অর্থ-বাণিজ্য
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাতীয় লজিস্টিক নীতি হবে অন্যতম চালিকাশক্তি: তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(৩ দিন আগে) ২৭ জুন ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৮:০৩ অপরাহ্ন
বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অবস্থান শক্ত করতে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নকে তরান্বিত করতে জাতীয় লজিস্টিকস নীতি ২০২৪ অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। ব্যবসার খরচ কমিয়ে আনা, রপ্তানি বৃদ্ধি এবং গ্লোবাল ভ্যালু চেইনের সঙ্গে একীভূত করার লক্ষ্যে এ নীতির খসড়া অনুমোদন হয়েছে যা 'স্মার্ট বাংলাদেশ' নির্মাণের জন্য অপরিহার্য।
বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ফিকি) আয়োজিত ‘ন্যাশনাল লজিস্টিক পলিসি ২০২৪: ফ্রম পলিসি ফ্রেমওয়ার্ক টু এক্সিকিউশন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া।
তিনি বলেন, ব্যবসার পরিবেশ সহজ করতে এবং বিনিয়োগ আকর্ষণে এই নীতিমালা প্রণয়ন করেছে সরকার। তবে এর সফল বাস্তবায়নে সরকারি-বেসরকারি সব পক্ষের সহায়তা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে এই খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসার আহবান জানান মূখ্য সচিব।
সেমিনারে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং স্থানীয় ও বৈশ্বিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ আরো বিস্তৃত করার জন্য সম্প্রতি প্রণীত জাতীয় লজিস্টিক নীতি’র কাঠামো থেকে কার্যকর করার পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়। ফিকির সভাপতি জাভেদ আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাশরুর রিয়াজের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় লজিস্টিক খাতের নানা সংস্কারের প্রস্তাব উঠে এসেছে। এতে বক্তা হিসেবে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (নির্বাহী সেল) এবং ন্যাশনাল লজিস্টিকস ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্য সচিব শাহিদা সুলতানা; এক্সপিডিটরস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের কান্ট্রি ম্যানেজার ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং অ্যামচ্যামের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ এরশাদ আহমেদ; একে খান অ্যান্ড কোং লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান এবং ডিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান; এবং মারস্ক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিখিল ডি'লিমা।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির। মূল বক্তব্যে তিনি তুলে ধরেন, দেশে লজিস্টিক ব্যবস্থাপনার খরচ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমানো গেলে রপ্তানি অন্তত ২০ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব। একই সঙ্গে মাত্র ১ শতাংশ পরিবহন খরচ কমানো গেলে রপ্তানি বাড়বে প্রায় সাড়ে ৭ শতাংশ। জাতীয় লজিস্টিক নীতি-২০২৪ বন্দর এবং রেলপথের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগের জন্য একটি অনুঘটক হিসেব কাজ করবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, দেশের লজিস্টিক খাতের উন্নয়নে অনেক অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। বিশেষ করে বে টার্মিনাল, এটি চালু হলে ২৪ ঘণ্টা সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। পাশাপাশি মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর উন্নয়নে কাজ চলছে। এসব বন্দর উন্নয়ন হলে অভ্যন্তরীণ রেল, সড়ক ও নৌ পথ উন্নয়নের মাধ্যমে দ্রুত সময়ে সহজে সেবা মিলবে। ফিকির সভাপতি জাভেদ আক্তার বলেন, ব্যবসার খরচ কমাতে ও সুসংগঠিত করতে নতুন লজিস্টিক নীতি যাথার্থ। এই নীতির মতো ব্যবসা সহায়ক অনেক নীতি ও আইন আছে। এখন ব্যবসার উন্নয়ন নির্ভর করবে নীতির বাস্তবায়নের ওপর।
জাতীয় লজিস্টিক নীতি তৈরির উদ্যোগ শিল্প ও রপ্তানির সহায়ক হিসেবে উল্লেখ করেন এফআইসিসিআই সভাপতি জাভেদ আখতার। তিনি বলেন, লজিস্টিক নীতিতে নতুন মনিটরিং মেকানিজম ও কাউন্সিল এর সাফল্য নিশ্চিত করবে। জাতীয় লজিস্টিকস ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন কমিটি (এনএলডিসিসি) প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। যার সমন্বয় নিশ্চিত করে লজিস্টিক নীতি কার্যকরভাবে এবং দক্ষতার সাথে বাস্তবায়িত হবে। সেখানে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তা, এমনকি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অর্থ লগ্নির আহবান জানানো হয়।
সেমিনারে সরকারি, বেসরকারি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং ফিকির সদস্য কোম্পানির প্রিতিনিধি, ফিকির পরিচালনা পর্ষদ, বিভিন্ন দূতাবাসের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং এ খাত বিষেশজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন।