বিশ্বজমিন
‘বাস্তবতা থেকে চোখ বন্ধ করে রেখে ইতিহাস রচনা করলেন হাসিনা’
মানবজমিন ডেস্ক
(১০ মাস আগে) ৬ আগস্ট ২০২৪, মঙ্গলবার, ১২:৩৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:৫৯ অপরাহ্ন

বাস্তবতা থেকে চোখ বন্ধ করে রেখেছিলেন। অবশেষে দেশ থেকে পালিয়ে ইতিহাস রচনা করলেন শেখ হাসিনা। বিবিসি বাংলার মীর সাব্বির তার লেখায় এ কথা বলেছেন। তিনি আরও লিখেছেন, পদত্যাগ করে এবং বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ছাত্র আন্দোলনকারীদের চূড়ান্ত ফল দিয়েছেন তিনি। গত মাসে যখন প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হয় তখন থেকে সরকার এই আন্দোলনকে পাত্তাই দেয়নি। তারা একে বিরোধীদের ষড়যন্ত্র অথবা একটি সন্ত্রাসী হামলা বলে বর্ণনা করেছে। তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে কমপক্ষে ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিল শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ। তারা বিক্ষোভকারীদের দাবি শুনতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আক্ষরিক অর্থে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো এই রাজনৈতিক দল ‘দেয়াল লিখন’ পর্যন্ত পড়তে পারেনি। ১৯৯০-এর ছাত্রদের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানের ৩৪ বছর পরে আরেকটি গণঅভ্যুত্থান সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামিয়েছে। কিন্তু এবারের এই গণঅভ্যুত্থান ছিল ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তাক্ত। এই রক্তপাত এড়ানো যেতো। কিন্তু হাসিনার নিরঙ্কুশ ক্ষমতা শুধু দুর্নীতিতেই ছেয়ে ছিল এমন না। একই সঙ্গে বাস্তবতা থেকে অন্ধ ছিল সরকার। ফলে রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। কারণ, তাদের আর জনসমর্থন নেই।
পাঠকের মতামত
শেখ হাসিনার অধীনস্ত নেতারা এতোই তেলবাজ ছিলেন যে তেলের পর্যাপ্ততার কারণে সঠিক তথ্য তেলে ডুবে গেছে। হাসিনাও সেই ডুবো তেলেই ডুবে ছিলেন। সেটা তিনি পছন্দও করতেন। তাই তিনি মাথা উঠিয়ে আর দেখেননি। বাস্তব চিত্র আর শোনা কথার দুই দেয়ালের চাপে আজকে হাসিনা ভাসমান। এটি হলো বেশি তেলে আরাম বোধের ফলাফল।
It's a lesson for future leaders to work on understanding consequences.
খুনি হাসিনা কে দেশে এনে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা উচিত।কত মায়ের বুক খালি করেছে একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই ভাল জানেন। জুলুমের পরিণতি ভালো হয় না। তার পতন দেখে জালিমের শিক্ষা নেয়া উচিত।
তার এক ঘেয়েমির কারণে আমাদের এতোগুলো নিরপরাধ প্রান চলে গেলো এমনকি পুলিশকে তার নিজস্ব ক্ষমতার জন্য ব্যবহার করতে গিয়ে তাদেরকে জনগণের প্রতিপক্ষ বানিয়ে দিয়েছিল,তাইতো অনেক পুলিশ সদস্যদের ও জীবন দিতে হয়েছে। সব দুষ এই হাসিনার।
এ এক নির্মতার করুণ কাহিনী-ইতিহাসের কালো অধ্যায়!
ঘন ঘোর বরষায় এলো বসন্ত ---------------------------------- আমাদের বাংলায় এখন চলছে বর্ষা কাল। ঝরঝর বৃষ্টি ঝরে প্রায় প্রতিদিন। গরমের দিনে বৃষ্টিতে ভিজে আমাদের প্রাণ জুড়ায়। এমন বর্ষা মৌসুম যে বসন্ত হয়ে ধরা দেবে তা ছিল আমাদের কল্পনার অতীত। অনেক বছর আগে মিশরে ঘটেছিল 'আরব বসন্ত।' আরব বসন্তের ফলে স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের দুঃশাসনের অবসান ঘটে। আমাদের দেশে গত ৫- আগস্ট ছাত্র-ছাত্রী-জনতার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হল, শ্রাবণের ঝরঝর বরষায় তা আমাদের বসন্ত কালের শিমুল পলাশের রক্তলাল বর্ণ ধারণ করে উপহার দিল স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশ। আমাদের শতশত নিরপরাধ ছাত্র-ছাত্রী-জনতার লাল রক্তের শ্রোত ভাসিয়ে নিয়ে গেল স্বৈরশাসক হাসিনাকে। অবসান ঘটেছে আমাদের মাথার উপর জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসা আওয়ামী দুঃশাসনকালের। গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যা, হেফাজতে রোমহষর্ক নির্যাতন থেকে শিক্ষার্থী-জনতার বিপ্লব আমাদের মুক্ত করেছে। আওয়ামী দুঃশাসনের পনের বছরে হাজার হাজার মায়ের বুক খালি করা হয়েছে। পঙ্গু করা হয়েছে কত হাজার ছাত্র-জনতাকে তার ইয়ত্তা নেই। আওয়ামী জুলুম আল্লাহর আরশে আজিম পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এতো জুলুম আল্লাহর সহ্য হয়ত হয়নি। তাই তিনি আমাদের শক্তি ও সাহস যুগিয়েছেন। টিয়ারগ্যাস ও তাজা বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাজার হাজার ভাই-বোনের অমূল্য জীবন। গুলির সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে যেতে দু'বার ভাবেননি আমাদের কারও ভাই, কারও সন্তান 'আবু সাইদ'। এই দুঃসাহস আল্লাহর আরশ থেকে নাজিল হয়েছে। ইতিহাসে পড়েছি কারবালার ময়দানে স্বৈরাচার এজিদ কাউকে পানি পান করতে দেয়নি। ফলে দুধের বাচ্চারা পানির পিপাসায় কাতর হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। হায় ইতিহাস! ইতিহাসের এজিদ সভ্য দুনিয়ায় এখনো ঘুরে বেড়ায়। আমরা যখন স্বৈরশাসক হাসিনার লেলিয়ে দেয়া হায়নাদের সামনে মুখোমুখি, তখন আমাদের সকলের প্রিয় 'মুগ্ধ' আমাদের জন্য পানির বোতল নিয়ে হাজির হলেন। তিনি কতটা মানবিক হলে বিপদ জেনেও পানি নিয়ে হাজির হলেন। 'পানি লাগবে, পানি' বলে ডাক দিয়ে ছুটাছুটি করে আমাদের 'মুগ্ধ' আমাদের মুগ্ধ করলেন বটে,কিন্তু এজিদের প্রেতাত্মাদের সহ্য হয়নি আমাদের পানি পান করা। তাই আমাদের মুগ্ধকে মুহূর্তকাল বিলম্ব না করে স্বৈরশাসক হাসিনার লেলিয়ে দেয়া হায়নাদের গুলিতে ঝাঁঝরা করা হল। তিনি চিরঋণী করে গেলেন আমাদের রংপুরের আবু সাইদের মতোই। তাঁদের জীবনের বিনিময়ে ভরা বর্ষা মৌসুমে আমরা পেলাম বসন্ত। আমাদের বসন্ত উপহার দিতে গিয়ে যতজন শহীদ হয়েছেন, আল্লাহ তা'য়ালা তাঁদের সবাইকে জান্নাতুল ফেরদৌসের উত্তরাধিকার করুন। মহান সর্বশক্তিমান সৃষ্টি কর্তা আল্লাহর দরবারে এই প্রার্থনা।