বাংলারজমিন
শাহরাস্তিতে দম্পতির সন্তান বিক্রি, অভিযানে উদ্ধার
শাহরাস্তি (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
১৩ জুন ২০২৪, বৃহস্পতিবারশাহরাস্তিতে এক রাজমিস্ত্রি দম্পতি তাদের চার দিনের নবজাতক পুত্র সন্তানকে বিক্রির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে। এই ঘটনায় এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার সকালে পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করে।
মঙ্গলবার বিকালে শাহরাস্তি মডেল থানার কনফারেন্স সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে কচুয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রেজওয়ান সাঈদ জিকু এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, গত (৬ই জুন) বৃহস্পতিবার শাহরাস্তি উপজেলার মেহের দক্ষিণ ইউপির দক্ষিণ দেবকরা ব্যাপারী বাড়ির বর্তমান নিবাস খেড়িহর গ্রামের হুনার বাড়ির আবু নাছিরের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদাউস পৌর শহরের মেহের কালীবাড়ির একটি প্রাইভেট হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। সোমবার জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ একটি নবজাতক শিশু কে বা কারা নিয়ে গেছে মর্মে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে শাহরাস্তি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন স্পর্শকাতর বিষয়টি চাঁদপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিপিএম, পিপিএম, অভিহিতপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
সোমবার রাত ২টায় ওই নবজাতককে উদ্ধারে থানার এসআই (নি.) জনি কান্তি দে এবং একটি চৌকস দল চাঁদপুর সদরে অভিযান পরিচালনা করেন। ওইসময় চাঁদপুর বিষ্ণুদী ব্যাংক কলোনি এলাকা থেকে ফরিদগঞ্জ উপজেলার অধিবাসী মামুনুর রশিদ (৪৫) ও হালিমা সিদ্দিকা (৩৮) দম্পতির ঘর থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে ওই নিঃসন্তান দম্পতি জানায়, মূলত শিশুটি পেতে তারাই মধ্যস্থতা করেন। তারা আরও জানায়, রাজমিস্ত্রি দম্পতির দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। আগত সন্তানটিও কন্যা শিশু হতে পারে আশঙ্কায় তারা এই শিশুটিকে পৃথিবীর আলো দেখার পূর্বেই বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মঙ্গলবার দুপুরে থানায় গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে এ বিষয়ে পুলিশ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে শিশুটিকে তার মায়ের বুকে ফিরিয়ে দেয়। এ প্রসঙ্গে থানার ওসি জানান, স্পর্শকাতর বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মানবিক দিক বিবেচনায় উদ্ধারকৃত নবজাতক শিশুকে তার মা জান্নাতুল ফেরদাউসের কোলে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে শিশুটির মা দাবি করেন, অর্থের জন্য শিশুটিকে বিক্রি করা হয়নি। শুধুমাত্র সিজার অপারেশনের খরচের বিনিময়ে তার আদরের ধন বিলিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এটি তার ভুল ছিল। তিনি বলেন, আমি আর এ ভুল করবো না। মা হিসেবে আমি সন্তানবিহীন কষ্ট বুঝতে পেরেছি।