দেশ বিদেশ
এবার বাবর আলীর লোৎসে জয়
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
২২ মে ২০২৪, বুধবার
পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ এভারেস্ট বিজয়ের পর এবার লোৎসে পর্বত জয় করেছেন চট্টগ্রামের হালদা পাড়ের সন্তান ডা. বাবর আলী। এ নিয়ে বাংলাদেশি পর্বতারোহীদের মধ্যে তিনিই একই যাত্রায় এভারেস্ট ও লোৎসে জয়ের রেকর্ড গড়লেন। গতকাল ভোর ৬টা ৫ মিনিটে তিনি লোৎসে সামিট সম্পন্ন করেছেন। তার অভিযানের সমন্বয়ক ফরহান জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফরহান জামান বলেন, গত রোববার এভারেস্ট সামিট শেষে তিনি বেসক্যাম্প-৪ এ বিশ্রামে ছিলেন। সোমবার রাতে তিনি লোৎসে সামিটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। গতকাল ভোর ৬টা ৫ মিনিটে তিনি লোৎসে সামিট সম্পন্ন করেছেন। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ও নিরাপদ আছেন। আর শিগগিরই দেশে ফিরবেন। এর আগে গত রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়েছেন বাবর। দীর্ঘ ১১ বছর পর ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্টের চূড়ায় উঠেন তিনি। জানা যায়, ২০১৪ সালেই ক্লাব কর্তৃক আয়োজিত নেপালে এক হিমালয় অভিযানে বাবর সামিট করেন পাঁচ হাজার মিটার উচ্চতার পর্বত। সেই তার হিমালয়ে পথচলা শুরু। এরপর পর্বতারোহণের বিশুদ্ধতম ধরন বলে পরিচিত আল্পাইন স্টাইলে ২০১৬ সালে ক্লাব থেকে সামিট হয় ভারতের মাউন্ট ইয়ানাম, যা ছিল বাংলাদেশ থেকে প্রথমবার কোনো ২০ হাজার ফুট উচ্চতার পর্বত সামিট এবং সেই দলের সদস্য ছিলেন তিনি।
পর্বতারোহণকে ধ্যানজ্ঞান মেনে তিনি বেসিক মাউন্টেনিয়ারিং কোর্স করেন ভারতের নেহেরু ইন্সটিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং থেকে। ২০১৪ সাল থেকে প্রায় প্রতি বছর করেছেন এক বা একাধিক হিমালয় অভিযান। এ ছাড়াও নিজেকে উপযুক্ত করে তুলতে বাবর নিয়মিত দৌড়ান, করেছেন ক্রস কান্ট্রি সাইক্লিং, করেন কায়াকিং, পায়ে হেঁটে টানা ৬৪ জেলা ভ্রমণ করেছেন সিঙ্গেল ইজার প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে। ২০২৩ সালে তিনি ভারতের সর্ব উত্তরের কাশ্মীর থেকে সর্ব দক্ষিণের বিন্দু কন্যাকুমারী পর্যন্ত সাইকেল চালিয়েছেন।
এই অভিযানে মোট খরচ হচ্ছে ৪৫ লাখ টাকা। যাতে মূল পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছেন ভিজ্যুয়াল নিটওয়্যার লিমিটেড। এ ছাড়া সহ-পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ঢাকা ডাইভার্স ক্লাব, বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ব্লু জে, চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনী, গিরি, ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স। এ ছাড়াও অভিযানের জন্য গণ তহবিল সংগ্রহে অংশ নিয়েছেন দেশ-বিদেশের নানা সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠন এবং অগণিত শুভাকাঙ্ক্ষী।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বুডিশ্বচরে জন্ম নেয়া এই তরুণ পেশায় একজন চিকিৎসক। নানা স্বেচ্ছাসেবী কাজে তার সুনাম রয়েছে। করোনায় তার ভূমিকাও বেশ প্রশংসার ছিল। সবকিছুকে পেছনে রেখে পাহাড়প্রেমী হিসেবেই নিজেকে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা. বাবর আলী।