বাংলারজমিন
লাখো পাঠকের দৃষ্টি মানবজমিনের পাতায়
প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে
২৪ জুলাই ২০২৪, বুধবার
নেট নেই। অনলাইন প্ল্যাটফরমের শাটার নামানো। কোটি কোটি মানুষ অন্ধকারে। দেশ এবং বিশ্বকে জানার অনলাইনের কোনো মাধ্যম নেই সচল। অনেকটা অথৈ পানিতে হাবুডুবু খাওয়ার মতো অবস্থা। এমন অবস্থায় মানুষ আবার পেছনে ফিরেছে। নেট দুনিয়া সৃষ্টির পূর্বে চলে গেছে। ভোর হলে পত্রিকার গাড়ি বগুড়ার সাতমাথায় এসে দাঁড়ায়। ঢাকার কাগজ নামিয়ে দিয়ে অন্য শহরের উদ্দেশ্যে গাড়ি চলে যায়। এরপর পাঠকের ঘরে ঘরে পত্রিকা পৌঁছে দিতে তৎপর হয়ে উঠে শতাধিক হকার। নেটের বদৌলতে রাত বারোটা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই দিনের পত্রিকার চেহারাসহ পাঠক মোবাইলেই পড়ে নিতো পছন্দের সংবাদ। তারপর সূর্যের আলোয় ছাপা পত্রিকা হাতে নিয়ে পাঠ করতো কোটি পাঠক। কিন্তু এখন আর সেই আগাম পত্রিকা পড়ার সুযোগ নেই। নেট বন্ধ। টাচ ফোনের ৬ ইঞ্চির মনিটরও আর জ্বলে না। ভয়েস কল ছাড়া আর কোনো কাজ নেই ফোনগুলোর। নব্বই দশকের চেয়েও আমরা এখন পিছিয়ে আছি। ওই সময় রেডিও শুনতো মানুষ। এখন রেডিও’র অস্তিত্ব প্রায় বিলীন। সঙ্গতকারণেই উৎসুক মানুষ পত্রিকার গাড়ির জন্য ভোর থেকেই অপেক্ষা করে। ছাপা পত্রিকার কাট্তি কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। বগুড়াসহ উত্তরের পাঠকের কাছে দিন দিন জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছেছে বাংলাদেশের একমাত্র ট্যাবলয়েড দৈনিক মানবজমিন। দেশের চলমান পরিস্থিতি জানার জন্য বিশ্বাসী মাধ্যম হয়ে উঠেছে মানবজমিন। ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, গণমাধ্যমকর্মীদের কাছেও বেশ প্রিয় হয়ে উঠছে পত্রিকাটি। বগুড়ার শহীদ খোকন একজন পাঠক লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে মানবজমিন পড়ছেন। তার কাছে গিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি মানবজমিনের পাঠক। সাহসিকতার সঙ্গে সত্য তুলে ধরে এই পত্রিকা। বিগত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের একমাত্র পত্রিকা মানবজমিন একাই মিথ্যার সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছে। সেই ধারা অব্যাহতভাবে এখনো বজায় রেখেছে। আমি নিয়মিত পত্রিকাটি কিনি এবং পড়ি।
বগুড়া শহরের টিনপট্টি এলাকার ব্যবসায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম রাজিউল্লাহর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানেও নিয়মিত মানবজমিন চলে যায়। প্রবীণ এই মুক্তিযোদ্ধার পছন্দের পত্রিকা মানবজমিন। তিনি বলেন, পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী একজন সাহসী মানুষ। সত্যকে তুলে ধরতে তিনি বিন্দুমাত্র ভয় পান না। তার সাহসী সম্পাদনার জন্য পত্রিকাটি কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছে। সত্যকে তুলে ধরতে তিনি বিন্দুমাত্র ভয় পান না। তার সাহসী সম্পাদনার জন্য পত্রিকাটি কোটি মানুষের হৃদয় জয় করতে পেরেছে। আমি সকালেই পত্রিকা হাতে পাই। মানবজমিনে চোখ বুলালেই দেশের সত্যটা অনুমান করা যায়। দৈনিক মানবজমিনের আরেকজন একনিষ্ঠ পাঠক বগুড়া নার্সিং হোমের চেয়ারম্যান ডা. এএইচএম মশিহুর রহমান বলেন, মানবজমিনের জন্মের দিনের কথা আমার মনে আছে। আগ্রহ ভরে শুরুর দিনের পত্রিকা কিনেছিলাম হকারকে অগ্রিম টাকা দিয়ে। ট্যাবলয়েড পত্রিকা বাংলাদেশে চলবে সেটি তখন বুঝতে পারিনি। সেদিন জন্ম নেয়া মানবজমিন আজ পাঠকের মন কেড়েছে। পত্রিকাটি সত্যের পক্ষে সব সময় শক্ত অবস্থানে দাঁড়িয়ে থাকে। এজন্যই আমি মানবজমিনের প্রেমে পড়ে আছি। বগুড়া জেলা এডভোকেট বার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোজাম্মেল হক বলেন, দৈনিক মানবজমিন ১৭ কোটি মানুষের প্রাণের কথা বলছে। সুতরাং সত্যের পক্ষে সাংবাদিকতার শীর্ষে এখন এই ট্যাবলয়েডটি। তিনি আরও বলেন, মানবজমিন কারও তাঁবেদারি না করে এভাবেই কোটি পাঠকের হৃদয়ে বেঁচে থাকবে যুগের পর যুগ। গণমাধ্যমকর্মীদের কাছেও দিন দিন মানবজমিন প্রিয় হয়ে উঠছে। তাদের ধারণা সত্য যত কঠিনই হোক একমাত্র মানবজমিনই সেই সত্য দ্বিধাহীনভাবে প্রকাশ করতে পারে। বগুড়ার গণমাধ্যমকর্মী আব্দুল ওয়াদুদ, এসএম আবু সাঈদ, মোস্তফা মোঘল, শামীম আহম্মেদ, ফেরদৌস রহমান, ইকবাল হোসেন, ইকরাম হোসাইন লিখনসহ অনেকেই নিয়মিত মানবজমিন পাঠ করেন। সাধারণ মানুষের হাতে হাতেও শোভা পাচ্ছে এ সময়ের পাঠক প্রিয় পত্রিকা মানবজমিন। চলমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সব ধরনের মানুষ এখন মানবজমিন পত্রিকা খুঁজে খুঁজে কিনছেন। এমনটি জানিয়েছেন বগুড়ার বেশ কয়েকজন এজেন্ট এবং পত্রিকা বিক্রেতা।
পাঠকের মতামত
ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক।
অনলাইনে অনেকগুলো পত্রিকায় চোখ বুলালেও খবর পড়ি মানবজমিনের। অন্য সবাই সরকারের পা চাটলেও সরকারের অন্যায় গুলো সাহসের সাথে তুলে ধরে। এগিয়ে যাও মানবজমিন।
আমি নিয়মিত অনলাইনে প্রথমে মানবজমিন পড়ি তারপর অন্যান্য পত্রিকা। মানবজমিনের পার্থক্য এটাই যে তারা সরকারের পক্ষে লেখে আবার সরকারের অন্যায়গুলোও সাহসের সাথে লেখে।
আমিও আছি আমরাও আছি
এগিয়ে যাও মানবজমিন। আমি তোমাদের পত্রিকা পড়ি।কারণ অন্যান্য পত্রিকাই সব সত্য সংবাদ পাওয়া যায় না।
একটা সময় অন্য একটি পত্রিকার প্রতি আস্থা,আগ্রহ ছিল। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে তাতেও কিছু অলিখিত,অদৃশ্য পরিবর্তন মনের খোরাক তথা বিশুদ্ধ তথ্য দিতে ব্যর্থ বলেই উপলব্ধি হল। তৃষ্ণার্তের মত বিকল্প অনুসন্ধানে পাঠক চোখ,মন,মনন হৃদয় খুজে নিলো যাকে তার নাম মানবজমিন। এসব কোন অকারন তোষামোদ কিংবা অতিরঞ্জিত কিছু কথা নয়। কোটি পাঠকের হৃদয়ের অনুরত অনুভূতিই ভাষায় প্রকাশ করলাম মাত্র।