ঢাকা, ৫ জুলাই ২০২৪, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮ জিলহজ্জ ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

রপ্তানি আয়ে বড় ধাক্কা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
৬ জুন ২০২৪, বৃহস্পতিবারmzamin

মে মাসে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে দেশের রপ্তানি খাত। এ মাসে ৪০৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ শতাংশ কম। রপ্তানিতে এই পরিমাণ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১১ মাসে আর হয়নি। মে মাসে রপ্তানি কমে যাওয়ায় চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে সামগ্রিকভাবে পণ্য রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হারও কমে গেছে। এপ্রিলের শেষে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ছিল ৩.৯৩ শতাংশ। মে শেষে সামগ্রিক পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ২.০১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বুধবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) পণ্য রপ্তানির এই হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই থেকে মে) ৫ হাজার ১৫৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৫ হাজার ৫৩ কোটি ডলারের পণ্য।

ইপিবি’র তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য ও চামড়াবিহীন জুতা রপ্তানি বাড়লেও চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, আসবাব, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানি কমে গেছে।
ইপিবি’র তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে মোট পণ্য রপ্তানির ৮৫ শতাংশ আয় তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে। এ সময় ৪ হাজার ৩৮৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন
এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৮৬ শতাংশ বেড়েছে।

পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হওয়ারই কথা, কারণ এখন কার্যাদেশ কম। অন্যদিকে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে যে কার্যাদেশ আছে তাও আমরা গ্রহণ করতে পারছি না। একদিকে ক্রেতারা পণ্যের ন্যায্যমূল্য দিচ্ছে না, অন্যদিকে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও অন্যান্য সেবার মূল্যবৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। ফলে মূল্য প্রতিযোগিতায় আমরা টিকে থাকতে পারছি না। তিনি বলেন, ডলার সংকটের কারণে এলসি খুলতে অনেক সময় লাগে। ফলে বৈশ্বিক ক্রেতারা লিড টাইম বেড়ে যাওয়ার কারণে অর্ডার কম দিচ্ছে। এ ছাড়া কাস্টমসের হয়রানির কারণে যথাসময়ে আমাদের পণ্য ডেলিভারি দিতে কষ্ট হচ্ছে।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) বলেন, সমপ্রতি বিশ্ব অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি এবং তা নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়ানোর ফলে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে এসেছে। ফলে পোশাকের খুচরা বিক্রয় ও আমদানি কমেছে (জানুয়ারি-মার্চ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক পোশাক আমদানি কমেছে ৭.১৮ শতাংশ এবং ইউরোপের কমেছে ১২.৮৪ শতাংশ)। পাশাপাশি ইউনিট প্রতি পণ্যের উল্লেখযোগ্য দরপতন (জুলাই ২০২৩ থেকে মার্চ ২০২৪ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে আমাদের প্রধান পণ্যের দরপতন হয়েছে ৮ থেকে ১৮ শতাংশ) রপ্তানি কমার অন্যতম কারণ।

তৈরি পোশাকের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পণ্য রপ্তানি আয় চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাত থেকে এসেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৯৬ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪.১৭ শতাংশ কম।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মানসুর বলেন, এই মুহূর্তে রপ্তানি আয় কমে যাওয়া অর্থনীতির জন্য সুখকর নয়। আমাদের আমদানিকারক দেশগুলোর অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হলে, রপ্তানির গতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন এ অর্থনীতিবিদ।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status