ঢাকা, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

উপজেলা নির্বাচন সরকারের আরেকটা ভোট চুরির ভাঁওতাবাজি: আমীর খসরু

স্টাফ রিপোর্টার
১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার

উপজেলা নির্বাচন সরকারের আরেকটা ভোট চুরির ভাঁওতাবাজি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) উদ্যোগে ১০ই এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রকাশের দিনটি ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। সভায় প্রজাতন্ত্র দিবসের দাবি উপস্থাপন করেন জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন। তিনি বলেন, ওরা উপজেলা নির্বাচন দিয়েছে। যেদেশে ভোট নাই সেই দেশে ভোটে অংশগ্রহণ করার কোনো সুযোগ নাই। যেখানে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নাই, যেখানে কোনো পার্টিসিপেশন নাই, সেখানে আবার কিসের ভোট? সুতরাং এই যে উপজেলা নির্বাচন এটা আরেকটা দেশের মানুষকে একটা ধাপ্পাবাজির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এটা ভোটের নামে ভাঁওতাবাজি। ভোট বলে কিছু নাই এই এদেশে। একটা ভোটচুরি প্রকল্পের মাধ্যমে সমস্ত জাতিকে আজকে তারা (সরকার) জিম্মি করে রেখেছে। 

সরকারের এহেন অপকর্মের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর ঐক্য অটুট থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করে আমীর খসরু বলেন, আমাদের সুখবর হচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ আজকে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। আমরা যারা বিরোধী দলে আছি আমাদের ঐক্য অটুট আছে, বিএনপির ঐক্য অটুট আছে। এই ঐক্য ভাঙার চেষ্টা কোনো কিছু বাকি নাই। টাকা-পয়সা থেকে ভয়ভীতি, জেল-জুলুম থেকে নিপীড়ন-নির্যাতন সব চেষ্টা করা হয়েছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা ধান ক্ষেতে ঘুমিয়েছে, বেড়িবাঁধে ঘুমিয়েছে কিন্তু নেতাকর্মী কম্প্রোমাইজ করেনি। আমরা ৩১ দফা ঐক্যবদ্ধভাবে দিয়েছি। এটা চলমান আন্দোলনের দফা অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের সাম্য-মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার ইত্যাদি বিষয়ে আমরা এক হয়েছি। আমাদের এই অবস্থার পরিবর্তন হবে না। এই আন্দোলন চলমান আছে। ৭ই জানুয়ারি ভোটে ৯৫ শতাংশ ভোটার না যাওয়া থেকে চলমান আন্দোলনের বিরোধী দলের রাজনৈতিক সফলতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৯৫ শতাংশ মানুষ ওই নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে যায়নি। এবার সেই চিন্তা থেকে সরকার ভোটারদের আনতে নতুন কৌশল নিয়েছে। এবার তারা চিন্তা করেছে যে, মানুষ নৌকাকে ভয় পায় নৌকার কথা শুনলে বোধহয় ভোট কেন্দ্রে যাবে না। সেজন্য নির্বাচনে তারা এবার দলীয় প্রতীক বাদ দিয়ে দিয়েছে। অথচ তারাই স্থানীয় সরকার আইন করেছে নৌকা দিয়ে অর্থাৎ দলীয় প্রতীক দিয়ে নির্বাচন করার জন্য। আইনটা কিন্তু বাতিল করেনি। আইন রেখে তারা এখন নৌকা প্রতীক নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছে না। 

কারণ ওরা দেখছে, বাংলাদেশের জনগণ নৌকা যেখানে আছে তারা সেখানে নাই। তারা নৌকা বয়কট করেছে। তাই এই উপজেলা নির্বাচন আরেকটি ভাঁওতাবাজীর নির্বাচন। ভোটচুরি প্রকল্পই তাদের ক্ষমতার উৎস, এই ভোটচুরির প্রকল্প তাদের ক্ষমতায় রাখার ব্যবস্থা করেছে। খসরু বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ব্যাংক মার্জার (একত্রীভূত) করার। মার্জার তো কোনো সরকারের সিদ্ধান্ত হতে পারে না। এটা ভলান্টারি সিদ্ধান্ত, এটা বাজারের সিদ্ধান্ত। এটা করতে শেয়ার হোল্ডারদের মতামত প্রয়োজন হয়। কিন্তু কি দেখা যাচ্ছে? শেয়ার হোল্ডারদের কোনো খবর নাই। তারা (সরকার) সিদ্ধান্ত দিচ্ছে মার্জার করতে হবে। যারা ব্যাংক লুটপাট করে খেয়ে ফেলেছে তাদের জন্যে এই মার্জার আরেকটা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। 

তাদেরকে রক্ষা করার জন্য। যারা লুটপাট করে বাংলাদেশের সম্পদ নিয়ে গেছে, যারা ব্যাংকের আমানতের টাকা লুটপাট করেছে তাদেরকে আরও সুবিধা দেয়ার জন্য জোর করে এই একত্রীভূত করার প্রক্রিয়া সরকার নিয়েছে। জেএসডি’র সভাপতি আসম আবদুর রব দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বলেন, যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা, যারা জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদের এদেশে বসবাস করা সম্ভব নয়। এই খুনীদের এই জুলুমবাজ, দখলদার সরকারকে বিতাড়িত না করতে পারলে এদেশে সাধারণ মানুষদের বসবাস কঠিন হয়ে পড়বে। এই দেশ আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন করেছিলাম, এমন দৃশ্য এমন পরিবেশ দেখার জন্য নয়। গণতন্ত্র থাকবে না সেজন্য তো আমরা যুদ্ধ করিনি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না সেজন্য তো আমরা যুদ্ধ করিনি। এই কষ্ট আমি সহ্য করতে পারি না। আপনারা জেগে উঠুন, দেশকে বাঁচান, মানুষকে বাঁচান। এই গণতন্ত্র ফেরানোর লড়াইকে এগিয়ে নিন, এদেরকে পরাজিত করুন।  শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারি পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির তানিয়া রব, মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া, কেএম জাবির প্রমুখ।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status