ভোলার এক থানার দু’নেতা নানা আলোচনা

ঢাকা উত্তর বিএনপি’র কমিটি ঘোষণার পর থেকেই দলের মধ্যে নানা আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। এই কমিটির দুই শীর্ষ পদে একই জেলার একই উপজেলার দু’জন নেতাকে পদ দেয়া হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিব দু’জনই ভোলার দৌলতখান উপজেলার বাসিন্দা। কমিটি ঘোষণার আগে থেকেই এই দুই নেতার মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল বলে কর্মীদের মাঝে আলোচনা আছে। তবে দুই নেতাই দাবি করেছেন দলীয় দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। 

স্থানীয় নেতাকর্মীরা প্রশ্ন তুলছেন, ঢাকা মহানগরের উত্তরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কীভাবে একই জেলা এবং উপজেলার দুই নেতাকে শীর্ষ দুই পদে দেয়া হয়। কমিটি ঠিক করার আগে বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া উচিত ছিল। নেতাকর্মীরা বলছেন, দুই নেতাই দলের জন্য পরীক্ষিত। কিন্তু তাদের ভিন্ন জায়গায় দায়িত্ব দেয়া যেতো। এক উপজেলার দুই নেতাকে দায়িত্ব দেয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।  নেতৃত্ব বাছাই প্রক্রিয়াও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। 

জানা গেছে, দলের একসময়ের প্রভাবশালী এক ব্যক্তির বলয়ের রাজনীতি করেন সাইফুল আলম নিরব। তার বলয়ের থেকেই যুবদলের সভাপতি হয়েছিলেন নিরব। তাকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক করা হয়েছে। জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হককে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে। সূত্রের দাবি ভোলার বাসিন্দা আমিনুল যাতে জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে না যেতে পারেন সেজন্য সাবেক ও প্রভাবশালী ব্যক্তি তার বলয়ের একজনকে এই কমিটির আহ্বায়ক পদে আনার চেষ্টা চালান। 
নামপ্রকাশ না করার শর্তে বিএনপি’র তিনজন নেতা মানবজমিনকে বলেন, নিরব বিএনপি’র ওই প্রভাবশালী ব্যক্তির নিকট আত্মীয়। আর আমিনুল তার বলয়ের বাইরে। এজন্য মূলত আমিনুলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব। এ ছাড়া তারা একই আসনের (ভোলা-২ আসন)। এই আসন থেকে বিএনপি’র ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি বিএনপি’র মনোনয়নপ্রত্যাশী, নিরবও দল থেকে মনোনয়ন চান। আর আমিনুল ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণাও চালিয়েছেন। এটাও তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। 

নামপ্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র সাবেক এক শীর্ষ নেতা মানবজমিনকে বলেন, আমিনুল হক বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং দু’দফা ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র সদস্য সচিব হয়েছেন নিজস্ব যোগ্যতায়। বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গেলে এই যোগ্যতায় আমিনুল মনোনয়নও পেতে পারেন। 

যে কারণেই আমিনুলকে তারা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেন। 
তবে দ্বন্দ্বের বিষয়টি নাকচ করেছেন সাইফুল আলম নিরব। তিনি মানবজমিনকে বলেন, এটা ঠিক না। আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই, এটাই সঠিক। আর রাজনীতিতে কিছু কুচক্রী মহল থাকে। তাদের কোনো কাজ নেই। তারাই মূলত এটা ছড়ায়।
একই কথা বলেছেন আমিনুল হকও। তিনি মানবজমিনকে বলেন, এটা আপেক্ষিক বিষয়। আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। পারিবারিকভাবেও কোনো দ্বন্দ্ব নেই। এটা ভিত্তিহীন।
গত ৭ই জুলাই জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরবকে আহ্বায়ক ও বিএনপি’র ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ফুটবলার আমিনুল হককে সদস্য সচিব করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র দুই সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে বিএনপি। একইসঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, চট্টগ্রাম মহানগর এবং বরিশাল মহানগরের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দলটি।