বাংলারজমিন
সুনামগঞ্জে হাওরগুলোতে ধান কাটা শুরু
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
১৭ এপ্রিল ২০২৪, বুধবারসুনামগঞ্জের হাওরগুলোতে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। এবার বোরো ধান ভালো হলেও অধিকাংশ হাওরে এখনও ঠিকমতো ধান পাকেনি। পাহাড়ি ঢলের ভয়ে আধা পাকা রেখেই দেদারসে কৃষকরা ধান কাটছেন। শ্রমিক সংকট থাকায় হারভেস্টার মেশিন দিয়ে বোরো ধান কাটার চেষ্টা করছেন কৃষকরা। ধান কাটার শ্রমিক সংকট দূর করার জন্য ইতিমধ্যে কৃষকরা দাবি তুলেছেন জেলার সর্ব বৃহৎ তাহিরপুর সীমান্তের কয়লা, চুনাপাথর স্থল শুল্ক স্টেশন এবং যাদুকাটা নদীর বালু ইজারাকৃত মহাল সাময়িক বন্ধের জন্য। সুনামগঞ্জ কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার ছোট-বড় ১৩৭টি হাওরে ২ লাখ ২৩ হাজার ৪০৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭০.০৫ ভাগ উফশী (উচ্চ ফলনশীল ধান), ২৯ ভাগ হাইব্রিড ধান ও ০.০৫ ভাগ স্থানীয় প্রজাতির দেশি ধান আবাদ করা হয়। বৈশাখের প্রথম দিন থেকে এ পর্যন্ত পর্যন্ত ধান কাটা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর। কৃষি অফিস জানায়, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২০০ টন ধান এবং ৯ লাখ ১৩ হাজার ৪৬৮ টন চাল উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য ৪ হাজার ১১ কোটি টাকা।
তবে অধিকাংশ কৃষক বলেছেন, তারা বর্তমানে শ্রমিক সংকটের মধ্যে থাকলেও সরকারের দেওয়া হারভেস্টার মেসিনের সুবিধা এখন পর্যন্ত পাচ্ছেন না। মাটিয়ান হাওর পাড়ের মুক্তার বলেন, আর মাত্র ১৫ দিন সময় হাতে পেলে কৃষকরা সহজেই বোরো ধান ঘরে তুলতে পারবে। নদীতে ধীরে ধীরে পানি বাড়ছে। অপরদিকে বৃষ্টির পানিতে হাওরের মধ্যে আধা পাকা ধান তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই নিয়ে তারা কিছুটা ছিন্তায় রয়েছেন। শনির হাওর পাড়ের কৃষক কামরুল বলেন, এবার হাওরে বোরো ধান হাওরে ভাল হয়েছে। তবে মানুষ শংকার মধ্যে আছেন। কখন জানি ভারি বৃষ্টি এবং উজানের ঢলের পানি এসে হাওর রক্ষা বাঁধ ভেঙে ফেলে এ ভয়ে। সুনামগঞ্জ কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, গতকাল থেকে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়েছে। বৈশাখ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হাওরে ধান কাটা শুরু হয়। আর ১৫ দিন সময় পেলে কৃষকরা তাদের সোনালি ধান ঘরে তুলতে পারবেন। তিনি বলেন, ভর্তুকি দিয়ে কৃষকদের হারভেস্টার মেশিন দেওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকের সঙ্গে যোগযোগ রাখছেন। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানান, আগামী ২০শে এপ্রিল পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাতের কোনো পূর্বাভাস নেই। এ সময়ের মধ্যে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। তবে বন্যার আশঙ্কা নেই।