলাদা আলাদা ১০টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বুধবার দুপুর সোয়া ১২টায় রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত 'রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনা' শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা।
জামায়াতে ইসলামী জানায়, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর তৎকালীন সেনা সমর্থিত সরকারের সাথে সমঝোতা করে অবৈধভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করে। তারা দেশকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য সংবিধানসহ সিভিল প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিচার বিভাগকে কুক্ষিগত করে একনায়কতন্ত্র কায়েম করে। তারা নিজেদের সুবিধামতো সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করে। ২০১১ সালের ৩০ জুন পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করা হয়। এ সংশোধনীর মাধ্যমে কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করে দেয়া হয়। নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, সাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ, শিক্ষা, সংস্কৃতি, দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দেয়। রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিরোধীমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দুর্নীতি, ব্যাংক লুটপাট, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি ও বিদেশে অর্থ পাচারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে দেয়। হত্যা, গুম এবং মিথ্যা, সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলার মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা দায়ের করে জেল-জুলুম ও নির্যাতন চালানো হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে দেড় সহস্রাধিক প্রাণের বিনিময়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যান। ৮ আগস্ট গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো স্বল্পতম সময়ের মধ্যে মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অর্থবহ করার জন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কার ব্যতীত নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে না।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান প্রধান সেক্টরের সংস্কারের জন্য নিম্নোক্ত প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরা হয় :
১। আইন ও বিচার
● উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগের জন্য সুষ্ঠু ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
● বিচার বিভাগ থেকে দ্বৈত শাসন দূর করতে হবে।
● বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথকীকরণের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
● আইন মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
● ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার স্বার্থে বিদ্যমান আইনসমূহের প্রয়োজনীয় সংশোধনী ও গণমানুষের মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্যশীল আইন প্রণয়ন করতে হবে।
● ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ ও সকল কালো আইন বাতিল করতে হবে।
● বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা কমাতে বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
● নিম্ন আদালতের যথাযথ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য পৃথক বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করতে হবে।
● সকল ফৌজদারি মামলা তদন্তের জন্য স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
● দেওয়ানি মামলার জন্য সর্বোচ্চ ৫ বছর এবং ফৌজদারি মামলাসমূহ সর্বোচ্চ ৩ বছরের মধ্যে নিষ্পত্তি করার বিধান করতে হবে।
২। সংসদ বিষয়ক সংস্কার
● সংসদের প্রধান বিরোধীদল থেকে একজন ডেপুটি স্পিকার মনোনীত করতে হবে।
● সংসদীয় বিরোধী দলীয় নেতার নেতৃত্বে ছায়া মন্ত্রিসভা গঠনের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
● সংসদে বিরোধী দলীয় সদস্যদের পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে।
৩। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার
● জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবস্থা (Proportional Representation-PR) চালু করতে হবে।
● সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে স্থায়ীভাবে সন্নিবেশিত করতে হবে।
● নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন দেশে প্রত্যাখ্যাত ইভিএম ভোটিং ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে।
● কোনো সরকারি চাকরিজীবী তাদের চাকরি ছাড়ার কমপক্ষে ৩ বছরের মধ্যে কোনো ধরনের নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।
● স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করতে হবে।
● অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ২০০৮ সালে প্রবর্তিত রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রথা বাতিল করতে হবে।
● নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা ও প্রধান বিচারপতির সমন্বয়ে সার্চ কমিটি গঠিত হবে।
● জাতীয় সংসদ নির্বাচন একাধিক দিনে অনুষ্ঠিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
● NID- ব্যবস্থাপনা নির্বাচন কমিশনের অধীনে আনতে হবে।
৪। আইনশৃঙ্খলা সংস্কার
ক) পুলিশ বাহিনীর সংস্কার
● ১৮৬১ সালে ব্রিটিশ সরকার প্রণীত পুলিশ আইন পরিবর্তন এবং পুলিশের জন্য একটি পলিসি গাইডলাইন তৈরি করতে হবে।
● পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি এবং চাকরিচ্যূতির জন্য স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করতে হবে।
● নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি এবং চাকরিচ্যূতির ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক ব্যক্তির সুপারিশের সুযোগ রাখা যাবে না তথা সর্বপ্রকার দলীয় ও ব্যক্তিগত প্রভাব বা হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।
● পুলিশ ট্রেনিং ম্যানুয়ালের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা ও নৈতিক অনুশাসন অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
● পুলিশের মধ্যে মারণাস্ত্রের ব্যবহার বাতিল করতে হবে।
● রিমান্ড চলাকালে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে আসামি পক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতি এবং মহিলা আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাদের অভিভাবকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
● বিচার বিভাগীয় সদস্যদের দ্বারা পুলিশ ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান থাকতে হবে।
● পুলিশের ডিউটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা উন্নত করতে হবে।
● ‘পুলিশ আইন’ পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জনের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করতে হবে।
খ) র্যাব বিষয়ক সংস্কার
● র্যাব ও অন্যান্য বিশেষায়িত বাহিনীর প্রতি জনসাধারণের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে।
● গত সাড়ে ১৫ বছর যারা র্যাবে কাজ করেছে তাদেরকে স্ব স্ব বাহিনীতে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং তাদেরকে পুনরায় র্যাবে নিয়োগ দেয়া যাবে না।
● বিচারবহির্ভূত সকল প্রকার হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।
● র্যাবের সামগ্রিক কার্যক্রম মনিটরিং-এর জন্য সেল গঠন করতে হবে। কোনো র্যাব সদস্য আইনবহির্ভূত কোনো কাজে জড়িত হলে এই সেল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করবে।
● মিডিয়ার ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়ন ও অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে।
৫। জনপ্রশাসন সংস্কার
● জনবল নিয়োগ, বদলি, পদায়নে তদবির, সুপারিশ ও দলীয় আনুগত্যের পরিবর্তে যোগ্যতা, দক্ষতা ও সততাকে প্রাধান্য দিতে হবে।
● যে কোনো চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি থেকে শুরু করে নিয়োগ পর্যন্ত সময়ক্ষেপণ না করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
● সরকারি চাকরিতে আবেদন বিনামূল্যে করতে হবে।
● চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আগামী ২ বছরের জন্য ৩৫ বছর ও পরবর্তী বয়সসীমা স্থায়ীভাবে ৩৩ বছর এবং অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।
● চাকরির আবেদনে সকল ক্ষেত্রে বয়সসীমার বৈষম্য নিরসন করতে হবে।
● সকল সরকারি দপ্তরে দুর্নীতি নিরোধকল্পে বিশেষ ব্যবস্থা তৈরি করা যাতে করে কেউ দুর্নীতি করার সুযোগ না পায়। এ জন্য প্রয়োজনীয় মনিটরিং-এর ব্যবস্থা করতে হবে।
● চাকরিতে বিরাজমান আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে হবে।
● বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে সরকারি চাকরিতে যারা প্রশ্নপত্র ফাঁস, দুর্নীতি, জালিয়াতি ও দলীয় বিবেচনায় চাকরি পেয়েছে তাদের নিয়োগ বাতিল করতে হবে।
৬। দুর্নীতি
● দুর্নীতি দমন কমিশনে পরীক্ষিত সৎ, ন্যায়পরায়ণ, দক্ষ ও যোগ্য লোক নিয়োগ দিতে হবে।
● রাষ্ট্রের সকল সেক্টরে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
● দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার স্বাধীনতা দিতে হবে।
● বিগত সরকারের আমলে দেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার উপযুক্ত বিধান প্রণয়ন ও তা কার্যকর করার পদক্ষেপ নিতে হবে।
● মন্ত্রণালয় ভিত্তিক দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করতে হবে।
● দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনসংস্কার, জনবল ও পরিধি বৃদ্ধি করতে হবে।
● রাষ্ট্রীয় ও জনগণের সম্পদ অবৈধভাবে ভোগ দখলকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সুস্পষ্ট আইন প্রণয়ন করতে হবে।
৭। সংবিধান সংস্কার
● রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রাখার বিধান সংযুক্ত করতে হবে।
● একই ব্যক্তি পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না।
৮। শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংস্কার
ক) বিরাজমান সমস্যার আলোকে শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাব
● ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিকে উচ্চমাধ্যমিক হিসেবে বলবৎ রাখতে হবে। অষ্টম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করে পূর্বের পরীক্ষা পদ্ধতি ফিরিয়ে আনতে হবে।
● পাঠ্যপুস্তকে ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস গুরুত্বের সাথে তুলে ধরতে হবে।
● সকল শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে ধর্মীয় মূল্যবোধবিরোধী উপাদান বাদ দিতে হবে।
● সকল শ্রেণিতে নবী করিম( সা.) এর জীবনীসহ মহামানবদের জীবনী সংবলিত প্রবন্ধ সংযোজন করতে হবে।
● স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিদ্যমান স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাগুলোকে সরকারিকরণ করতে হবে।
● প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে একটি করে কামিল মাদরাসাকে সরকারিকরণ করতে হবে।
● কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষাকে সাধারণ শিক্ষার মূলধারায় যুক্ত করতে হবে।
● Department of Higher Education নামে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে।
● শিক্ষা সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত শিক্ষা কমিশনের সকল ধারা তথা সাধারণ, আলিয়া, কওমীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
খ) সংস্কৃতি সংস্কার
● জাতির ঐতিহাসিক আন্দোলন-সংগ্রাম ও মূল্যবোধের আলোকেবিভিন্ন ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে।
● জাতির ঐতিহাসিক দিনগুলোকে স্মরণীয় করার লক্ষ্যে বিশেষ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় তা পালনের ব্যবস্থা করতে হবে।
● নাটক, সিনেমাসহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানগুলো অশ্লীলতামুক্ত করতে হবে। নাটক, সিনেমা ও বিভিন্ন কন্টেন্টে বিভিন্ন ধর্ম, বিশেষ করে ইসলামকে হেয় করা থেকে বিরত থাকার বিধান প্রণয়ন করতে হবে।
● প্রাণীর মূর্তিনির্ভর ভাস্কর্য নির্মাণ না করে দেশীয় প্রকৃতি, ঐতিহ্যকে বিভিন্ন চিত্রাঙ্কন-ভাস্কর্যে তুলে আনতে হবে।
● সকল গণমাধ্যমে শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম প্রচার নিশ্চিত করতে হবে।
৯। পররাষ্ট্র বিষয়ক সংস্কার
● পররাষ্ট্রীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে সকল গণতান্ত্রিক দেশের সাথে সাম্য ও নায্যতার ভিত্তিতে পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।
● জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় চীন, নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার আন্তর্জাতিক নদীসমূহের পানিবণ্টন চুক্তির উদ্যোগ নিতে হবে।
● আসিয়ানভুক্ত দেশসমূহের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে।
● অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে বিগত সরকারের আমলে সম্পাদিত সকল চুক্তি রিভিউ করতে হবে। এক্ষেত্রে একটি রিভিউ কমিশন গঠন করতে হবে।
● বাংলাদেশকে আসিয়ান জোটভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
● শক্তিশালী SAARC পুনর্গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
● কোনো দেশের সাথে চুক্তি অথবা সমঝোতা চুক্তি হলে পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে সেসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক উত্থাপন করে বিস্তারিত আলোচনাপূর্বক তা অনুমোদন করতে হবে।
১০। ধর্ম মন্ত্রণালয় সংস্কার
● ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশকে (ইফাবা) রাষ্ট্রের কল্যাণে অর্থবহ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
● ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিকে স্বতন্ত্র সংস্থা বা দপ্তরে রূপান্তর করতে হবে, যাতে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে।
● ইসলামিক মিশনকে সরাসরি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বতন্ত্র সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
● হজ্জ ব্যবস্থাপনার জন্য স্বতন্ত্র অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
● হজ্জ ও উমরার খরচ কমানোর জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
● ইসলামিক ফাউন্ডেশনে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যেখানে দেশের বরণ্যে আলেমগণ সম্পৃক্ত থাকবেন।
● বিতর্কিত সকল বই বাতিল ও প্রকাশনা বন্ধ করতে হবে।
● সকল ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
পাঠকের মতামত
Well enough. Now these all have to be applied properly.
সময়োপোযোগী প্রস্তাব |এর বাস্তবায়ন জরুরী
আমি জামায়াতের রাষ্ট্র সংস্কারকে জন্য স্বাগত জানাই।
মহিলা মেম্বার এস এস সি পাশ পুরুষ মেম্বার HSC পাশস চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারমযান, ও এম পি ডিগ্রি পাশ হতে হবে।
আমি জামায়াতের রাষ্ট্র সংস্কারকে জন্য স্বাগত জানাই।
বর্তমান সঙ্কট উত্তরণে তিনটি জরুরি অগ্রাধিকার: ১.গণহত্যা সহ আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার প্রক্রিয়া অতি দ্রুত সম্পাদন করতে হবে। ২.প্রশাসন ও বিচার বিভাগ থেকে অতি দ্রুত তাবাসসুম উর্মির মত আওয়ামী ভূত দুর করতে হবে। ৩.অতঃপর, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে কি না, তার জন্য গণভোটের আয়োজন করতে হবে। তারপরেই অর্থবহ হবে সংস্কার, নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক বন্দোবস্ত।
পড়ে মনে হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র সংস্কার বলতে কী বুঝায়, কী কাজ বা পদ্ধতি এখনও তাই বুঝেন নি।
আমরা প্রতিনিয়ত বিষ মিশ্রিত খাদ্য ও পানিয় গ্রহন করছি সেই সাথে সরকারি হাসপাতালে নুন্যতম চিকিৎসাসেবা পাওয়া যাচ্ছেনা। এগুলো রাজনৈতিক দলগুলো বিবেচনায় থাকা উচিৎ।
পর্যায়ক্রমে সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করন করতে হবে। এই কথাটি যদি স্ননিবেশিত হতো তা হলে খুবই আনন্দিত হতাম। তার মানে শিক্ষা জাতীয়করনে করোরই লক্ষ্য নেই। হতাশ হলাম।
বাস্তবতার আলোকে সময়োপযগী প্রস্তাবনা দেয়ার জন্য জামায়াতকে ধন্যবাদ।
র্যাব সংস্কার নয়, নির্মূল করতে হবে।
MP গণের কাজ হবে আইন প্রণয়ন করা ۔ কোনো প্রকার উন্নয়ন কাজ MP সাহেবদের হাতে থাকতে পারবেনা۔۔
১। আনুপাতিক নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদ স্থিতিশীল সরকার গঠনে প্রতিবন্ধক হয়ে পারে। বরং দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ হতে পারে, যেখানে উচ্চ কক্ষ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বশীল হবে এবং সমাজের বিভিন্ন পেশাজীবী ও গোষ্ঠীগত প্রতিনিধিত্ব থাকবে। ২। রাষ্ট্রপতি সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে। সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অধীনে রাষ্ট্রপতিকে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা দিতে হবে। ৩। স্থানীয় সরকার সমূহের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
যুগান্তকারী পদক্ষেপ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই
ভালো হয়েছে। তবে আরো গবেষণা করতে হবে।
প্রস্তাবনা গুলো যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত, জাতির আকাঙ্খার সাথে পুরোপুরি মিল রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের উচিত প্রস্তাবনা গুলো আমলে নিয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করা।
অত্যন্ত যুগোপযোগী যৌক্তিক সংস্কারের অনবদ্য দাবীনামা। এগুলো মেনে নিলে বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী এমার্জিং টাইগারে পরিণত হবেই ইনশাআল্লাহ।
.....অত্যান্ত সুন্দর এবং সময়োপগোয়ী।
সময়োপোযোগী প্রস্তাব! এর বাস্তবায়ন জরুরী!!
জামায়াত যে সংস্কারনামা উপস্থাপন করেছেন তা বিভিন্ন ভাবে ভিন্ন সময়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। এখন তাঁরা এই গুলো সুপারিশ আকারে বর্তমান সরকারের কাছে উপস্থাপন করবেন। আমরা যা কিছু সংস্কার করতে চাচ্ছি সবই ঐক্যমতের ভিত্তিতে করতে হবে। ২০০৮ এর নির্বাচনে কি ধরণের জালিয়াতি হয়েছিল জামায়াত তা সামনে এনেছেন। এই জন্য জামায়াতকে ধন্যবাদ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাথে একমত
একজন ব্যক্তি দুই বারের বেশী এমপি হতে পারবেন না।
দেশ ও জাতির কল্যাণে জামায়াতে ইসলামী'র প্রস্তাবনা অত্যান্ত যুগোপযোগী। সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রতিটি প্রস্তাবনা আমলে নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। সেই সাথে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত আওয়ামীলীগ ও তাদের সকল অঙ্গ সংগঠন কে নিষিদ্ধ করার দাবী জানাচ্ছি।
অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং বাস্তবসম্মত প্রস্তাবনা। সবাইকে দেশের স্বার্থে, জনগনের স্বার্থে এগিয়ে আসতে হবে এবং স্বস্ব অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল আচরণ এবং বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে।
সময় ও যুগোপযোগী প্রস্তাবনার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামিকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
অত্যান্ত সুন্দর ও যুযোপযোগী পরামর্ দেশ ও জাতির কল্যানে অনেক ভূমিকা রাখেবে
সুন্দর প্রস্তাবনা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ
সহমত পোষণ করছি তবে এখানে অনেক ভাই আওয়ামী লীগ নিয়ে কমেন্ট করেছেন আমি আমি সবার জ্ঞাতার্থে বলছি আওয়ামী লীগ যতবারই ক্ষমতায় এসেছেন জনগণের ভোটে আসতে পারেন নাই তারা চল ছাত্ররির মাধ্যমে এবং ষড়যন্ত্রের মাধ্যমেই তারা ক্ষমতায় এসেছে আবার বিদায় নিয়েছেন তারা অসম্মানজনক অবস্থায় তবে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের যেমন হতে হবে সৎ ঈমানদার দেশ প্রেমিক তেমনি জনগণ কেউ হতে হইব দেশ প্রেমিক এবং সচেতন দলকানা অন্ধভাবে কাউকে সমর্থন করা যাবে না
আসসালামু আলাইকুম আমার মতে প্রত্যেকটা কোটেশন অনেক সুন্দর হয়েছে আশা করি এগুলো আমাদের যিনি বর্তমান সরকার আছেন তিনি বিবেচনা করবেন অবশ্যই তা প্রয়োগ করবেন ইনশাআল্লাহ,
Though I'm not a supporter of Jamat, I still support their above points of reforms.
নতুন ও বিশেষ কিছু নেই। অর্থনীতি ও শিক্ষা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেই। শিক্ষার জন্য জাতীয় বরাদ্দ বৃদ্ধি ও একশত ভাগ শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্য অনুপস্থিত। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি এবং বেকারত্ব দূরীকরণের কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নেই।
সহমত পোষণ করছি
অত্যন্ত যুগোপযোগী যৌক্তিক সংস্কারের অনবদ্য দাবীনামা। এগুলো মেনে নিলে বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী এমার্জিং টাইগারে পরিণত হবেই ইনশাআল্লাহ।
আলহামদুলিল্লাহ আমিও একমত
আলহামদুলিল্লাহ বাংলাদেশ জামাত ইসলামের দেওয়া রোডম্যাপ এর সাথে আমি একমত পোষণ করছি।
অত্যন্ত যুগোপযোগী যৌক্তিক সংস্কারের অনবদ্য দাবীনামা। এগুলো মেনে নিলে বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী এমার্জিং টাইগারে পরিণত হবেই ইনশাআল্লাহ।
যে সকল প্রস্তাব করা হয়েছে তা নতুন কিছু নয়। বিদ্যমান আইনেই এগুলো করা বা সুন্দর ভাবে দেশ চালানো সম্ভব। শধু এর জন্য দরকার রাজনৈতিক দল গুলোর আর সরকারের একান্ত স্বদিচ্ছা। মেনে নিলাম আপনাদের দাবী গুলো পুরন করে সংস্কার করা হলো কিন্তু ভবিষ্যতে যে সরকার আসবে সে যদি এগুলো না মেনে স্বৈরাচারী হয়ে উঠে তখন কিছু করতে পারবে এই সংস্কার? সংসদে সংখ্যা গরিষ্ঠতার জোরে সব পালটিয়ে ফেলবে কিংবা কিতাবে আইন রেখে তারা নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী চলবে। তাই এই সব ফালতু প্রস্তাবনা না দিয়ে আপনারা রাজনৈতিক দল গুলো এবং এর নেতা কর্মীরা আগে অমানুষ থেকে মানুষ হোন, যে বিধান বর্তমানে আছে তা মেনে চলুন তাহলেই দেখবেন দেশ সুন্দর চলছে। এখানে কাগজে আইন বা সংস্কারের কোন মুল্যই নাই যদিনা রাজনিতিবীদ রা সৎ না হয়।
যতই সংস্কার করা হউক আওয়ামীলীগ যদি কোন ক্রমে আবার ক্ষমতা পায় তাহলে আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য নিজেদের সুবিধা মতো আইন করবে। তাই আমার প্রস্তাব হল কিছু নির্দলীয় বাক্তিকে নিয়ে সংসদের উচ্চ কক্ষ গঠন করা যাদের কাছে নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, বিচার বিভাগ থাকবে এবং সরকারের মেয়াদ শেষে এরাই নির্বাচনকালীন তত্তাবাধায়ক সরকারের দায়িত্ব পালন করবে।
আমাদের বিশাল জনসাধারণের দেশে সরকার ও সংসদ এ বেশি বেশি নাগরিক এর অংশ গ্রহণ করাতে সংসদ সদস্য সহ রাষ্ট্র পরিচালনায় কাউকেই এক মেয়াদের বেশি সুযোগ দেয়া উচিত নয়।
Wish the country would have been like as you stated.
Great initiatives...all we can think about those proposal.
Nice!!!
বাস্তবতার আলোকে সময়োপযগী প্রস্তাবনা দেয়ার জন্য জামায়াতকে ধন্যবাদ।