ঢাকা, ১৯ মার্চ ২০২৫, বুধবার, ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ রমজান ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

রাজনগরে ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি নিরাপদ পানির সংকট

রাজনগর (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
২৩ জুন ২০২৪, রবিবারmzamin

মৌলভীবাজারের রাজনগরে ঈদের দিন থেকে টানা ৩ দিনের অতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। হাজারো মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে। মনু নদ ও কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের পাশাপাশি ৭টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের মানুষরাও বন্যা আক্রান্ত হয়েছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এসব এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করেছেন। তবে বন্যায় আক্রান্ত এলাকায় নিরাপদ খাবার পানির সবচেয়ে বেশি সংকট দেখা দিয়েছে। গবাধিপশুর খাবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৭১টি গ্রামের মানুষ এবারের বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে মনু ও কুশিয়ারা নদীর বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। কোথাও কোথাও বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধের সুড়ঙ্গ দিয়ে পানি প্রবেশ করেছে। তবে ভাঙনের মোকাবিলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য মনু নদে টেকসই বাঁধ দিতে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার যে প্রকল্প নেয়া হয়েছিল তার ঠিকাদারদের দুষছেন এসব এলাকার মানুষ। কোথাও ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ মিলে ভাঙন ঠেকিয়েছেন। নিজ উদ্যোগে মাটি ভরে বাঁধের ভাঙনপ্রবণ স্থানে বস্তা ফেলেছেন। ফলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঈদের পরদিন থেকে বন্যায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ২ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকের বসতঘরে পানি থাকায় চুলায় রান্না করে খাবার খেতে পারছেন না। তাদের নির্ভর করতে হচ্ছে শুকনো খাবারের উপর। উপজেলার জাহিদপুর, বেড়কুড়ি, পূর্ব বেড়কুড়ি, রশিদপুর, কাশিমপুর, শাহপুর, আব্দুল্লাহপুর, হামিদপুর, লামা বিলবাড়ী, কেশরপাড়া, দত্তগ্রামসহ ৭১টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উঁচু এলাকার পানি নেমে গেলেও নিচু এলাকায় এখনো পানিতে তলিয়ে রয়েছে বাড়িঘর।
হামিদপুর গ্রামের আলী হোসেন জানান, কুশিয়ারা নদীর পানি খুব ধীরে কমছে। তারা খুব কষ্টে দিনযাপন করছেন। তাদের গ্রামসহ আশপাশের বহু গ্রামের মানুষ একই সমস্যায় রয়েছেন। খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা বলেন, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে এই বন্যা হয়েছে। শুরু থেকেই আমরা আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দিয়েছি। আশ্রয় নেয়া মানুষের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে। বন্যাদুর্গতদের জন্য মেডিকেল টিম কাজ করছে। জিআর চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বন্যার্তরা পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছেন। পানি পুরোপুরি কমে না যাওয়া পর্যন্ত আমরা কাজ চালিয়ে যাবো। এদিকে শনিবার রাজনগরের ফতেপুর ও উত্তরভাগ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার বন্যাদুর্গত ২০০ পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার ও ৪ হাজার পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দিয়েছেন মৌলভীবাজার-৩ (সদর-রাজনগর) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান। বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন এলাকায় নৌকাযোগে গিয়ে তিনি এসব ত্রাণ বিতরণ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন রাজনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাদির ফৌজি, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজু পালসহ সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status