খেলা
উরুগুয়েকে হারিয়ে আর্জেন্টিনার অপেক্ষায়
কলম্বিয়া কোচ বললেন, ‘সাহস দেখানোর পুরস্কার পেয়েছি’
স্পোর্টস ডেস্ক
১২ জুলাই ২০২৪, শুক্রবার
ম্যাচের প্রথমার্ধে এগিয়ে গেল কলম্বিয়া। প্রথমার্ধের শেষদিকে ড্যানিয়েল মুনোজ লাল কার্ড দেখায় ১০ জনের দলে পরিণত হয় তারা। তবে ১০ জন নিয়েই দ্বিতীয়ার্ধে উরুগুয়েকে আটকে রাখে হামেস রদ্রিগেজরা। আর তাতে ২৩ বছর পর কোপা আমেরিকার ফাইনালে পৌঁছায় কলম্বিয়া। আগামী ১৫ই জুলাই শিরোপার লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ আর্জেন্টিনা। ম্যাচ শেষে কলম্বিয়া কোচ নেস্তর লরেঞ্জো বলেন তারা সাহস দেখানোর পুরস্কার পেয়েছেন।
নর্থ ক্যারোলিনার ব্যাংক অব আমেরিকা স্টেডিয়ামে কাল কোপা আমেরিকার উত্তাপ ছড়ানো দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ১-০ গোলে জয় পায় কলম্বিয়া। প্রথমার্ধে হামেস রদ্রিগেসের চমৎকার কর্নার কিক থেকে গোল আদায় করে ব্যবধান গড়ে দেন হেফারসন লের্মা।
বাংলাদেশ সময় আগামী সোমবার সকালে আসরে দ্বিতীয় শিরোপার লক্ষ্যে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হবে কলম্বিয়া। এর আগে দুটি ফাইনাল খেলে একবার শিরোপা জিতেছে তারা। ১৯৭৫ সালে পেরুর বিপক্ষে হেরেছিল তারা। আর ২০০১ সালে ঘরের মাঠে অতিথি দল মেক্সিকোকে হারিয়ে শিরোপা জেতে কলম্বিয়ানরা। কলম্বিয়ার আর্জেন্টাইন কোচ নেস্তর লোরেঞ্জো এখন খুশিতে ডগমগ হয়ে ওঠার কথা। ২৩ বছর পর ফাইনালে তুলেছেন কলম্বিয়াকে। টানা ২৮ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পথে নেস্তরের অধীনেই ২৫ ম্যাচে হারেনি কলম্বিয়া। নেস্তর মনে করেন, ম্যাচটি সাহস দেখিয়ে জিতেছে কলম্বিয়া। আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে ১৯৯০ বিশ্বকাপ খেলা লরেঞ্জোবলেন, ‘আমরা এগিয়ে গিয়েছি, ঝুকি নিয়েছি এবং সাহসীও ছিলাম। একজন কম নিয়ে খেলেও আমরা দুই স্ট্রাইকারকে মাঠে রেখেছি। এই সাহস দেখানোর পুরস্কারটা আমরা পেয়েছি।’ ২০২২ সালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে হারার পর থেকে টানা ২৮ ম্যাচে অপরাজিত কলম্বিয়া। গত কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে মেসি-ডি মারিয়াদের বিপক্ষে হেরেই বিদায় নেয় তারা। এবার ফাইনালে সেই আর্জেন্টিনাকেই প্রতিপক্ষ হিসেবে পেলো হামেস রদ্রিগেজরা। আগামী সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় কোপা আমেরিকার ফাইনাল। আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-২০ দলের পাশাপাশি ২০০৪ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত জাতীয় দলের সহকারী কোচের দায়িত্বেও ছিলেন নেস্তর। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ফাইনাল নিয়ে কলম্বিয়ার এই কোচ বলেন, ‘এটা বেশ ভালো হবে। ক্যারিয়ারে যেসব খেলোয়াড়ের সঙ্গে দেখা হয়েছে, যাদের আমি প্রশংসা করি, তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে।’ ম্যাচের ৩৯তম মিনিটে লিড নেয় কলম্বিয়া। রদ্রিগেজের কর্নারে উঁচুতে লাফিয়ে হেডে জাল খুঁজে নেন লের্মা। চলতি আসরে এটি কলম্বিয়া অধিনায়কের ষষ্ঠ অ্যাসিস্ট।তবে কিছুক্ষণ পরই এক ধাক্কা খায় তারা। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ড্যানিয়েল মুনোজ। তবে একজন কম নিয়েও উরুগুয়েকে রুখে দেয় কলম্বিয়া। পরে দ্বিতীয়ার্ধে দলের পরিকল্পনা কেমন ছিল তা জানান আর্জেন্টিনার হয়ে ১৯৯০ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলা লরেঞ্জো। বলেন, কোনো অবস্থায়ই যে লাল কার্ড কাম্য ছিল না। তিনি বলেন, ‘মূল বিষয় হলো, আমরা কখনও একজন কমে যেতে চাই না। মাঠে ১০ জন নিয়ে একই পারফরম্যান্স ধরে রাখা প্রায় অসম্ভব। যেসব দল প্রতিপক্ষের ওপর দাপট দেখায়, একজন কমে যাওয়ার পর তারা টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয়। আমরা তাই পরিস্থিতি ভালোভাবে বিশ্লেষণ করেছি।’
ম্যাচের শুরুতে কলম্বিয়া খেলে ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সেটি বদলে ফেলতে হয় তাদের। এ প্রসঙ্গে কলম্বিয়া কোচ বলেন, ‘আমাদের সামনে দুটি পথ খোলা ছিল। (রক্ষণাত্মক হয়ে) ৫-৪, ৫-৩-১ ফর্মেশনে খেলা অথবা ৪-৩-২ ধরে রেখে সুযোগ তৈরি করা। আমরা সেটি (৪-৩-২) বেছে নেই এবং ঈশ্বরও আমাদের সহায় হয়। তাদের (উরুগুয়ে) কিছু সুযোগ জালের ভেতরে যায়নি। আমরাও সুযোগ হাতছাড়া করেছি। তবে শেষ পর্যন্ত (জিততে) পেরেছি।’
মানুয়েল উগার্তেকে কনুই দিয়ে আঘাত করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড ও লাল কার্ড দেখা মুনোজকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে চান না কলম্বিয়া কোচ।
‘ড্যানিয়েল খুবই হতাশ। কারণ মাঠে সে সিংহের মতো। কিন্তু আরও একবার আবেগের বশবর্তী হয়ে গেছে। আমি তাকে আলিঙ্গন করে বলেছি, তাকে ছাড়া আমরা এখানে থাকতে পারতাম না। তাই তার মাথা উঁচু রাখা উচিত।’ ৬৭তম মিনিটে মাঠে আসেন উরুগুয়ের সর্বোচ্চ গোলদাতা লুইস সুয়ারেজ। কিছুক্ষণের মধ্যেই গোল পেয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু উরুগুয়েকে হতাশ করে তার শট পোস্টে লেগে ফেরে।