দেশ বিদেশ
বিপিএমসিএ’র আলোচনা সভায় বক্তারা
অটোমেশনের কারণে বেসরকারি মেডিক্যালে ভর্তিচ্ছুরা বিপাকে পড়ছে
স্টাফ রিপোর্টার
(৯ মাস আগে) ২৫ মে ২০২৪, শনিবার, ৬:২৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৬:২৭ অপরাহ্ন

অটোমেশন পদ্ধতির কারণে সকল বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীসহ কলেজ কর্তৃপক্ষ বিপাকে পড়ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ এসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ)। শনিবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিপিএমসিএ আয়োজিত ‘বেসরকারি স্বাস্থ্য শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং ভর্তি প্রক্রিয়ায় চলমান শিক্ষার্থী সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা জানান।
এ বিষয়ে বিপিএমসিএ সভাপতি এম এ মুবিন খান বলেন, বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ সেক্টর ধ্বংস করার নীলনকশা করা হয়েছে। মনে রাখতে হবে, প্রতিষ্ঠান গড়া কঠিন, ধ্বংস করা সহজ। প্রাইভেট সেক্টরে উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীরা নিজের চয়েজমতো ভর্তি হবেন। কিন্তু অটোমেশনের কারণে তারা তা পারছেন না। এতে শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সবাই হতাশ। হাত-পা বেঁধে পানিতে সাঁতার কাটতে দেয়ার মতো অবস্থায় অটোমেশন। এসব কারণে এই পেশায় আসতে শিক্ষার্থীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। অটোমেশনের নামে এই সেক্টরকে ধ্বংস করার অপপ্রয়াস চলছে।
স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেছেন, অটোমেশন নতুন কোনো ব্যবস্থা না, এটা পাকিস্তান আমলেও ছিলো। এ পদ্ধতির কারণে অনেকে ভর্তিতে সমস্যা বোধ করছে। আমি নিজেও এটার শিকার। এই অটোমেশনের কারণে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারিনি। তিনি বলেন, কোয়ালিটি মেইনটেইন না করলে কারোরই কোনো কাজ করা উচিত না।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের হাসপাতালের ডাক্তারদের কোয়ালিটি ভালো। হাসপাতালের উপর মানুষের আস্থা আনতে হবে, কম্পিটিশন বাড়াতে হবে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে কোয়ালিটি বাড়লে মানুষ এমনি প্রতিদান দিবে।
সভায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, কিছু অযোগ্য, অদক্ষ ও ঘুষখোর কর্মকর্তার কারণে সরকারকে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতাল অনুমোদনে সবকিছু ফুলফিল দেখেই লাইসেন্স দেয়া হয়। নিয়মনীতি না মানলে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রয়েছে। সেটা বাস্তবায়ন না করে বেসরকারিতে গুণগত মান নেই এমন অভিযোগ তুলে অটোমেশন চালু করা হয়।
তারা আরও বলেন, অটোমেশনে বলা হয়েছে, একটা সিটের জন্য ৫ জন ছাত্র থাকবে। এর মানে ২৫ হাজার সিরিয়ালের মধ্যে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ভর্তি হতে পারবে। সিরিয়াল নম্বর ৪৯ হাজারের বেশি দিয়েও চলতি বছর এখনো ১ হাজার ২০০ সিট খালি আছে। এই অবস্থা দেখে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দাবির মুখে ভর্তির পোর্টাল খুলে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু কেউ যোগাযোগ করে না। বিদেশি শিক্ষার্থীরাও আসছে না। অথচ অটোমেশন চালু করার আগে ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মেডিক্যালে পড়তে আসতেন শিক্ষার্থীরা। এটা নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যেও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
বিপিএমসিএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়, চলতি ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে দেশের ৬৭ টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের দেশী-বিদেশী শিক্ষার্থীর ৬২০৮টি আসনের মধ্যে প্রায় ১ হাজার থেকে ১২শ’ আসন এখনো শুণ্য আছে। দেশে বেসরকারি চিকিৎসা শিক্ষার মান উন্নয়ন ও ভর্তি প্রক্রিয়ায় চলমান শিক্ষার্থী সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করে তা দ্রুত বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ বেসরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।