ঢাকা, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শনিবার, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

খুলনায় আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও নেতাদের বাড়িতে আগুন

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
৫ আগস্ট ২০২৪, সোমবার

খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি চলাকালে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভকারীরা খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাইদের বাড়ি, খুলনা ক্লাব, জেলা পরিষদ কার্যালয়, খুলনা প্রেস ক্লাব, নগর ভবন, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়রের বাসভবন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসভবন, কাউন্সিলর অফিস, নগরীর একাধিক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। বিক্ষোভ চলাকালে পৃথক সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশত আহত হয়। আহতদের মধ্যে মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহজালাল হোসেন সুজনের অবস্থা সংকটাপন্ন। এদিকে সন্ধ্যায় বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা রকিবুল ইসলাম বকুলের খুলনার বাড়িতে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। 
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, অসহযোগ কর্মসূচি পালনের নির্ধারিত সময় ছিল সকাল সাড়ে ১০টা। সাড়ে ৯টা  থেকেই শিক্ষার্থীরা নগরীর শিববাড়ি মোড়ে জড়ো হতে থাকে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনেক অভিভাবকও সেখানে উপস্থিত হন। বেলা ১১টা বাজতেই পুরো শিববাড়ি মোড় জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় আন্দোলনকারীরা শিববাড়ি মোড়ের গোল চত্বরকে শহীদ মীর মুগন্ধের নাম ঘোষণা করে। অন্যদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্র-জনতার একটি মিছিল পিকচার প্যালেস মোড়ে অবস্থান নেয়। বিভিন্ন দিক থেকে অভিভাবক ও ছাত্ররা এসে সেখানে জড়ো হয়ে সমাবেশস্থল শিববাড়ি মোড়ের দিকে যাচ্ছিল। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সেখানে স্লোগান দিতে থাকলে মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে কিছুসংখ্যক নেতাকর্মী বের হয়ে তাদের ধাওয়া করে। এ সময় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার ঘটে। ঘটনাস্থলে কয়েক রাউন্ড গুলি ও বোমার শব্দ শোনা যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে তারা সংগঠিত হয়ে আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা করে। সেখানে মহানগর আওয়ামী লীগের অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী অবস্থান করছিলেন। তাদের হামলায় অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। এদের মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি পারভেজ হাওলাদার গুরুতর আহত হন। তারা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে শেখ সুজনের অবস্থা সংকটাপন্ন। এ সময় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। আগুনে পুরো অফিস ভষ্মীভূত হয়ে গেছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আন্দোলনকারীরা সেখান থেকে সরে গিয়ে খুলনা প্রেস ক্লাবে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ ভবনে ভাঙচুর করে। ফের বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আবারো আগুন দেয় প্রেস ক্লাবে। একই সময়ে আন্দোলনকারীদের অন্য আরেকটি দল সংঘবদ্ধভাবে নগরীর ময়লাপোতা এলাকায় অবস্থিত শেখ বাড়ি হিসেবে পরিচিত প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন ও শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের বাসভবনে তাণ্ডব চালায়। এ সময় বাড়ির নিচতলায় আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। তবে এ সময় ওই বাড়িতে কেউ ছিলেন না। পরে বিকাল ৪টার দিকে বিক্ষুব্ধ জনতা আবারো হামলা চালায় শেখ বাড়িতে। সেখানে অন্তত ২/৩শ’ বিক্ষুব্ধ জনতা বাড়িতে ঢুকে রুমে রুমে গিয়ে তাণ্ডব চালায়। দুই তলাবিশিষ্ট বাড়িটির বেশ কয়েকটি কক্ষে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সেখানে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, আন্দোলনের নামে কতিপয় সন্ত্রাসীরা নগর জুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। এদের উদ্দেশ্য আন্দোলন না, ধংসযজ্ঞ চালানো।
 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status