অনলাইন
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন: কেন ভুটানে চীনা নির্মাণের ঢেউ ভারতকে হুমকি দিচ্ছে
মানবজমিন ডিজিটাল
(১ সপ্তাহ আগে) ৮ মে ২০২৪, বুধবার, ১২:০১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১০:০৬ পূর্বাহ্ন
নতুন কিছু স্যাটেলাইট চিত্র সামনে এসেছে। যা প্রকাশ করে প্রতিবেশী ভুটানের অভ্যন্তরে চীনা নির্মাণ দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানাচ্ছে, কিভাবে ক্ষুদ্র হিমালয় রাজ্যে চীনের জমি দখল বেইজিংয়ের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে। ১৯১০ সালে, চীনের যুদ্ধবাজ ঝাও এরফেং পাঁচটি হিমালয় রাজ্য তিব্বত, ভুটান, লাদাখ, নেপাল এবং সিকিম নিয়ন্ত্রণ করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। চীনের বর্তমান নেতৃত্ব ভুটানে প্রবেশের মাধ্যমে সেই স্বপ্ন পূরণের প্রচেষ্টা উস্কে দিয়েছে। চীন এবং ভুটানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, তবে ১৯৫১ সালে তিব্বত চীনের শাসনের অধীনে আসার সাথে সাথে তারা সীমান্ত ভাগ করে নেয়।
১৯৫৯ সালে দালাই লামার আগমনের ফলে ভুটান, একটি কট্টর বৌদ্ধ দেশ তিব্বতের সাথে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। ১৯৮৪ সালে বেইজিং এবং থিম্পু আঞ্চলিক বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু করে এবং এখনো পর্যন্ত ২৫ দফা আলোচনা হয়েছে।
২০১২ এবং ২০২১ দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারকগুলো সীমান্ত আলোচনায় আরও গতি বাড়িয়েছে। চীন আঞ্চলিক বিরোধ নিষ্পত্তিতে তার বিরোধীদের পরাস্ত করার জন্য তার সময়-পরীক্ষিত কৌশল প্রয়োগ করেছে- মাও সেতুং-এর ‘তান, তান, দা দা’ [কথা বলতে বলতে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি]। ৪৭৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তকে চীন ধীরে ধীরে একটি যুদ্ধক্ষেত্রে রূপান্তরিত করছে সামরিক সংহতি, ‘সচ্ছল সমাজ’ গ্রাম নির্মাণ এবং সাহায্য, ঋণ এবং জবরদস্তিমূলক কূটনৈতিক বাণিজ্য নীতির মাধ্যমে।
লন্ডনের সোয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রবার্ট বার্নেট বলছেন, চীন ১৯৯৬ সালে একটি ‘প্যাকেজ চুক্তি’ প্রস্তাব করেছিল- ভুটানের বিনিময়ে কেন্দ্রীয় সেক্টরে পাসমলুং এবং জাকারলুং উপত্যকাগুলো পশ্চিম সেক্টরে ডোকলাম, সিনচুলুং, ড্রামানা এবং শাখাতোয়ের উপর চীনের সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেয়।
যাইহোক, পশ্চিম সেক্টরের সীমানা ভারতের সিকিম এবং শিলিগুড়িতে উত্তর-পূর্বের সাথে উত্তর ভারতের সংযোগকারী ‘চিকেন নেক’কে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। ভুটান এর আগে ১৯৪৯ এবং ২০০৭ সালে চীন থেকে চ্যালেঞ্জ এড়াতে ভারতের সাথে ‘চিরস্থায়ী বন্ধুত্ব’ চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল।
২০১৭ সালে ডোকলাম সঙ্কটের সময়ে চীন একতরফাভাবে ভুটানের বিরোধিতায় একটি রাস্তা নির্মাণ শুরু করে, যেখানে ভারতের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ভারতের তীব্র বিরোধিতায় ৭৩ দিনের সামরিক অবস্থান অবশেষে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। চীন ভারতকে তার উচ্চাকাঙ্ক্ষার পথে বাধা হিসেবে দেখে। ভুটানের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করার জন্য, চীন গিয়ালাফুগে (২০১৫ সালে ডোকলাম মালভূমিতে) এবং ভুটানের দাবি করা আরও কয়েকটি জায়গায় ‘সচ্ছল গ্রাম’ নির্মাণ শুরু করে। ২০২০সালের জুনে চীন ভুটানের পূর্বাঞ্চলীয় জেলা ট্রাশিগাং-এর সাকতেং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ৬৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা দাবি করা শুরু করে।
থিম্পু সন্দেহ করে যে, এর মাধ্যমে চীনের সামরিক বাহিনী ভুটানে প্রবেশ করবে এবং আঞ্চলিক আধিপত্যের প্রচেষ্টার জন্য চীনা অভিবাসীদের পাঠাবে। চীনের আরেকটি গোপন প্রচেষ্টা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। ভারত ভুটানের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার পাশাপাশি সাহায্য প্রদানকারী ছিল।
যাইহোক, গত কয়েক বছরে চীন ভারতকে স্থানচ্যুত করেছে এবং এখন ভুটানের সাথে বাণিজ্যের সম্পর্ক এক চতুর্থাংশেরও বেশি। প্রভাব বাড়ানোর লক্ষ্যে রাস্তা, রেলপথ, জলবিদ্যুৎ এবং অন্যান্য প্রকল্পে বিনিয়োগের লক্ষ্যে এগোচ্ছে চীন। যার মধ্যে রয়েছে চীনের পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন চুখা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং পুনাতশাংচু জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন, চায়না গেঝুবা গ্রুপ, চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ কর্পোরেশন এবং অন্যান্য চীনা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলো ভুটানে বেশ কয়েকটি অবকাঠামো প্রকল্পের সাথে জড়িত, যখন চায়না রেলওয়ে ইরুয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কো লাসা-গায়ান্তসে লিঙ্কের মাধ্যমে রেল যোগাযোগের অনুসন্ধান করছে।
২০০৮ সালে ২২০-কিমি ফ্রেন্ডশিপ হাইওয়ে, ২০১৩ সালে ২৯০-কিমি ল্যাটারাল রোড, ২০১৬ সালে ১০০-কিমি গেলফু-গোমতু রোড, ২০১৭ সালে ৬০-কিমি ওয়াংডু-ট্রংসা রোড নির্মাণে চীনা পার্টি-স্টেট কোম্পানিগুলোর প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। উপরন্তু ভুটানের গুরুত্বপূর্ণ টেলিকম সেক্টরে ফাইবার অপটিক কেবল স্থাপন, মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং ইন্টারনেট অ্যাক্সেস পয়েন্ট স্থাপনে চীনের আধিপত্য রয়েছে।
Huawei ২০০৯ সাল থেকে ৩জি এবং ৪জি টেলিকম নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভুটানের সাথে জড়িত। মহামারীর আগে চীন ৮০ হাজারেরও এরও বেশি পর্যটক ভুটানে পাঠিয়েছিল। কিন্তু ভুটান সচেতন যে, চীন পর্যটনকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করতে পারে, যেমনটি দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া এবং তাইওয়ানের বিরুদ্ধে করেছিল। চীন এভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য ভুটানের ওপর প্রচণ্ড চাপ দিচ্ছে। আঞ্চলিক বিরোধ নিষ্পত্তি সেই দিকের একটি পদক্ষেপ ।
ভারতের প্রবল চাপে শান্তিপূর্ণ ভূটান শুধু চীনের সাথে নয়, নিরাপত্তা পরিষদের কোন স্থায়ী সদস্য দেশের সাথে আজ পর্যন্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেনি।
ভারতের মুর্খ গনতান্ত্রিক শাসক ভারতকে এক মগের মুল্লুক বানিয়েছে সংখ্যাগরিষ্ট মুর্খজনদের নিয়ে। এক অন্ধকার পরিনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
দুটো দেশ পরাশক্তি হতে চায়। কিন্তু মন মানষিকতায় বিকারগ্রস্হ।
চীন মুসলিমদের পেছনে যতই বাঁশ দিকনা কেন ও চীন তাদের আব্বা। চীন যে কি জিনিস সেটা মুসলিমদের মাথায় ঢুকবে না। শুধু ভারত বিরোধ করে যাও, শুধুমাত্র হিন্দু বলে
প্রতিবেশীদের সাথে ভারতের যে বৈরী সম্পর্ক বিদ্যমান তা দিয়ে আদৌও পরাশক্তি হওয়া সম্ভব নয়।
সিনেমা বানানো আরেকটা ইস্যু পাইয়া গেল। সিনেমার নাম হবে, চায়না ভুটান মে রাস্তা কিয়ু বানায়া!!!
ভারত নাকি উদীয়মান পরাশক্তি হবে চিনের কথা শুনলে কুঁকড়ে যায়, এই মুরগী হৃদয় নিয়ে কি ভাবে পরাশক্তি হবে?