বিশ্বজমিন
কেজরিওয়ালের জামিন স্থগিত
মানবজমিন ডেস্ক
২২ জুন ২০২৪, শনিবারশুক্রবার তিহার জেল থেকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জামিনের কথা থাকলেও তা ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী প্রতিষ্ঠান এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) আবেদনের ভিত্তিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন দিল্লির হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছেন, যতক্ষণ না আবেদনের শুনানি হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কেজরিওয়ালকে জামিন দেয়ার ট্রায়াল আদালতের আদেশ কার্যকর হবে না। দিল্লির উচ্চ আদালত জামিনের আদেশ স্থগিত করায় আপাতত মুক্তি পাচ্ছেন না কেজরিওয়াল। এ খবর দিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম অনলাইন এনডিটিভি।
এতে বলা হয়েছে, কেজরিওয়ালের জামিনের সিদ্ধান্তকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন ইডি’র অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) এসভি রাজু। এছাড়া জামিনের আদেশ পদ্ধতিগত গুরুতর অনিয়মের প্রতিনিধিত্ব করে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। শুক্রবার দিল্লির উচ্চ আদালতে বিচারপতি সুধীর কুমার জৈন এবং রবিন্দর দুদেজার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের শুনানির সময় এসব মন্তব্য করেছেন রাজু। তিনি আরও বলেন, নিম্ন আদালত আমাদের যুক্তিতর্ক আমলে না নিয়েই কেজরিওয়ালের জামিন মঞ্জুর করেছেন। শুক্রবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে ইডি’র এএসজি নিম্ন আদালতে প্রাসঙ্গিক তথ্য বিবেচনা না করে ওই জামিনের আদেশ দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেছেন, যদি প্রাসঙ্গিক তথ্য বিবেচনা না করে অপ্রাসঙ্গিক তথ্য বিবেচনা করা হয়, তাহলে এই জামিন বাতিলের যোগ্যই বটে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার কেজরিওয়ালের জামিন মঞ্জুর করে দিল্লি রাউস এভিনিউ আদালত। তবে দিল্লির উচ্চ আদালতে ইডি’র আবেদনের ভিত্তিতে ওই রায় সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নিম্ন আদালতে শুনানির সময় ইডি’র আইনজীবী বা সলিসিটর জেনারেলকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেছে ইডি। তবে এই অভিযোগের বিরোধিতা করেছে কেজরিওয়ালের আইনজীবীরা।
কেজরিওয়ালের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, আবগারি দুর্নীতি মামলায় আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধানের এই মামলার শুনানি হয়েছে। প্রায় ৭ ঘণ্টা ধরে শুনানি চলেছে। এছাড়া কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় ইডি’র হাতে কোনো প্রমাণ নেই বলেও দাবি করেছেন আইনজীবীরা। তারা বলছেন, এই মামলায় যারা রাজসাক্ষী হয়েছেন, তাদের বয়ানের উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে রয়েছে মামলাটি যা ভিত্তিহীন। দিল্লি হাইকোর্টের দুই বিচারপতির সূত্রে জানা যায়, যেহেতু জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে আদালতে শুনানি চলছে, তাই এ শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে রাউস এভিনিউ কোর্টের রায় স্থগিত থাকবে। অর্থাৎ আপাতত কেজরিওয়ালের জামিনের প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে না।
আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত ২১শে মার্চ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করেছিল ইডি। এতে তাকে বারবার চাপ দেয়া সত্ত্বেও তিনি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেননি। এর ফলে তিনিই দেশের ইতিহাসে প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, যিনি পদে থাকাকালীন গ্রেপ্তার হয়েছেন। জেলে বসেই দিল্লির সরকার পরিচালনা করেছেন কেজরিওয়াল। সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনের আবহে প্রচারের জন্য তাকে জামিন দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ২১ দিনের অন্তর্বর্তী জামিন পেয়েছিলেন তিনি। জেলের বাইরে বেরিয়ে প্রচারও করেছেন আপের হয়ে। তারপর গত ২রা জুন আদালতের নির্দেশ মেনে আবার তিহার জেলে ফিরে গেছেন। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে দিল্লির সরকার একটি মদ নীতি গ্রহণ করে। এর মাধ্যমে শহরটিতে মদ বিক্রি আধুনিকায়ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে পরবর্তীতে অভিযোগ ওঠে এই নীতি ব্যবহার করে ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আর এই অভিযোগেই তাকে গ্রেপ্তার করে ইডি।