ঢাকা, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬ হিঃ

রকমারি

শুধু আড্ডা নয়, গাছ দেখতে চলে আসুন ধানমণ্ডি লেকে

ফকির জহুরুল
১৮ মে ২০২৪, শনিবারmzamin

কনকচূড়াগাছের তলায় পড়ে আছে ফুল, দেখে মনে হবে যেন হলুদ বিছানা। কৃষ্ণচূড়ার লালেও লাল হয়েছে বিভিন্ন জায়গা। জারুল ছড়িয়েছে তার বেগুনি আভা। পানিতে নিজের সৌন্দর্য মেলে ধরেছে লাল শাপলা। হিজল ফুল কিছু ঝরে পড়েছে পানিতে, কিছু ডাঙায়। রাজধানীর ধানমণ্ডি লেকের এমন নানা গাছের নানা সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই।  দালানের ভিড়ে অনেকেই একটু জিরিয়ে নেবার জন্য যাই ধানমণ্ডি লেকে। একটু গাছের শীতল ছায়ার নিজেকে চাঙ্গা করে নেয়া। তবে এই ধানমণ্ডি লেককে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা উদ্যান গাছপালার এক অপার সম্ভার। এ উদ্যানে নানা প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে। বিদেশি প্রজাতির চেয়ে দেশিয় গাছই এখানে জায়গা পেয়েছে বেশি। দেশীয় ঐতিহ্যাবাহী হারিয়ে যেতে বসা প্রচুর গাছ রয়েছে এই লেকে।  এখন জারুল, কৃষ্ণচূড়া, কনকচূড়া, সোনালু ও লাল সোনাইলের মৌসুম। ঢাকাকে আলোকিত করেছে ফুলগুলো। শহরের বিভিন্ন সড়কের পাশে ফুলগুলো দেখা যাচ্ছে। তবে সবগুলো ফুল একসঙ্গে দেখতে চাইলে আপনাকে আসতে হবে ধানমণ্ডি লেকে। এর তাকওয়া মসজিদ সংলগ্ন অংশে বড় বড় ও সুউচ্চ অনেকগুলো জারুল গাছ রয়েছে। তবে ফুল যেহেতু উপরে, সে সৌন্দর্য আপনি উপভোগ করতে পারবেন না। জারুল দেখতে হলে আপনাকে তাকাতে হবে লেকের ধারে, একপাশ থেকে দেখতে হবে পাশের জারুল। কৃষ্ণচূড়ার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।  কনকচূড়ার অসংখ্য গাছ আছে লেকে। 

গাছের উপরে না দেখে নিচে অসংখ্য হলুদ ফুল পড়ে থাকতে দেখেও বুঝতে পারবেন এটিই কনকচূড়া। আর সোনালু, লাল সোনাইলের সংখ্যা কম হওয়ায় এগুলো সহজে চোখে পড়বে না। ধানমণ্ডি লেকের পাড়ে রয়েছে অসংখ্য হিজলগাছ। হিজল ফুলের মৌসুম শেষ। তবে এখনো দুই-একটা গাছে ফুলের দেখা পাবেন। খুবই সুগন্ধযুক্ত কিন্তু অবহেলিত কড়ই ফুলও ফুটেছে লেকে। ফুলটির সুগন্ধ উপভোগ করতে চাইলে এর তলায় রাতে যেতে হবে। রাতে গন্ধ বিলানো আরেক ফুল ছাতিমও অনেক রয়েছে লেক জুড়ে। এ ফুলের সুগন্ধ উপভোগ করতে চাইলে হেমন্তের রাতে লেকে ঘুরতে পারেন।  লেকের ধানমণ্ডি ৩২ (নতুন ১১) নম্বর অংশে রয়েছে অনেকগুলো পলাশগাছ। বসন্তের এ ফুলটি দেখতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের পাশে আসতে পারেন। বসন্তে লেকে আরও দেখা পাবেন শিমুল, পলাশ, নাগেশ্বর ও কাঞ্চন (শ্বেত, রক্ত উভয়ই) ফুলের।  জলজ ফুলের মধ্যে লেকে প্রচুর লাল শাপলা রয়েছে। একাধিক জায়গায় আগে প্রচুর মেক্সিকান সোর্ড লিলি থাকলেও পরিষ্কারের নামে তা তুলে ফেলা হয়েছে। এখনো দুই-এক জায়গায় দেখা মিলবে তলোয়ারের মতো দেখতে ফুলটির। 

 

লেকের কিছু অংশে কচুরিপানাও আছে। শীতে দেখা যায় কচুরিপানা ফুল।  ফুলের মধ্যে ধানমণ্ডি লেকে আরও রয়েছে কামিনী, বিভিন্ন প্রজাতির জবা, গন্ধরাজ, বিভিন্ন প্রজাতির রঙ্গন, শিউলি, রাঁধাচূড়া, বকুল, কদম, পাউডার পাফ, সন্ধ্যামালতী, কেয়া, নয়নতারা, পাথরকুচি, টগর, চাইনিজ টগর, বুনো রুয়েলিয়া, সিঙ্গাপুরি ডেইজি, ড্রেসিনা, মাধবীলতা, বিভিন্ন প্রজাতির বাগানবিলাস, কলাবতী, মধুমঞ্জরী, করবি, মহুয়া, কাঁঠগোলাপ, লিপস্টিক ফুল, স্পাইডার লিলি, সোনাপাতি প্রভৃতি। ঠিক লেকে না, লেকের ধারের ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সড়কের একটি বাড়িতে দেখতে পাবেন নীলমনিলতা, আরেক বাড়িতে অনন্তলতা।  শুধু ফুল নয়, অনেক ধরনের ফলগাছও রয়েছে ধানমণ্ডি লেকে। এখানে অনেকগুলো আমগাছ রয়েছে, রয়েছে কাঁঠালগাছও। ফলগাছের মধ্যে আরও রয়েছে জাম, বেল, আতা, সফেদা, কলা, তেঁতুল, ডেউয়া, তাল, খেজুর, সুপারি, আমলকি, হরিতকি, বহেরা, জলপাই, গোলাপ জাম, বক্স বাদাম, নারকেল, বাতাবি লেবু, করমচা, কামরাঙ্গা, চালতা, পেয়ারা, ডালিম, আঁশফল বা কাঠলিচু, পেঁপে, বড়ই প্রভৃতি।  কাঠপ্রদানকারী গাছের মধ্যে রয়েছে মেহগনি, আকাশমণি, গগন শিরিষ, মিনজিরি, গামারি, ইউক্যালিপটাস, ইপিল ইপিল, নিম, পাহাড়ি নিম, রেইন্ট্রি প্রভৃতি। কয়েক প্রজাতির বাঁশ ছাড়াও আছে বেত। বড় গাছের মধ্যে আরও আছে বট, অশ্বথ, বোধিবৃক্ষ, রক্তকম্বল, ঝাউ, দেবদারু, জিগা, জীবনগাছ, অর্জুন, লক্ষ পাকুড় প্রভৃতি।  এ ছাড়া লেকে পান্থপাদপ, সজনে, তেলাকুচা, ভেন্না, শেওড়া, বুনো ডুমুর, ক্রিসমাস ট্রি, ছিটকি, দারুচিনি, ওয়েল পাম, হেরিকা পাম, কারিপাতা, বিভিন্ন প্রজাতির কচু, নিশিন্দা ছাড়াও নাম না জানা আরও নানা প্রজাতির গাছপালা তো রয়েছেই।  

রকমারি থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

রকমারি সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status